সিলেট: ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঘুষ লেনদেনের সময় দুই নার্সকে আটক করেছে সরকারের একটি গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা।
মঙ্গলবার (০৯ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের একটি কক্ষে ৬ লাখ টাকা আর্থিক লেনদেনকালে দুজনকে আটক করলেও মূল হোতা বহুল আলোচিত নার্সিং এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইসরাইল আলী ছাদেক পালিয়ে যায়।
আটককৃতরা হলো- হাসপাতালের সিনিয়র নার্স আমিনুল ইসলাম ও সুমন দেব। এসময় তাদের কাছ থেকে নগদ ৬ লাখ টাকা জব্দ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, সকালে নার্সিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামীমা আক্তার এসে তাকে জানান, সাদা পোশাকে কিছু লোকজন সিনিয়র নার্স আমিনুল ও সুমনকে ধরে নিয়ে গেছে। পরে জানতে পারি একজন সিনিয়র মহিলা নার্সের আটকে থাকা এরিয়ার বিলের টাকা ছাড়িয়ে নিতে গিয়ে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত ঘটনার সঠিকতা পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যে কারণে তাদের আটক করা হয়।
এ ঘটনায় কতজন জড়িত এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এই ঘটনার মূল হোতা বাংলাদেশ নার্সিং অ্যাসোসিয়েশন সিলেটের সাধারণ সম্পাদক ইসরাইল আলী ছাদেক। সে পলাতক রয়েছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। প্রতিবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে এখনো এই ঘটনায় মামলা হয়নি।
এ ঘটনায় নাম প্রকাশে না করার শর্তে ঘুষ প্রদানকারী সিনিয়র নার্স গণমাধ্যমকে বলেন, তার এরিয়ার (ডিউটির) বিলের ৩৪ লাখ টাকা বকেয়া ছিল। সেই টাকাগুলো তুলতে চাইলে ইসরাইল আলী ছাদেক, আমিনুল ও সুমন দেবসহ ৪ জন তার কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। অনেক দেনদরবারের পরে সাড়ে ৬ লাখ টাকায় রাজি হয়। আজ ৫০ হাজার কম দিয়ে ৬ লাখ টাকা মেডিকেল কলেজ অভ্যন্তরের ব্যাংক থেকে তুলে দিতে যাই। তখন ছাদেককে ফোনে বলি তার হাতে টাকা দেবো। কিন্তু সে আসেনি। আমিনুলকে পাঠায়। দুপুরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের অবজারভেশন কক্ষের পাশে স্টোর রুমে টাকা হস্তান্তর কালে দুইজন লোক এসে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং আমিনুল ও সুমন দেবকে আটক করে নিয়ে যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একাধিক কর্মচারী বলেন, ইসরাইল আলী ছাদেক বিগত দিনে সব কিছুর নিয়ন্ত্রক ছিলেন। নার্স হলেও কখনো তাকে নার্সের পোশাকে দেখা যায়নি। আগের দুই পরিচালকের মেয়াদে তার কর্মস্থল নগরের সামসুদ্দিন হাসপাতালে থাকলেও তিনি পরিচালকের কক্ষের পাশে নিজের অফিস করে বসে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন। এমনকি জরুরি প্রয়োজনে চিকিৎসকরাও তার কাছে ধরনা দিতো।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০২৩
এনইউ/এমএম