ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দীর্ঘসূত্রিতায় আটকে আছে ৩৫ ও ৩৬তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারদের পদোন্নতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২৩
দীর্ঘসূত্রিতায় আটকে আছে  ৩৫ ও ৩৬তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারদের পদোন্নতি

ঢাকা: সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে পদোন্নতির হাওয়া বইলেও দীর্ঘসূত্রিতায় আটকে আছে ৩৫ ও ৩৬ তম বিসিএস ক্যাডারের পুলিশ ব্যাচের প্রথম পদোন্নতি।  

সহকারী পুলিশ সুপার থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি সঠিক সময়ে না পাওয়ায় তাদের কর্মস্পৃহা নষ্ট হচ্ছে বলে জানিয়েছে এই দুটি ব্যাচের পুলিশ কর্মকর্তারা।

 

এদিকে, সাধারণত বিসিএস ক্যাডাররা পুলিশে যোগদানের ৫ বছরের মধ্যে অ্যাডিশনাল পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পেয়ে থাকেন। কিন্তু ৩৫তম ব্যাচের ছয় বছর সাত মাস চলমান এবং ৩৬ ব্যাচের পাঁচ বছর তিন মাস চলমান৷

সম্প্রতি পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকতাদের পদোন্নতি হলেও ৩৫ ও ৩৬ তম বিসিএস ক্যাডারের পুলিশের ব্যাচের কর্মকর্তাদের এখনও পদোন্নতি হচ্ছে না।  

পদোন্নতি না পাওয়ায় অনেকটাই হতাশা প্রকাশ করে গত বুধবার (৮ নভেম্বর) বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে দেখা করেছেন ৩৫ ও ৩৬তম বিসিএস ক্যাডারের প্রায় ৭০ পুলিশ কর্মকর্তা।  

তারা সেখানে দীর্ঘ এক ঘণ্টাব্যাপী নিজেদের যৌক্তিক দাবিগুলো আইজিপির কাছে তুলে ধরেন৷ এছাড়াও ওই কর্মকর্তারা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার এবং স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) চিফের সঙ্গেও পদোন্নতির বিষয়ে দেখা করেছেন।  

৩৫ ও ৩৬তম বিসিএস ক্যাডারের একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বাংলানিউজকে আইজিপির সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।  

এই দুই ব্যাচের পদোন্নতি না পাওয়া পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ৩৫ তম ব্যাচের ৬ বছর ৭ মাস চলমান। সহকারী পুলিশ সুপার থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ৩০ তম বিসিএস থেকে সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত নজিরবিহীন দীর্ঘসূত্রিতায় আটকে আছেন ৩৫ তম বিসিএস পুলিশ ব্যাচের সদস্যরা।

এদিকে, ৩৬ ব্যাচের ৫ বছর ৩ মাস চলমান৷ এই দুই ব্যাচের কর্মকর্তারা এখন মাঠ পর্যায়ে সহকারী কমিশনার, এএসপি এবং সার্কেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ৩৫ তম ব্যাচের সমসাময়িক অন্যান্য ক্যাডারদের পদোন্নতি হয়েছে গত দেড় বছর আগেই। ৩৬ বিসিএস ব্যাচেরও অন্যান্য অনেক ক্যাডারের পদোন্নতি হয়েছে ইতোমধ্যে।

কর্মকর্তারা আরও জানায়, একই বিসিএস এ যোগদান করে যেখানে অন্যান্য সব ক্যাডারই যথাসময়ে প্রথম পদোন্নতি/প্রমোশন পেয়েছেন সেক্ষেত্রে ন্যায্য পদোন্নতি বঞ্চিত হয়েছেন এই দুই ব্যাচের পুলিশ কর্মকর্তারা।  

বৈঠকে উপস্থিত কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, এর আগে গত ২৬ সেপ্টেম্বর দুই ব্যাচের সদস্যরা আইজিপির সাথে সাক্ষাৎ করেছিল। তখন আইজিপি পদোন্নতির বিষয়ে দুই ব্যাচের কর্মকর্তাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন৷ কিন্তু সম্প্রতি পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকতাদের পদোন্নতি হলেও এখনও এই দুই ব্যাচের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি হচ্ছে না।

কর্মকর্তারা জানান, বৈঠকে আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন তাদের পদোন্নতির বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন। সিনিয়র ব্যাচের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি প্রক্রিয়া শেষ হলেই এই ব্যাচ দুটির পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু করবেন তারা।

এসবি প্রধান মনিরুল ইসলামও বলেছেন যে, আগের ব্যাচের পদোন্নতি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরে পরের ব্যাচের পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু হবে।

ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বিষয়টি নিয়ে পুলিশ প্রধান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে আশ্বাস দেন।

৩৬ ব্যাচের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, ৩৬তম ব্যাচের অন্যান্য ক্যাডারের পদোন্নতি হলেও পুলিশের না হওয়াটা হতাশার। সঠিক সময়ে পদোন্নতি না পাওয়ায় তাদের কর্মস্পৃহা নষ্ট হচ্ছে। পারিবারিক ও সামাজিকভাবে হেয় হতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সহকারী পুলিশ সুপার থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ৩০তম বিসিএস থেকে সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত নজিরবিহীন দীর্ঘসূত্রিতায় আটকে আছে ৩৫তম বিসিএস পুলিশ ব্যাচের সদস্যরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২৩
এসজেএ/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।