ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ন্যূনতম মজুরি পুনর্বিবেচনার দাবি পোশাক শ্রমিক সংগঠনের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২৩
ন্যূনতম মজুরি পুনর্বিবেচনার দাবি পোশাক শ্রমিক সংগঠনের

ঢাকা: সরকার ঘোষিত তৈরি পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা প্রত্যাখ্যান করে সেটি পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন পোশাক শ্রমিক সংগঠন। পাশাপাশি তারা পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণসহ বিভিন্ন দাবি জানান।

তাদের অন্যান্য দাবিগুলো হলো- শ্রমিক আন্দোলনে নিহত আঞ্জুয়ারা, রাসেল ও ইমরান হত্যার বিচার ও হত্যাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত, শ্রম আইনের ১৩/১ ধারা বাতিল, ৫ ও ৬ নং গ্রেড ও শিক্ষানবিস পদ বিলুপ্ত করে মজুরি কাঠামো নির্ধারণ, শ্রমিক আন্দোলন দমনে শক্তি প্রয়োগ বন্ধ করা, নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা, শ্রমিকদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে গ্রেপ্তার শ্রমিকদের মুক্তি দেওয়া।

শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসব দাবিতে পৃথকভাবে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে মজুরি বৃদ্ধিতে গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলন, বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি, গার্মেন্ট শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (জি-স্কপ), গার্মেন্ট শ্রমিক ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ওএসকে অ্যান্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশন।

গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলনের সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার বলেন, সরকার ১২ হাজার ৫০০ টাকার যে মজুরি ঘোষণা করেছে, সেটি আমরা ৪০ লাখ পোশাক শ্রমিকের পক্ষ থেকে প্রত্যাখ্যান করেছি৷ আজকে বাজারে পেঁয়াজের দাম, পেয়ারার দামের থেকে বেশি। আজকে আলুর দাম, চালের দামসহ প্রতিটি দ্রব্যের মূল্য এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যে শ্রমিকদের জীবনে ত্রাহী ত্রাহী অবস্থা। শ্রমিকরা বেঁচে থাকতে পারছেন না। আমরা সরকারকে শ্রমিকদের মজুরি পুনর্বিবেচনার দাবি জানাচ্ছি।

মজুরি বাড়ানোর আন্দোলনে তিনজন শ্রমিক নিহত হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা এসব হত্যার বিচার ও ক্ষতিপূরণ চাই।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু ঘোষ, শ্রমিক নেতা সাদেকুর রহমান শামীম, মাসুদ রেজা, বাবুল হোসেন, অ্যাডভোকেট মামুনুর রহমান ইসমাইল, শবনম হাফিজ ও তোফাজ্জল হোসেন।

গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচকরী ঐক্য পরিষদের (জি-স্কপ) সমাবেশে বক্তারা বলেন, গার্মেন্টস মালিকরা রাজনৈতিক অস্থিরতার রঙ লাগিয়ে শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরির আন্দোলন শক্তি প্রয়োগ করে দমন করার সুযোগ নিতে পরিকল্পিতভাবে সময়ক্ষেপণের কৌশল নিয়েছিল। এটা খুবই দুঃখজনক যে, প্রধানমন্ত্রী মালিকদের সেই ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিয়ে গার্মেন্টস মালিকদের ভাষায় শ্রমিকদের ওপর দোষ চাপালেন।

শ্রমিকদের ওপর গুলি চালানোর মতো বর্বর আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তারা আরও বলেন, শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের আচরণ দেখে মনে হয়েছে তারা শত্রু পক্ষের সঙ্গে যুদ্ধে নেমেছে। সরকার কি এ দেশ শুধুমাত্র মালিকদের ইজারা দিয়েছে? রাষ্ট্রীয় বাহিনী শ্রমিকদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছে কিভাবে?

শ্রমিক হত্যার জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা এবং নিহত প্রত্যেক শ্রমিক পরিবারকে আজীবন আয়ের মানদণ্ডে ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, অবিলম্বে দমন-পীড়নের পথ পরিহার করে শ্রমিকদের দাবি বিবেচনায় নিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য মজুরি পুননির্ধারণ করেন।  

এ সময় তারা একই দাবিতে আগামী ১৪ নভেম্বর সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেন।

জি-স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক শাহ মো. জাফরের সভাপতিত্বে এবং নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মী ও বিভিন্ন কারখানার গার্মেন্টস শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশ শেষে প্রতিটি সংগঠনই বিক্ষোভ মিছিল করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২৩
এসসি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।