ঢাকা, শনিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

অবৈধ চিনি চক্রের ৩ সদস্য আটক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২৩
অবৈধ চিনি চক্রের ৩ সদস্য আটক

ঢাকা: ভারত থেকে অবৈধভাবে চিনি নিয়ে আসতো বাংলাদেশি একটি চক্র। তারা এসব চিনি এস আলম, ফ্রেশ, ইগ্লুসহ দেশের নানা শিল্প প্রতিষ্ঠানের নামে বাজারজাত করতো।

সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে চক্রটির তিন সদস্যকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

আটকরা হলেন- কুমিল্লার চকবাজারের আরিশা ট্রেডার্সের ম্যানেজার নিমাই বনিক (৪৪), ফেনীর সোনাগাজীর ইসমাইল ব্রাদার্সের মীর হোসেন (৩৮) ও চট্টগ্রামের চিনি বিক্রির দালাল আব্দুল্লাহ আল মাসুদ (৩৯)। তাদের কাছ থেকে এক টন চিনি জব্দ করা হয়েছে।

রোববার (২৬ নভেম্বর) রাজধানীর শাহজাহানপুর থানার কমলাপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ তিন যুবককে আটক করে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের মতিঝিল বিভাগের স্পেশাল অপারেশনস টিম।

সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

গোয়েন্দা প্রধান জানান, সম্প্রতি দেশের একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে ‘দেশিয় প্রতিষ্ঠানের মোড়কে একটি চক্র ভারতীয় নিম্নমানের চিনি বাজারজাত করছে’ এমন অভিযোগ আসে। সাধারণ মানুষ প্রতারিত ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে- এমন অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে মাঠে নামে ডিবির মতিঝিল বিভাগ।

তদন্তে নেমে ডিবি জানতে পারে, কুমিল্লার সাহেব বাজারের মমিন ব্রাদার্স বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ বস্তা চিনি আনতেন চোরাচালানের মাধ্যমে। সরকারি শুল্ক ও কর ফাঁকি দিয়ে এসব চিনি কুমিল্লা সদর থানার বারাপাড়ার আরিশা ট্রেডার্সের মালিক খোরশেদের গুদামে মজুদ করতেন। তারপর এস আলম, ফ্রেশ, ইগ্লুসহ দেশের নানা শিল্প প্রতিষ্ঠানের নকল মোড়কে পণ্যটি প্যাকেটজাত করে বাজারে সরবরাহ করতো।

এরপর নিমাই বনিকের নির্দেশে গুদাম থেকে এসব চিনি ফেনীর ইসমাইল ব্রাদার্স, চট্টগ্রাম খাতুনগঞ্জের জমজম ট্রেডার্স, চট্টগ্রামের আল মদিনা ট্রেডার্স, শহীদ ট্রেডার্সসহ ঢাকার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছে মূল দামের চেয়ে কমে বিক্রি করা হতো।

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, দেশের বাজারে চিনির ৫০ কেজির প্রতি বস্তার দাম ৬ হাজার ৭০০ টাকা। কিন্তু ভারতীয় চিনি প্রতি বস্তা ৬ হাজার ২০০ টাকা। প্রতিদিনই মমিন ট্রেডার্স  আনুমানিক ৪০০ থেকে ৫০০ বস্তা চিনি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে এনে এভাবে বিক্রি করত। কারণ হিসেবে তারা আমাদের জানিয়েছে, দেশে চিনির দাম বেশি। অপর দিকে ভারতে চিনির দাম কম। তাই ভারতীয় চোরাকারবারিরা লাভের আশায় বাংলাদেশের চোরাকারবারিদের কাছে চিনি বিক্রি করছে। তারা বস্তা প্রতি ৪০০-৫০০ টাকা কম দামে বিক্রি করত। এরপর দেশের বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের নামে বাজারে ছাড়া হতো। এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। বাংলাদেশের চিনি শিল্পও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, দেশের বাজারে চিনির মূল্যের ওপর ভারতীয় চোরাকারবারিরা মূল্য নির্ধারণ করে। চিনির বস্তা যখন ৬ হাজার ৮০০ টাকা ছিল ভারতীয় চোরাকারবারিরা ৬৩০০ টাকায় বিক্রি করেছে। যে কারণে দেশের চিনি শিল্প প্রায় ধ্বংসের দরজায়। সরকারও বিশাল পরিমাণ রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে। অসংখ্য শ্রমিক-কর্মচারী বেকার হচ্ছে। অসংখ্য চোরাকারবারি চক্র সীমান্ত এলাকায় সক্রিয় তারা আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। শীঘ্রই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

আটকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা চলমান বলেও জানান পুলিশের এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২৩
এসজেএ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।