ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ মাঘ ১৪৩১, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

টেকনাফ সীমান্তে গুলির শব্দ নেই, আতঙ্ক আছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪
টেকনাফ সীমান্তে গুলির শব্দ নেই, আতঙ্ক আছে

কক্সবাজার: জেলার টেকনাফ হ্নীলা ও শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তে সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেলে মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

গত ১২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে গোলাগুলির শব্দ শোনা না গেলেও আতঙ্ক এখনও পুরোপুরি কাটেনি।

এছাড়া নাফ নদীতে জেলেদের মাছ ধরা স্বাভাবিক হয়নি। বন্ধ থাকার পাশাপাশি স্থানীয়দের বহনকারী নৌযান চলাচল সীমিত হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাত এখনও অব্যাহত থাকায় রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না স্থানীয়রা।

টেকনাফের ইউএনও মো. আদনান চৌধুরী জানান, সীমান্ত পরিস্থিতি বর্তমানে অনেকটা শান্ত রয়েছে। এপারের মানুষের যাতে কোনো সমস্যা না হয়, এজন্য বিজিবি ও কোস্টগার্ড টহল বাড়িয়েছে। এ নিয়ে সীমান্তের বাসিন্দাদেরও সতর্ক থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুস সালাম জানান, গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার মধ্যরাত পর্যন্ত শাহপরীর দ্বীপ এলাকায় থেমে থেমে ব্যাপক গুলি ও মর্টারশেলসহ ভারী গোলাবর্ষণের শব্দ শোনা গিয়েছিল। তবে রোববার থেকে গোলাগুলির শব্দের তীব্রতা কমতে শুরু করে। সোমবার ঘণ্টা দু’য়েক পর পর ১/২টি করে গুলিবর্ষণের শব্দ শোনা গিয়েছিল। সোমবার সন্ধ্যার পরপর বেশ কয়েকটি গোলাগুলির শব্দের পর পুরো রাত থেকে এখন (দুপুর ১২টা) পর্যন্ত গোলাবর্ষণের কোনো শব্দ শোনা যায়নি।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম জানান, গোলাগুলি না হলেও নিরাপত্তার স্বার্থে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে।

হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, সোমবার সকালে হ্নীলা ইউনিয়নের ফুলের ডেইল সীমান্তে টানা ১০ থেকে ১৫ মিনিট বেশ কিছু গোলাগুলির শব্দ শোনা গিয়েছিল। তবে সকালের পর থেকে আর গোলাগুলির কোনো শব্দ ভেসে আসেনি। মঙ্গলবার সকালেও সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক।

প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির লড়াই চলছে। চলতি মাসের শুরু থেকে তীব্র আকার ধারণ করায় এর প্রভাব পড়ে বাংলাদেশ সীমান্তে।

এদিকে, গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা এবং কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং সীমান্ত এলাকার শান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। এতে সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত থাকায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম, তমব্রু ও বাঁইশফাড়ি এলাকায় জনজীবন স্বাভাবিক।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা এবং বর্তমানে নতুন পুরনো মিলে বাংলাদেশ আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গার সাড়ে ছয় বছর পার হলেও মিয়ানমারের নানা ছলচাতুরির কারণে একজন রোহিঙ্গাকে সেদেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।

বর্তমানে এসব রোহিঙ্গা কক্সবাজারে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি রোহিঙ্গা শিবির এবং নোয়াখালীর সাগরদ্বীপ ভাসানচরে বসবাস করছে। তবে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। যেহেতু রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক, সেহেতু এই ইস্যুতে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো এখন বাংলাদেশের একমাত্র লক্ষ্য। এ বিষয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪
এসবি/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।