ঢাকা, বুধবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩২, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

২১ ফেব্রুয়ারি: চাহিদা কম থাকলেও আশাবাদী শাহবাগের ফুল বিক্রেতারা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:০০, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪
২১ ফেব্রুয়ারি: চাহিদা কম থাকলেও আশাবাদী শাহবাগের ফুল বিক্রেতারা

ঢাকা: মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ফুল বিক্রির ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন রাজধানীর শাহবাগের ফুল বিক্রেতারা। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ফুলের দাম বাড়ায় কমেছে ক্রেতাদের চাহিদা।

তারপরও বিশেষ দিবস ঘিরে ভালো বিক্রির আশা এ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে শাহবাগে অবস্থিত বটতলা ফুল মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, গোলাপ, গাঁদা, চন্দমল্লিকা, জারবেরাসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরনের ও হরেক রকমের ফুল দিয়ে দোকান সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বিশেষ করে শ্রদ্ধাঞ্জলির রিংয়ের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকায় সেসব রিং তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বেশিরভাগ দোকানের কর্মচারীরা। তবে সেই তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম দেখা গেছে।

বিক্রেতারা জানান, ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ফুলের দাম অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে যেসব ফুলের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে সেগুলোর দাম প্রায় তিনগুণ বেড়েছে।

বর্তমানে এ মার্কেটে প্রতিপিস দেশি গোলাপ ৫০-৬০ টাকা, বিদেশ থেকে আমদানি করা গোলাপ ১০০-১২০ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা ১৫-২০ টাকা, গ্ল্যাডিওলাস ৩০-৪০ টাকা, জারবেরা ৪০ টাকা, রজনীগন্ধার স্টিক ৩০-৪০ টাকা, লিলি ৫০০ টাকা, ক্যালেন্ডোলা ২০ টাকা, চায়না মাম ১৫০ টাকা, সবুজ মাম ১২০ টাকা, জিপসি (আঁটি) ৫০-৬০ টাকা, গাঁদা (মালা) ১০০-২০০ টাকা, শাপরা ২০ টাকা, কামিনী পাতা (আঁটি) ১০০-১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবসে ক্রেতার চাহিদার সবচেয়ে শীর্ষে থাকে শ্রদ্ধাঞ্জলির রিং। সাধারণত ২৪ থেকে ৩৬ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে এসব রিংয়ের আকার। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের ফুল দিয়ে সেসব রিং সাজিয়ে দেন বিক্রেতারা। ফুলের ভিন্নতা ও রিংয়ের আকারভেদে এসব শ্রদ্ধাঞ্জলির রিং এক হাজার থেকে ২০ হাজার টাকার বেশি হয়ে থাকে। শাহবাগের এক একটি দোকান এ সময় ২০-৫০টি পর্যন্ত শ্রদ্ধাঞ্জলির রিং বিক্রি করে থাকেন।

সম্প্রতি উদযাপিত হওয়া বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও পহেলা ফাল্গুনেও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছিলেন শাহবাগের ফুল ব্যবসায়ীরা। তখনও ফুলের দাম বেশি থাকায় এবং দিবসটির একদিন পরেই এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ায় কম-বেশি লোকসান গুণতে হয় প্রায় সব ব্যবসায়ীকে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ব্যবসায়ীরা চান সেই লোকসান পুষিয়ে নিতে। তবে ক্রেতা না থাকায় এ দিবসেও লোকসান গোনার আশঙ্কা করছেন বিক্রেতারা।

শাহবাগ বটতলা ফুল মার্কেটের ইকো ফ্লাওয়ারের বিক্রেতা দীন ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ৫০ হাজার টাকার ফুল তুলেছি। ভালো ফুল বিক্রির আশা করছি। তবে সকাল থেকে তেমন ক্রেতা নেই। বিকেল ও সন্ধ্যায় ক্রেতা বাড়বে প্রত্যাশা করছি। ভালোবাসা দিবসে লোকসান করছি, সেটি পুষিয়ে নেওয়ার ইচ্ছা আছে।

অনিন্দ্য পুষ্প নীড়ের বিক্রেতা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ফুলের দাম বেশি হওয়ায় ভালো বিক্রি হবে বলে মনে হয় না। সকাল থেকে একটি শ্রদ্ধাঞ্জলির রিংয়ের অর্ডারও পাইনি। এখনও সময় আছে। দেখি কী হয়।

ফুলের উৎপাদন কমায় এবং ব্যাকটেরিয়া অনেক ফুল নষ্ট হওয়ায় এবার ফুলের দাম বেশি বলে জানিয়েছেন শাহবাগ বটতলা ক্ষুদ্র ফুল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সদস্য ও মাহমুদা পুষ্পালয়ের স্বত্বাধিকারী ইসলাম হোসেন মন্টু। তিনি বলেন, চাহিদা অনুযায়ী ফুলের উৎপাদন ও সরবরাহ কম। আর সরবরাহ কম হলে দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। ভাইরাসের কারণে বাগানে অনেক ফুল নষ্ট হচ্ছে। যার কারণে বাজারে কম ফুল আসছে। ফুলের দাম বেশি হওয়ায় ভালোবাসা দিবসে আমরা যে লোকসান করেছি, সেটি পোষানোর সুযোগ নেই। আর মানুষ আগের মতো শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া ভুলে যাচ্ছে। চাহিদা কমার এটিও একটি কারণ। আমি নিজে মাত্র ৩০ হাজার টাকার ফুল এনেছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪
এসসি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।