ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘পশ্চিমাদের মতো বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মাথাব্যথা নেই দিল্লির’

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২৩
‘পশ্চিমাদের মতো বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মাথাব্যথা নেই দিল্লির’

ঢাকা: পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানিয়েছেন, বাংলাদেশের অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিয়ে সরকারে অঙ্গীকারে আস্থা রয়েছে ভারতের। সেজন্য পশ্চিমা দেশগুলোর মতো বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে নয়া দিল্লির মাথাব্যাথা বা উদ্বেগ নেই।

 

রোববার (২৬ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।  

নয়া দিল্লির বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে আলোচনার প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, দুই দেশের নির্বাচন আছে সামনের বছরে। নির্বাচন নিয়ে আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে কথা হয়েছে। আমাদের নির্বাচন নিয়ে ওদের যে অভিমত এটা কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টু প্লাস টু ফরমেটের পর তারা বলেছে, তৃতীয় দেশের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না ভারত। নির্বাচন আমাদের অভ্যন্তীরণ বিষয়। বাংলাদেশের মানুষ ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি ঠিক করবেন। ওই আঙ্গিকে তিনি (ভারতের পররাষ্ট্র সচিব) বলেছেন।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,  এটা আমাদের অভ্যন্তীরণ বিষয়। আমাদের দেশের জনগণই এবং যে সংবিধান আছে সে অনুযায়ী নির্বাচন হবে। আমাদের যে লক্ষ্য আছে, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করার অঙ্গীকার আছে; সে ব্যাপারে তারা (ভারত) আস্থা রাখে।

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে ভারত কোনো বার্তা দিয়েছে কিনা-জানতে চাইলে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, তাদের (ভারত) এমন কোনো কনসার্ন নাই। তাদের ফুল কনফিডেন্স আমাদের ইনস্টিটিউশন প্রসেস এবং জনগণের ইচ্ছের প্রতিপালন ঘটবে সামনের নির্বাচনে। সেটাই তাদের চাওয়া।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমরা বলেছি, বাংলাদেশের মাটিতে অন্য কোনো তৃতীয় দেশের কোনো উপাদানকে আমর সহ্য করি না। এটার সুফল আমরা দেখতে পাই, নর্থ স্টেস্টে ইন্ডিয়ান স্টেটগুলোতে। সেখানে শান্তি বিরাজ করছে, উন্নয়ন হচ্ছে। তারা এটার প্রশংসা করেন। আমরা বলেছি, এ ব্যাপারে আমরা কমিটেড।

নির্বাচনকে সামনে রেখে সকল প্রকার নাশকতা ঠেকাতে সীমান্তে বিজিবি এবং বিএসফের নজরদারি বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন,   নির্বাচনের সময় বা সামনে রেখে আমাদের বিজিবি এবং বিএসএফ যেন তৎপর থাকে। যাতে করে এ ধরনের কোনো নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যবহৃত হতে না পারে; এ রকম কোনো মেটেরিয়াল বর্ডার এলাকাতে না আসতে পারে। এ ব্যাপারে তিনি (ভারতের পররাষ্ট্রসচিব) একমত।  

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, সীমান্তে কেউ মারা যাক তারাও (ভারত) চায় না। সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে আরও সহযোগিতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। সামনের দিনগুলোতো যেন আমরা মৃত্যুমুক্ত সীমান্ত দেখতে পারি সে ব্যাপারে তারাও আন্তরিক।

তিনি বলেন, তিস্তা নিয়ে আমরা অনেকদিন থেকে বলে আসছি। সামনে গঙ্গা চুক্তি শেষ হবে, ২০২৬ শেষ হবে। সে ব্যাপারে টেকনিক্যাল কমিটির আলোচনা শুরুর ব্যাপার আছে। ছয়টি অভিন্ন নদীর বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা আছে। সেগুলো যেন সামনের দিনে আরও বেগবান করা যায় সেটার বিষয়ে আমরা একমত পোষণ করেছি।

কনস্যুলার ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, কনস্যুলার ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছি। এখনও ভিসা দিতে একটু দেরি হচ্ছে। ওনারা অতিরিক্ত লোক লাগিয়েছে, আরও লাগাবে। নৌপথে যাতায়াতের জন্য আলাদা ভিসা ব্যবস্থা করা যায় কিনা-এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

দিল্লিতে অবস্থান করে বাংলাদেশের জন্যও দায়িত্বপ্রাপ্ত এমন ৯০টি দেশের মিশনপ্রধানদের ব্রিফ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রসচিব জানান, আমাদের যে নির্বাচনের শিডিউল হয়ে গেছে সে ব্যাপারে তারা জানে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ব্রিফ করেছি তাদের। নির্বাচন কমিশনের যে কর্মকাণ্ড, নির্বাচন কমিশনের যে গাইডলাইন রয়েছে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়ে, সেটা সবাইকে দিয়েছি। তারা অনেকে বলেছে, আগামীতে তারা ঢাকায় দূতাবাস খোলার বিষয়ে আগ্রহী। বেশ কয়েকটা দেশ ছিল। এর মধ্যে কলম্বিয়া ছিল।

উল্লেখ্য,  ২৪ নভেম্বর নয়া দিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক হয়। ঢাকার পক্ষে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং দিল্লির পক্ষে দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা বৈঠকে নেতৃত্ব দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০২ ঘণ্টা,  নভেম্বর ২৬,  ২০২৩
টিআর/এসএএইচ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।