ঢাকা, রবিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পায়রায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত; ৪ লাখ মানুষের জন্য প্রস্তুত আশ্রয়কেন্দ্র 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২৩
পায়রায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত; ৪ লাখ মানুষের জন্য প্রস্তুত আশ্রয়কেন্দ্র 

পটুয়াখালী: উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি' উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।

শুক্রবার (১৭ নভেম্বর ২০২৩) সকাল ০৯ টায় মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

এটি আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সন্ধ্যা নাগাদ খেপুপাড়ার নিকট দিয়ে মোংলা-পায়রা উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। পায়রা ও মোংলা বন্দরকে ০৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ০৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রপ্রাপ্ত আজ দুপুর নাগাদ উপকূল অতিক্রম শুরু করতে পারে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়টি দ্রুতগতি সম্পন্ন হওয়ায়, গতকাল রাতেই আগাম প্রস্তুতি সভা করেছে পটুয়াখালী জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি।

জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক নূর কুতুবুল আলমের সভাপতিত্বে সভায় জেলার সকল সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতির তথ্য উপাত্ত তুলে ধরেন।

জেলা প্রশাসক জানান, জেলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলায় ৭০৩টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ৩৫টি মুজিব কেল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এতে প্রায় চার লাখ দুর্গত মানুষ ও লক্ষাধিক গবাদিপশুর আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা যাবে। প্রয়োজন হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি বহুতল ভবনগুলোও ব্যবহার করা হবে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল টিমসহ সিপিপি, রেড ক্রিসেন্ট, ফায়ার সার্ভিসের কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবক স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রায় ৯ হাজার সদস্যদের প্রস্তুত করা হয়েছে। তারা সকাল থেকেই সংকেত প্রচার করছেন।

এছাড়াও দুর্গতদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্রে খাদ্য পানি ও শিশু খাদ্যের জন্য ৮ লাখ টাকা ও ৬৫০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।  

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জেলা গতকাল থেকে হালকা, মাঝারি ও রাত থেকে ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। জেলা সকাল নয়টা পর্যন্ত ৮৭ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড ও ঘণ্টায় ১৫ নটিক্যাল মাইল গতিতে বায়ু প্রবাহিত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের ঘণ্টায় সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে কয়েকটি বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

আলীপুর-কুয়াকাটা মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আনসার উদ্দিন মোল্লা বলেন সমুদ্রে থাকা মাছ ধরা ট্রলারের বেশিরভাগই মহিপুর শিব্বারিয়া নদীতে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়াও পায়রা বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২৩
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।