পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ে নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করায় এবং নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে কথা বলার অভিযোগে শাহাদত হোসেন সাদাত নামে এক যুবলীগ নেতাকে মারধর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।
মারধরের শিকার শাহাদাত হোসেন সাদাত পঞ্চগড় সদর উপজেলা যুবলীগের সহ সম্পাদক।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই যুবলীগ নেতাকে মারধরের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নেতা পঞ্চগড় সদর থানায় মামলা দায়ের করলে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে অভিযান চালিয়ে তাদের সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তাররা হলেন - পঞ্চগড় জেলা সদরের চাঁনপাড়া এলাকার হাসিবুল ইসলাম (২৬), পূর্ব জালাসী এলাকার কামরুল ইসলাম (২৮) ও পুকুরীডাঙ্গা এলাকার এনামুল ইসলাম (৪৫)।
পরে বিকেলে আইনি প্রক্রিয়া শেষে আদালত আসামিদের কারাগারে পাঠায়। তবে মামলার প্রধান আসামি মফিজুল ইসলামসহ অপর ৭জন এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ।
পঞ্চগড় সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাহিদুর রহমান গ্রেপ্তারের বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মামলা দায়েরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমরা তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। তাদেরকে আদালতে পাঠানো হলে আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এছাড়া মামলার অন্য সব আসামিকে গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জানা গেছে, যুবলীগ নেতা শাহাদাতকে মারধর করা ব্যক্তিরা এলাকায় নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য নাঈমুজ্জামান ভূইয়া মুক্তার কর্মী-সমর্থক হিসেবে পরিচিত।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, যুবলীগ নেতা শাহাদতকে একসাথে ১০ থেকে ১৫ জন ব্যক্তি মারধর করছেন। এ সময় ভুক্তভোগী নিজেকে অসুস্থ দাবি করলেও তারা তাকে ছাড় দেয়নি। একসঙ্গে কিল-ঘুষি মারে ও কাঠ দিয়ে পেটাতে থাকে।
ভিডিওতে তাদের বলতে শোনা যায়, নব নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নাঈমুজ্জামান ভূইয়া মুক্তার বিরুদ্ধে নির্বাচনে কথা বলায় তাকে মারধর করা হচ্ছে। মারধরের পর আর কখনো সাংসদ মুক্তার বিরুদ্ধে কোন কথা না বলার অঙ্গীকার করতে বাধ্য করা হয় তাকে। মারধর ও লাঞ্ছিত করার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ভিডিও ভাইরালের পর এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
থানা পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১১ জানুয়ারি দুপুরে ডাক্তার দেখানোর জন্য ইজিবাইকে করে পঞ্চগড় জেলা শহরের যাচ্ছিলেন শাহাদত হোসেন সাদাত। যাওয়ার পথে পঞ্চগড় জেলা শহরের জালাসী ভাসানী পার্ক এলাকায় পৌঁছালে তার ইজিবাইকের গতিরোধ করে ওই এলাকার এলাকার মফিজুল, জহিরুল, আল আমিন, রফিকুল. শরিফ, হাসিবুল, নাঈম, কামরুল, আব্দুল করিমসহ ১০ থেকে ১৫ জন। তাকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে রাস্তার পাশে নিয়ে বেধড়ক মারধর শুরু করেন তারা। মারধর করে ভিডিও ধারণ করেন তারা।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় বাংলানিউজকে বলেন, আমরা পঞ্চগড়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করে যাচ্ছি। এর মাঝে এমন ঘটনার একটি ভিডিও আমাদের কাছেও আসে। পরে বাদী থানায় মামলা দায়ের করলে এ ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেফতার করতে আমরা সক্ষম হই।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২৪
এসএএইচ