ঢাকা: অনলাইনে পার্ট টাইম জব ও অ্যাপসে লোন দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে চীনা নাগরিকসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- মো. আরিফুল ইসলাম রিফাত, মো. নাজমুল হুদা জাহিদ, শহিদুল ইসলাম শান্ত, বেনজির আহম্মেদ টনী, মো. আব্দুর রহমান দিগন্ত ও চীনা নাগরিক জহাং কি জহাং।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ১১টি মোবাইল ফোন, ২৫৯টি সিম কার্ড, ১টি ল্যাপটপ, ৭টি এটিএম কার্ড ও একটি চায়না পাসপোর্ট জব্দ করা হয়।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ডিএমপির গোয়েন্দা-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগের ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের টিম লিডার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আশরাফউল্লাহ বাংলানিউজকে বিষয়টি জানান।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর ভাটারা এবং উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।
তিনি বলেন, গত ২৯ অক্টোবর এক ভুক্তভোগী বাসায় অবস্থানকালে হোয়াটসঅ্যাপে পার্ট টাইম জব করে দৈনিক আট হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করার একটি মেসেজ আসে। ভিকটিমের হাতে বর্তমানে কোন কাজ না থাকায় মেসেজটি সত্য মনে করে লিংকে প্রবেশ করে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ ম্যাসেজে দেওয়া লিংকে ভুক্তভোগী ক্লিক করে প্রতারকদের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে। তখন, ইউ ফাস্ট সাইনআপ ফর এন অ্যাকাউন্ট এন্ড ইউ উইল গেট সিক্সটি টাকা আফটার সাইন আপ, লেখাটি দেখে ভুক্তভোগী আকৃষ্ট হোন এবং ওয়েবসাইটে নিজের নাম- ঠিকানাসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেন। পরবর্তী সময়ে ভুক্তভোগীকে একটি টেলিগ্রাম এর লিংক দেওয়া হয় এবং তিনি ওই সাইটের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতারকের সঙ্গে পার্টটাইম জব করার বিষয়ে চ্যাটিং করেন।
তিনি আরও বলেন, ভুক্তভোগীকে বলা হয় তাদের ওয়েবসাইটে থাকা বিভিন্ন পণ্য ক্রয় করে পুনরায় একই সাইটে অধিক মূল্যে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। যেহেতু একই সাইটে ক্রয়-বিক্রি এবং ক্রয়কৃত দামের চেয়ে অধিক দামে বিক্রি করতে পারবেন, তাই নিশ্চিত লাভের আশায় ভিকটিম ওই সাইটে বিভিন্ন সময়ে ৭০ হাজার দুইশত টাকা প্রদান করেন। পরবর্তী সময়ে ভিকটিমকে ৮৭ হাজার ৫৫০ টাকা মূল্যের একটি কার্পেট কেনার জন্য বললে তিনি বুঝতে পারেন প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কাফরুল থানায় একটি মামলা করেন।
তিনি বলেন, মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হলে সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগের ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম তদন্ত শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার রাজধানীর ভাটারা এবং উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এসব অপরাধ থেকে নিরাপদ থাকতে করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, সহজে লাভ করা যায় এমন মেসেজ এড়িয়ে চলা। লোভনীয় প্রস্তাবের কোনো মেসেজ আসলে দেখেশুনে মেসেজের উত্তর দেওয়া। মেসেজে আসা লিংকে প্রবেশ না করা। টাকা পাঠানো বা ঢাকা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সচেতন হওয়া। প্রতারিত হলে আইনের আশ্রয় নেওয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২৩
এসজেএ/জেএইচ