ঢাকা: রাত পোহালেই শুরু হবে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ি উৎসব সাকরাইন। নানান রঙের নানা রকমের ছোট বড় হাজারো ঘুড়িতে সাজবে নীল আকাশ।
রাজধানী ঢাকার ইতিহাস প্রায় ৪০০ বছরের। এই ইতিহাস ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে পৌষ সংক্রান্তি। এই উৎসব শীতকালেই উদযাপিত হয়। বাংলা পৌষ মাসের শেষের দিন হলো পৌষ সংক্রান্তি। এ দিনটি ঢাকাইয়া ভাষায় ‘সাকরাইন’ নামে পরিচিত।
পুরান ঢাকার সূত্রাপুর, শাঁখারিবাজার, তাঁতিবাজার এলাকা ঘুরে দেখায় যায়, সেখানকার প্রতিটি ঘুড়ি, লাটাই ও সুতার দোকানগুলোয় উপচে পড়া ভিড়।
দোকানগুলো থরে থরে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন রঙের, নানা রকমের ডিজাইনে ছোট-বড় ঘুড়ি, নাটাই দিয়ে।
ছোট বড় সব বয়সের ছেলে-মেয়েরা সাকরাইন পালন করতে ঘুড়ি কেনায় ব্যস্ত।
রাজধানী শাঁখারী বাজারের স্থানীয় বাসিন্দা অনন্যা সেন ও অঙ্কিতা সেন ঘুড়ি কিনতে এসে বলেন, প্রতি বছর সাকরাইনের দিনে আমরা পরিবার নিয়ে অনেক মজা করি। সারাদিন হৈ-চৈ আর আড্ডা দিয়ে কিভাবে যে দিনটি চলে যায় টেরই পাওয়া যায় না।
অন্যান্য দিনে একটি ঘুড়ি পাঁচ টাকা হলে সাকরাইন উপলক্ষে তা বেড়ে হয়ে যায় ১০-১৫ টাকা। ঘুড়ির নাটাই, সুতো সব কিছুর দামই তিন-চার গুণ বেড়ে যায়। চায়না, কোরিয়ান ঘুড়িগুলোর দাম ১৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। আর বিভিন্ন আকারে নাটাইগুলোর দাম ৫০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা।
নয়া বাজার থেকে ঘুড়ি কিনতে আসা সুমন তার বন্ধুরা বলেন, অন্যান্য সময়ের তুলনায় দামটা একটু বেশি। তারপরও কিনেছি। কারণ সাকরাইন তো বছরের একবারই হয়। উৎসব সবার জন্যই।
এছাড়া সাকরাইন উপলক্ষে কলতাবাজার, শিংটোলা, কাগজীটোলা, সূত্রাপুর, লক্ষ্মীবাজার, বাংলাবাজার, ফরাশগঞ্জ, বানিয়ানগর, আইজি গেট, আরসিন গেট, গেন্ডারিয়া প্রভৃতি এলাকা সাকরাইনের জন্য বসে নাটাই ঘুড়ির মেলা। সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলে মিষ্টির বিকিকিনি।
দিনটি উপলক্ষে প্রতিটি মহল্লাকে সাজানো হবে বিভিন্ন রকমের কাগজের ফুল ও বেলুন দিয়ে। দিনে সাউন্ড সিস্টেমের সঙ্গে বাজবে গান আর ঘুড়ির কাটাকাটির লড়াই। রাতে ফুটানো হবে আতশবাজি।
এই দিনে পুরান ঢাকার মহল্লাগুলো ফিরে পাবে নতুন প্রাণ।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৪
এসআইএ