কুমিল্লা: কুমিল্লা লালমাই উপজেলার হাজতখোলায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের প্রচারণার সময় দুই সাংবাদিকের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক (ডিসি)।
কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) সালমা ফেরদৌস।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সালমা ফেরদৌস ঘটনায় সম্পৃক্ত সাংবাদিক ও অভিযুক্ত অর্থমন্ত্রীর ছোট ভাই সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ারের পক্ষের প্রতিনিধির বক্তব্য শোনেন।
সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সালমা ফেরদৌস।
এ সময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আসেন অর্থমন্ত্রীর ভাতিজা লালমাই উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুল হাসান শাহীন, প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক দৈনিক সংবাদের মাসুদ রানা, ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা দৈনিক আমাদের কুমিল্লার সাংবাদিক গাজী মামুন।
সালমা ফেরদৌস বলেন, বিষয়টি আমাদের তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক। তাই বিকেলে দুইপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। এ বিষয়ে তদন্ত পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী দৈনিক সংবাদের লালমাই প্রতিনিধি মাসুদ রানা বলেন, মঙ্গলবার আমাদের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে তদন্ত কমিটি ডেকেছে। আমরা সেখানে বলেছি, অর্থমন্ত্রীর মেয়ে নাফিসা কামাল সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) লালমাই উপজেলার হাজতখোলায় নৌকার প্রচারণায় আসেন। উপজেলায় কর্মরত সংবাদকর্মীরা সংবাদ সংগ্রহের জন্য হাজতখোলা বাজারে যাই। সবাই ভিডিও করছিলেন। এমন সময় অর্থমন্ত্রীর ছোট ভাই গোলাম সারওয়ার সাহেব এসে এক সাংবাদিকের ক্যামেরা নিয়ে নেন, আর আরেকজন সাংবাদিকের ক্যামেরা নিয়ে যাওয়ার জন্য ধস্তাধস্তি করেন।
সাংবাদিক গাজী মামুন বলেন, এই ঘটনার পর চেয়ারম্যান সাহেব বলছেন তিনি আমাকে চিনতে পারেননি, তাই এমনটি হয়েছে। আমি পাঁচ বছর ধরে সাংবাদিকতা করছি। চেয়ারম্যান সাহেবের নিউজ বেশি করেছি। তিনি আমাকে না চেনার কথা নয়।
এদিকে আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, প্রচারণায় নেতা-কর্মীদের সমন্বয়হীনতায় তিনি ক্ষিপ্ত ছিলেন। তাই তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে এ আচরণ করেন।
উল্লেখ্য, অর্থমন্ত্রীর মেয়ে নাফিসা কামাল সোমবার লালমাই উপজেলার হাজতখোলায় নৌকার প্রচারণায় আসেন। সাংবাদিকরা প্রচারণার ছবি তোলার সময় লালমাই বার্তার স্টাফ রিপোর্টার কাজী নিমেলের ক্যামেরাটি ছিনিয়ে নেন অর্থমন্ত্রীর ছোট ভাই সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার। এছাড়া দৈনিক আমাদের কুমিল্লার লালমাই প্রতিনিধি গাজী মামুনের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। সেসময় তিনি ওই সংবাদকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘সাংবাদিকের এতো ভিডিওর দরকার নাই। সারাক্ষণ খালি ছবি তোলা আর ভিডিও করার কোনো কাজ নাই। আমরা ছবি তুলতে ঢাকা থেকে টাকা দিয়ে লোক এনেছি। ’
** কুমিল্লায় নৌকার প্রচারণায় সাংবাদিকের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২৩
এসআরএস