নীলফামারী: মৌসুমে আলুর ব্যাপক চাহিদা। তর তর করে দাম বেড়ে যাওয়ায় ফুরফুরে মেজাজে আলু চাষিরা।
প্রতিদিনই নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের কোথাও না কোথাও আলু চুরি হচ্ছে। ফলে এ বছর আলুতে লাভ হলেও পাহারার জন্য আলাদা টাকা গুণতে হচ্ছে কৃষককে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গেল বছর এই মৌসুমে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ১১ টাকা কেজিতে। সেসময় পাইকার ও আলু ব্যবসায়ীরা কম দামে আলু কিনে হিমাগার ভরে রাখতেন। পরে সেই আলু প্রায় ৫০ টাকা কেজি দরে বেচে পাইকার ও আলু ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও আলু চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হন।
বর্তমানে এই জনপদে আলু তোলার মৌসুম চলছে। এই মৌসুমে প্রতিকেজি আলু ২৫/২৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে পাইকার ও আলু ব্যবসায়ীরা সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ক্ষেতেই আলু কিনে কোল্ড স্টোরে পাঠাচ্ছেন। মজুদ গড়ে তোলা ও আলু কেনার প্রতিযোগিতায় আলুর দাম বেড়েই চলেছে। মৌসুমি ব্যবসায়ী ছাড়াও অনেকেই আলু কিনছেন। কেউ কেউ আলু কেনার জন্য লোক নিয়োগ করেছেন এই জনপদে।
সৈয়দপুরের আলু ব্যবসায়ী ইমরান জানান, এ বছর ২৪ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে আলু কিনেছেন প্রায় ৫০০ বস্তা। আরও কিনবেন। প্রতিবছর এই আলু কিনে লাভবান হচ্ছেন তিনি। তিনি বলেন, কৃষকদের কাছ থেকে আলু কেনার জন্য অগ্রিম টাকা দিয়েছি। এতে দাম কিছুটা কম পড়বে।
সৈয়দপুরের কামারপুকুর ইউনিয়নের দলুয়ার কৃষক আমিমুল রেহসান জানান, এক বিঘা (৬০ শতাংশ) জমিতে আলু আবাদ করে খরচ পড়েছে ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে আলু বীজ, সার, সেচ, কীটনাশক ও নিড়ানি, আলু তোলা খরচসহ অন্যান্য খরচ রয়েছে। প্রতিবিঘায় ১০০ থেকে ১১০ বস্তা (৬০ কেজি বস্তা) আলু মিলছে।
এবার দামের কারণে কিছুটা লাভে রয়েছি। তিনি বলেন, এ বছর আমি ৫ বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করে সব আলু কোল্ড স্টোরে রেখেছি। সেইসঙ্গে আরও আলু কিনে হিমাগারে সংরক্ষণ করেছি।
সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষণপুর চড়কাপাড়া গ্রামের কৃষক জুয়েল আহমেদ জানান, আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় তার ক্ষেতের তিন শতক জমির জমির আলু চোরেরা নিয়ে গেছে। তিনি আলুর জমিতে থুরা (ডেরা) বসিয়ে পাহারাদার রেখেছেন যেন জমির বাকি আলু চুরি না যায়।
চুরির আশঙ্কায় উপজেলার কামারপুকুর দলুয়া চৌধুরীপাড়ার কৃষক আব্দুর রহিম, গোলজার রহমান আলু ক্ষেতে ডেরা বসিয়ে পাহারা দিচ্ছেন যাতে ক্ষেতের আলু চুরি না যায়।
উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের আলু চাষি আব্দুস সামাদের পাঁচ শতক জমির আলু চুরি গেছে এরই মধ্যে।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষণ জানান, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের জমি আলু চাষের উপযোগী। ফলে প্রতিবছর আলুর আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন আলু চাষিরা। তিনি বলেন, এবারে শীত দীর্ঘায়িত হওয়ায় কৃষকদের ছত্রাকনাশক ওষুধ বেশি স্প্রে করতে হয়েছে। তবে দামের কারণে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০২৪
আরএ