ঢাকা, শনিবার, ৫ আশ্বিন ১৪৩২, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

গোয়াহরি গ্রামের ঐতিহ্য পলো বাওয়া উৎসব

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯:২০, জানুয়ারি ১৬, ২০২৪
গোয়াহরি গ্রামের ঐতিহ্য পলো বাওয়া উৎসব

সিলেট: সিলেটের গ্রামীণ জনপদের ঐতিহ্যবাহী এক উৎসবের নাম পলো বাওয়া। যে উৎসবে অংশ নেন গ্রামের ছেলে-বুড়ো, নারী-শিশুসহ হাজার হাজার মানুষ।

উৎসব দেখতেও যান বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষজন।

দেড়শ বছর ধরে এ উৎসব পালন করে আসছেন সিলেটের দৌলতপুর ইউনিয়নের গোয়াহরি গ্রামবাসী। এ উৎসবে আনন্দ বিরাজ করে গ্রামে। ঘরে ঘরে বেড়ে যায় অতিথিদের আগমন।

প্রতি শীত মৌসুমে সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে পলো বাওয়া উৎসবে মাতোয়ারা হতে দেখা যায় গ্রাম-গঞ্জের লোকজনকে।

এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সিলেটের বিশ্বনাথে দৌলতপুর ইউনিয়নের গোয়াহরি হাওরের বড় বিলে পলো বাওয়া উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। উৎসব ঘিরে আনন্দে মাতোয়ারা হন এলাকাবাসী।  

এদিন পলো বাওয়া উৎসবে অংশ নিতে সকাল থেকে নিজ নিজ পলো, হাতাজাল, উড়ালজাল ও লাঠিজালসহ নানা ধরনের মাছ ধরার উপকরণ নিয়ে হাজির হন মানুষ।  

ঘড়ির কাটায় নির্ধারিত সময় ঠিক বেলা ১১টা বেজে উঠলেই সবাই মিলে একসঙ্গে পলো নিয়ে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। আবার কেউ কেউ বিভিন্ন ধরনের জাল দিয়েও মাছ শিকার করে অনেকটা আনন্দে শামিল হন।

স্থানীয়রা জানান, মূলত আগেরকার মুরব্বিদের এ প্রচলন দেড়শ বছর আগে থেকে চলে আসছে। উৎসব ঘিরে আগে থেকে দিনক্ষণ ঠিক থাকায় এলাকার প্রবাসীরাও দেশে আসেন। আত্মীয়-স্বজনকেও দাওয়াত দেওয়া হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা ইকবাল হোসেন ও আব্দুর রব বলেন, বর্তমানে উৎসবটি বিলীন হতে চলেছে। নতুন প্রজন্মের অনেক ছেলেরা পলো বাওয়া উৎসব কী সেটা বোঝে না। অবশ্য আমরা সেই উৎসবটি ধরে রেখেছি। এ উৎসব ঘিরে গ্রামের ঘরে ঘরে স্বজনদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। বিশেষ করে মেয়ের জামাইদের দাওয়াত করে আনা হয়।

গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক মুজিবুর রহমান বলেন, পলো বাওয়া উৎসব দেখতে দূরদূরান্ত থেকে লোকজন আসেন। যে কখনো মাছ ধরেনি, সেও পলো বাওয়া উৎসবে মাছ ধরার যেকোনো উপকরণ নিয়ে অংশ নেন। এটা ট্রেন্ড হয়ে গেছে। আর উৎসব ঘিরে ঘরে ঘরে আনন্দের আমেজ বিরাজ করে। পলো বাওয়া উৎসবে গ্রামের হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন। মনের সুখে মাছ ধরে বাড়ি ফিরে যান।

প্রতিবছরের মতো এবারও সোমবার সকাল থেকে লোকজন পলোসহ মাছ ধরার বিভিন্ন যন্ত্র নিয়ে বিলের পাড়ে সমবেত হতে থাকেন। দুপুরে ১২টায় প্রবাসীসহ একসঙ্গে গ্রামের শত শত লোক পলো নিয়ে বিলের পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। উৎসব উপভোগ করতে গ্রামের নারী, পুরুষ, শিশু, কিশোর, কিশোরী ও প্রবাসী শিশুরাসহ সবাই বিলের পাড়ে উল্লাস করেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২৪
এনইউ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।