ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শহরের স্মৃতিবিজড়িত আড্ডাস্থল ঘুরে বেড়ালেন রাষ্ট্রপতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৪
শহরের স্মৃতিবিজড়িত আড্ডাস্থল ঘুরে বেড়ালেন রাষ্ট্রপতি

পাবনা: নিজ শহর পাবনার বিভিন্ন স্মৃতিবিজড়িত আড্ডাস্থল ঘুরলেন দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর হেঁটে শহরের আড্ডাস্থলগুলো ঘুরে বেড়ান পাবনার এই সূর্যসন্তান।

এসময় রাষ্ট্রপতিকে দেখার জন্য উৎসুক সাধারণ মানুষের ঢল নামে শহরে। প্রশাসনিক কঠোর নিয়ম কানুনের জন্য দূর থেকে অনেকেই তাকে দেখেছেন। তবে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ প্রটোকলে থাকা মানুষটি সহজ সরলভাবে মানুষের সঙ্গে মিশতে বেশ পছন্দ করেন। আর সেটার উদাহরণ দিয়েছেন তিনি প্রথমবারেই। আর সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে তৃতীয়বারের মতো নিজ জেলায় এসে হেঁটে হেঁটে ঘুরে বেড়ালেন স্মৃতিবিজরিত স্থানগুলোতে।

বন্ধু ও আড্ডা প্রিয় এই মানুষটি দেশের সব মানুষের সঙ্গে তার নিজ জেলাকে একটু বেশিই ভালোবাসেন মনে হয়। তাইতো সব কিছুকে দূরে রেখে হেঁটে ঘুরে বেড়ালেন জেলা শহরের বিভিন্নস্থান।

সফরের প্রথম দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পাবনা সার্কিট হাউজ থেকে তার অন্যতম আড্ডাস্থল পাবনা ডায়াবেটিক সমিতিতে প্রবেশ করে বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। সেখানে কিছু সময় অতিবাহিত করার পরে হেঁটে আসেন আরেক আড্ডাস্থল শতবর্ষের ঐতিহ্য মণ্ডিত লক্ষ্মী মিষ্টান্ন ভান্ডারে। সেখানে তিনি কিছু সময় অতিবাহিত করে পরে জেলার অন্যতম প্রসিদ্ধ মিষ্টির দোকান প্যারাডাইস সুইটস এ প্রবেশ করেন। সেখানে তিনি তার প্রিয় খাবারের মধ্যে ঝুরি-বুদিয়া খান। জেলা শহরের এই দুটি প্রসিদ্ধ মিষ্টির দোকানে তিনি কৈশোর ও রাজনৈতিক সময়ে অনেক আড্ডা দিয়েছেন। তবে সব চাইতে বেশি সময় বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে সময় কাটাতেন লক্ষ্মী মিষ্টান্ন ভান্ডারে। জেলার প্রায় সব প্রবীণ প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতাদের আড্ডাস্থল ছিল এই মিষ্টির দোকান।

পরে তিনি সেখান থেকে হেঁটে রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রবেশ করেন স্মৃতিবিজড়িত প্রিয় সাংবাদিক সংগঠন পাবনা প্রেসক্লাবে। সেখানে তিনি ক্লাবের সাংবাদিক বন্ধুদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে সদস্য রুমে বসে সবার সঙ্গে কথা বলেন। এখানে তিনি প্রায় এক ঘণ্টা সময় অতিবাহিত করেন। পরে রাষ্ট্রপতির নির্ধারিত গাড়িতে করে ফেরেন সার্কিট হাউজে। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় বন্ধুবান্ধব ও নেতাকর্মীরা।

এর আগে বিকেল ৩টার দিকে চারদিনের সফরে পাবনায় এসে পৌঁছান রাষ্ট্রপতি।  চারদিনের সফরে তাঁর আসার কথা ছিল গতকাল ১৫ জানুয়ারি সোমবার। এদিন বৈরী আবহাওয়ার কারণে সফর বাতিল করা হয়।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সফরের দ্বিতীয় দিন‌ মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর‌ দুইটা ১০ মিনিটে রাষ্ট্রপতিকে বহনকারী হেলিকপ্টার পাবনার ঈশ্বরদীর বিমান বন্দরে অবতরণ করে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবীর কুমার দাস।

এরপর তাকে‌ বহনকারী গাড়িবহর সড়কপথে পাবনা সার্কিট হাউসের উদ্দেশে রওনা দেয়। বহরটি বিকেল ৩টায় সার্কিট হাউসে প্রবেশ করে। সেখানে ২২তম রাষ্ট্রপ্রধানকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। গার্ড অব অনার শেষে বিশ্রামের পর সন্ধ্যার দিকে প্রিয় স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলোতে ঘুরতে বের হন রাষ্ট্রপতি।

গত ১৪ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের প্রটোকল অফিসার মুহাম্মদ মামুনুল হক স্বাক্ষরিত চিঠিতে ১৫ জানুয়ারি ১২.৪০ মিনিটে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে পাবনায় পৌঁছানোর কথা ছিল রাষ্ট্রপতির।

সফরের দ্বিতীয় দিনে ১৭ জানুয়ারি সকাল ১১টার দিকে স্থানীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে। দুপুর ১টার দিকে সার্কিট হাউজে ফিরে যাবেন এবং সেখানে রাত্রিযাপন করবেন। ১৮ জানুয়ারি ১.৪০ মিনিটের দিকে পাবনা থেকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন।

প্রথম দিনের সফর বাতিল হাওয়ায় চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরের সময়সূচি পরিবর্তন হবে বলে প্রশাসনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগে দ্বিতীয়বারের মতো গত ২৭ সেপ্টেম্বর তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে নিজ জেলা পাবনায় আসেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সফরের দ্বিতীয় দিন (২৮ সেপ্টেম্বর) পাবনার সাঁথিয়ায় নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার ফাইনাল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন। ৫০০ শয্যার পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, পাবনা ডায়াবেটিক সমিতির অনুষ্ঠানে যোগদানসহ স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

এর আগে গত ১৫ মে চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে নিজ জেলা পাবনায় এসেছিলেন রাষ্ট্রপতি। সফরের দ্বিতীয় দিন ১৬ মে পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে তাকে বিশাল নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৪

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।