ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বিচারকদের ক্ষমতার অপব্যবহার যেন না হয় খেয়াল রাখার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৪
বিচারকদের ক্ষমতার অপব্যবহার যেন না হয় খেয়াল রাখার আহ্বান রাষ্ট্রপতির অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: বাসস

ঢাকা: বিচারকদের ক্ষমতার অপব্যবহার যেন না হয় সেদিক কঠোরভাবে খেয়াল রাখার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের ইনার কোর্ট ইয়ার্ডে দুইদিন ব্যাপী ‘একবিংশ শতাব্দীতে দক্ষিণ এশিয়ার সাংবিধানিক আদালত: বাংলাদেশ ও ভারত থেকে শিক্ষা’ শীর্ষক কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

 

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ক্ষমতার সঙ্গে দায়িত্ব ওতপ্রোতভাবে জড়িত। দায়িত্ব পালনের জন্য ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে। আবার ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে এবং ক্ষমতার যাতে অপব্যবহার না হয় সেদিকে কঠোরভাবে খেয়াল রাখতে হবে।

বিচারকদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, দেশ, জনগণ ও সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি আশা করেন, বিচারপ্রার্থীরা অত্যন্ত কম খরচে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে ন্যায় বিচার পাবেন এবং বিচারকগণ তাদের মেধা ও মননশীলতার মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবেন।

দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বিচার বিভাগকে শামিল হতে হবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকার বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা, দক্ষতা এবং জবাবদিহি নিশ্চিতের জন্য দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বাংলাদেশ এবং ভারত দক্ষিণ এশিয়ার দুটি বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্রের উন্নয়ন ও সাংবিধানিক  ধারাবাহিকতা রক্ষায় তাদের নিজ নিজ যাত্রায় অনন্য পথ অতিক্রম করেছে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এবং ভারত উভয় দেশই এমন দৃষ্টান্ত প্রত্যক্ষ করেছে যেখানে বিচার বিভাগ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায়, পরিবেশগত টেকসই উন্নয়ন এবং সুশাসনের নীতিগুলোকে সমুন্নত রাখতে হস্তক্ষেপ করেছে।

তিনি মত দেন, দুই দেশের বিচার বিভাগ, বিচারক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বিনিময়ের মাধ্যমে উভয় দেশের বিচার বিভাগ, বিচারক ও জনগণ উপকৃত হতে পারে।

বাংলাদেশ ও ভারতের সাংবিধানিক আদালতগুলোকে মামলা জট নিরসন, ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার এবং বিচারিক জবাবদিহিতার মতো বিষয়গুলোতে মনোযোগ দেওয়ার পাশাপাশি বিচার বিভাগের উন্নয়নে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলেন রাষ্ট্রপতি।

সাহাবুদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সাংবিধানিক আদালতগুলোকে ন্যায়বিচারের প্রবেশ অধিকার এবং বিচারের জবাবদিহিতার মতো বিষয়গুলোতে মনোযোগ দেওয়ার পাশাপাশি বিচার বিভাগের উন্নয়নের সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।

তিনি বলেন, এই আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে ভারতের প্রধান বিচারপতি ড.ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড় উপস্থিত হয়ে সম্মেলনকে আন্তর্জাতিক বহুমাত্রিকতা দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ও কলকাতা হাইকোর্টের  বিচারপতিসহ অন্যান্য সকল অতিথিদের স্বাগত জানান।

মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।

বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, ভারতের প্রধান বিচারপতি ড. ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড়, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক,  বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির এবং আপিল বিভাগের বিচারপতি বোরহান উদ্দিন বক্তব্য রাখেন।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিগণ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিগণ, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ও কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিগণ, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ, সংসদ সদস্য ও বিজ্ঞ আইনজীবীরা।

বাংলাদেশ সময়: ২১১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৪
এমইউএম/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।