ঢাকা, শুক্রবার, ১১ আশ্বিন ১৪৩২, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

দুই যুগ ধরে বেহাল যশোর পৌরসভার বারান্দিপাড়া মেঠোপুকুর রাস্তা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:০১, জানুয়ারি ২২, ২০২৪
দুই যুগ ধরে বেহাল যশোর পৌরসভার বারান্দিপাড়া মেঠোপুকুর রাস্তা

যশোর: প্রায় দু’যুগ ধরে যশোর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বারান্দিপাড়ার মেঠো পুকুরের দুই কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার না হওয়ায় চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এ রাস্তার একটু পরপরই খানা খন্দে ভরা, আবার কোনো কোনো জায়গায় রাস্তা ভেঙে পুকুরে মধ্যে  চলে গেছে।

অন্যদিকে রাস্তার পাশে থাকা ড্রেনের ঢাকনা না থাকায় ঘটছে দুর্ঘটনা।

বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতেই এই রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।  দূর থেকে দেখলে বোঝার উপায় থাকে না এটি রাস্তা নাকি খাল। বর্তমানে শীতকাল চললেও এখনও ওই রাস্তায় অসংখ্য গর্ত, খালা-খন্দ দেখা যাচ্ছে।

এই রাস্তা বর্তমানে রিকশা ভ্যান, বাইসাইকেল চলাচলেরও অনুপযোগী। এমনকি মোটরসাইকেল, বৈদ্যুতিক চালিত অটোরিকশা চলাচল করতে পারছে না। বাধ্য হয়ে মেঠোপুকুরপাড়ের দেড় হাজার বেশি সাধারণ মানুষ পায়ে এই রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাতায়াতে করছে।

এতে সব চেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে শিক্ষার্থী, বয়স্করা ও রোগীরা।

বারান্দিপাড়া মেঠো পুকুরপাড়া বাসিন্দা শেখ রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, দুই দিন আগে আমার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে যায়। রাতে হাসপাতালে নেয়ার জন্য রিকশাওলাকে বললে ৫মিনিটের পথে জন্য ২শ টাকা ভাড়া চায়।  তিনি আরও বলেন, ভাঙাচোড়া রাস্তায় বেশি টাকা না দিতে পারলে অনেক সময় রোগীদের কাঁধে বা কোলে করে মেইন রোডে নিয়ে যেতে হয়। যার কারণে সব চেয়ে বেশি কষ্ট ভোগ করতে হয় প্রসূতি মায়েদের নিয়ে।

বয়োবৃদ্ধ আবুল কাশেম বলেন, খালখন্দে ভরে গেছে রাস্তাটি। এখন চলতে গেলেই হোঁচট খেতে হয়। রিকশা-ভ্যান উল্টে যায়। প্রতিদিনই ঘটছে কোন না কোন দুর্ঘটনা। সামান্য বৃষ্টি হলেই ড্রেন ও রাস্তায় পানিতে ভরে যায়। ফলে এই নোংরা পানি পথচারী ও দুধারের বাড়িতে ভরে যায়। পাঁচ মিনিটের রাস্তায় যেতে সময় লাগে ১৫ মিনিট।

আব্দুর রশিদ নামে আর এক বাসিন্দা বলেন, ২০০১ সালে রাস্তাটি  তৈরি করা হয়। তারপর থেকে কোন সংস্কার করা হয়নি এ রাস্তা। রাস্তার পাশ দিয়ে তৈরি ড্রেনের উপরে  ঢাকনাও ভেঙ্গে গেছে। জায়গায় জায়গায় অধিকাংশ জায়গায় ড্রেনের উপরে ঢাকনা নেই। অনেক সময় বাচ্চারা ড্রেনের মধ্যে পড়ে যায়। রাতে চলতে গেলে হোঁচট খেয়ে ড্রেনের মধ্যে পড়ে যেতে হয়।  

তিনি আরও বলেন, এই কয়দিন আগে আমার নাতি ছেলে সাইকেলে চড়ে স্কুলে যাচ্ছিল। সাইকেল রাস্তার ভাঙ্গায় লেগে পুকুরে মধ্যে পড়ে যায়। তবে এ রাস্তা ভেঙে পুকুরের মধ্যে চলে গেছে বেশিরভাগ জায়গায়। ফলে রাস্তার প্রশস্ততা কমে গেছে। যার কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে বেশি।

রহিমা বেগম, ইনা মণ্ডল, সৌখিনাসহ ৭জন নারী বলেন, ৫০বছর ধরে এখানে বসবাস করছি। ভোট আসলেই উন্নয়নের প্রতিশ্রুত দেন জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু বিজয়ী হওয়ার পরে আর কোন কাজ করে না তারা। ২৩ বছর আগে রাস্তা হয়েছে। তারপর কোন সংস্করণ বা কোন উন্নয়ন হয়নি। বর্তমানে রাস্তাটি সংস্করণ করা সময়ের দাবি। আজ এলাকাবাসীসহ সবার প্রাণের দাবি যে কোন মাধ্যমে রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করা হোক।

এদিকে, রাস্তার সংস্কারের দাবিতে রোববার দুপুরের দিকে যশোর বারান্দিপাড়া মেঠোপুকুরপাড়া কমিউনিটি ফোরামের আয়োজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধনে দুই-তিন শ’ জনসাধারণ উপস্থিত হন।

যশোর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইদুর রহমান বলেন, মেঠোপুকুরপাড়া রাস্তার নিয়ে যশোর পৌরসভায় আলোচনা করা হয়েছে। দ্রুত মাপজোঁক করে ঢাকায় পাঠানো হবে।

যশোর পৌরসভার মেয়র হায়দার গণি খান পলাশ বলেন, ৪০ কোটি টাকার অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে।  দ্রুত মেঠোপুকুরসহ ছোটবড় অনেক রাস্তার সংস্করণ ও নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও আগামী দুই বছরের মধ্যে যশোর পৌরসভার ছোটবড় আর কোন রোড খারাপ থাকবে না বলে আশা করি।


বাংলাদেশ সময়: ১৩০১ ঘণ্টা,জানুয়ারি ২২,২০২৪
ইউজি/এমএম
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।