ঢাকা: রাজধানীতে দিনে সবচেয়ে বেশি শব্দদূষণ হয় বাংলামোটরে এবং রাতে সবচেয়ে বেশি লালবাগে।
বাংলামোটর এলাকায় দিবাকালীন (সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা) সবচেয়ে বেশি শব্দ থাকে।
সোমবার (৪ মার্চ) রাজধানীর ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে ‘ঢাকা মহানগরীতে শব্দদূষণের বর্তমান চিত্র ও করণীয়’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য তুলে ধরেন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন আন্দোলনের (পরিজা) সভাপতি প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান।
তিনি জানান, গত দুই মাসে ঢাকা মহানগরীর ৪৫টি এলাকায় দিবা ও রাত্রীকালীন শব্দের মাত্রা পরিমাপ করা হয়েছে। জরিপকৃত এলাকাগুলোকে নীরব, আবাসিক, মিশ্র ও বাণিজ্যিক এলাকায় ভাগ করে নেওয়া হয়েছে।
জরিপের ফল তুলে ধরে পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত পরিচালক ও পরিজা’র সভাপতি আবদুস সোবহান বলেন, নীরব এলাকায় দিবাকালীন শব্দের মাত্রা সবচেয়ে বেশি সচিবালয় এলাকায়, যা ১০১.৭ ডেসিবেল এবং রাত্রিকালীন শব্দের মাত্রা সবচেয়ে বেশি ধানমন্ডি ল্যাবএইড এলাকায়, যা ১০১.৫ ডেসিবেল। মিশ্র এলাকায় দিবাকালীন শব্দের মাত্রা সবচেয়ে বেশি বাংলামোটরে, যা ১০৩.৮ ডেসিবেল এবং রাত্রিকালীন শব্দের মাত্রা সবচেয়ে বেশি লালবাগ সেকশনে, যা ১০১.৫ ডেসিবেল।
তিনি আরও জানান, নীরব এলাকায় দিবাকালীন শব্দের মাত্রা ৮৪.৫ থেকে ১০১.৭ ডেসিবেল এবং রাত্রিকালীন ৯৬.৪ থেকে ১০১.৫ ডেসিবেল। আবাসিক এলাকায় দিবাকালীন ৮২.০ থেকে ৯১.০ ডেসিবেল এবং রাত্রিকালীন ৮৩.০ থেকে ৯১.৬ ডেসিবেল। মিশ্র এলাকায় দিবাকালীন ৯১.০ থেকে ১০১.৫ ডেসিবেল এবং রাত্রিকালীন ৮৯.০ থেকে ১০৩.৮ ডেসিবেল। বাণিজ্যিক এলাকায় দিবাকালীন শব্দের মাত্রা ৯২.০ থেকে ৯৭.০ ডেসিবেল এবং রাত্রিকালীন ৯১.০ থেকে ৯৯.০ ডেসিবেল।
আবদুস সোবহান বলেন, বাংলামোটরে শব্দের মাত্রা ১০৩.৮ ডেসিবেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শব্দের মাত্রা ৮৬.০০ থেকে ৯৪.০০ ডেসিবেল। সচিবালয় এলাকায় শব্দের মাত্রা ৯৬.০০ থেকে ১০১.৭ ডেসিবেল।
সভায় জনস্বাস্থ্য বিষেষজ্ঞ ও ডাকসুর সাবেক জিএস ডা. মোশতাক হোসেন বলেন, শব্দ সরাসরি স্বাস্থ্যকে আঘাত করছে। এটা আমাদের বোধশক্তি নষ্ট করে দিচ্ছে। শব্দের মাত্রা যদি অনেক বেশি হয়, তাহলে শুধু শ্রবণের ক্ষতি না, উচ্চরক্তচাপ থেকে শুরু করে হৃদরোগের ঝুঁকি পর্যন্ত তৈরি হতে পারে। মানুষ বা যেকোন প্রাণী যখন ক্রমাগত স্ট্রেসে থাকে তখন তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
রাজধানী ঢাকা বর্তমানে বাসযোগ্য অযোগ্য নগরে পরিণত হয়েছে জানিয়ে নগর গবেষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই নগর কেন এতটা অবসবাসযোগ্য আমার বোধগম্য হয় না। মিরপুরে রাত ২-৩টা পর্যন্ত ট্রাক থেকে অবকাঠামো নির্মাণসামগ্রী রাস্তায় প্রচণ্ড শব্দে ফেলা হয়। যেকোন সংকটের কথা বললেই শোনা যায় সরকারের জনবলের ঘাটতি।
পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন আন্দোলনের (পরিজা) সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বলের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি ক্যামেলিয়া চৌধুরী, আমির হাসান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০২৪
ইএসএস/এমজেএফ