ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ভোটে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য শ্রমিক লীগ নেতার বাড়িতে বোমা তৈরি হচ্ছিল দাবি 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৩
ভোটে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য শ্রমিক লীগ নেতার বাড়িতে বোমা তৈরি হচ্ছিল দাবি  শ্রমিক লীগ নেতা মোতালেব সরকার ও বিস্ফোরণে নিহত ফজলু শেখ (বাঁ থেকে)

সিরাজগঞ্জ:  জেলার বেলকুচিতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার ১০ দিনেও এর রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। গ্রেপ্তার হননি মামলার এজাহারনামীয় একমাত্র আসামি।

 

এদিকে ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য নৌকার সমর্থক শ্রমিক লীগ নেতা মোতালেব সরকারের বাড়িতে বোমা তৈরি করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার সমর্থকেরা।

এর আগে ১৯ ডিসেম্বর দুপুরে বেলকুচি পৌর এলাকার সুবর্ণসাড়া গ্রামে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মমিন মণ্ডলের আস্থাভাজন শ্রমিকলীগ নেতা মোতালেব সরকারের বাড়িতে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এলাকাবাসী সেখানে জড়ো হলেও বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।  

ওইদিন সাংবাদিক ও পুলিশকে প্রেসার কুকার বিস্ফোরণ হয়েছে বলে মোতালেব জানিয়েছিলেন। তবে সেদিন প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটন করা সম্ভব হয়নি।

তিনদিন পর শনিবার (২২ ডিসেম্বর) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফজলু শেখের মৃত্যু হলে তৎপর হয় পুলিশ ও সাংবাদিকরা।  

বোমা বিস্ফোরণে ফজলু শেখের মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা উল্লেখ করেন। এছাড়া ঘটনার দিন নিহতের অবস্থান বেলকুচিতেই ছিল বলে নিশ্চিত হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন।  

সাত দিন পর সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে নিহতের ছোট ভাই বিপুল রহমান বাদী হয়ে মোতালেব সরকারকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বেলকুচি থানার পরিদর্শক মো. আহসানুজ্জামান বলেন, আমরা ঘটনাস্থলের ছবি তুলেছি। তদন্তকাজ এগিয়ে চলছে। পাশাপাশি আসামিকে গ্রেপ্তারেও অভিযান চলছে। কেউ তো সেভাবে সাক্ষী দেয় না। আসামি গ্রেপ্তার হলেই এর রহস্য উদ্‌ঘাটন করা যাবে। তদন্তের স্বার্থে অনেক কিছুই বলা যাচ্ছে না।

এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক বেলকুচি সদর ইউপি চেয়ারম্যান মির্জা সোলায়মান হোসেন বলেন, বেলকুচিতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় আমরা যারা লতিফ বিশ্বাসের কাজ করছি তাদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।  

পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শরীফ মির্জা বলেন, নৌকা সমর্থিত ব্যক্তির বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণে সাধারণ ভোটাররা শঙ্কিত।

সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সাজেদুল বলেন, শ্রমিক লীগ নেতার বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ হলো। কেন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হলো না। দিবালোকে ঘটনা ঘটলো। সেটা চারদিন পরে পত্রিকার মারফত মানুষ জানতে পেরেছে। বোমাটা অসৎ উদ্দেশ্যে এসেছে। ভোটারদের বাধা সৃষ্টির জন্য যেগুলো করা দরকার সেটাই তারা তৈরি করছে নৌকার সমর্থকরা।

বেলকুচি পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা বলেন, বোমা বিস্ফোরণে একজন মারা গেছে। অথচ ওসি সাহেব এটিকে প্রেসার কুকার বিস্ফোরণ বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি একজনের পক্ষ হয় কাজ করতেই এই থানাতে এসেছেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস বলেন, সূবর্ণসাড়ায় বহিরাগত একটি ছেলে বোমা বানাতে গিয়ে মারা গেছে। যেভাবে বোম ব্লাস্ট হয়েছে আর নৌকা প্রার্থীর পাশে যে বহিরাগতদের আনাগোনা দেখছি তাতে সন্দেহ করছি আগামী
নির্বাচনে সহিংসতা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ বিষয়ে আব্দুল মমিন মন্ডল এমপি বলেন, এ বিষয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যারা আছে তারা প্রপার ইনভেস্টিগেশন করে রিপোর্ট দেবেন। নির্বাচনকালীন বিভিন্ন ধরনের আওয়াজ ওঠে। কোনটা প্রকৃত ঘটনা এটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই বলতে পারবে। আমি যেহেতু মনিটরিং করছি না। সেহেতু এ বিষয়ে বলতে পারব না।

বেলকুচি থানার ওসি আনিসুর রহমান বলেন, মামলার তদন্তকাজ এগিয়ে চলছে। আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।