ঢাকা, বুধবার, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রাজশাহীতে কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মানববন্ধন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২৪
রাজশাহীতে কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মানববন্ধন

রাজশাহী: নিম্নমানের কাজের প্রতিবাদ করায় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুল হামিদ সরকার টেকন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও মারমুখী আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে ও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।

রোববার (১৭ মার্চ) সকাল ১০টা থেকে সোয়া ১১টা পর্যন্ত মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

এর আগে একই দাবিতে শনিবার বিকেলে সাগরপাড়ায় নবনির্মিত রাজশাহী মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে তারা সংবাদ সম্মেলন করেন।  

ওই সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনটি ঠিকাদার হিসেবে নির্মাণ করেছেন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল হামিদ সরকার টেকন। তিনি কাজ করেছেন অত্যন্ত নিম্নমানের। সিঁড়ির টাইলস এখনই নড়বড় করছে। যেকোনো সময় টাইলস খসে মুক্তিযোদ্ধারা পড়ে আহত হবেন।

এছাড়া শৌচাগারে নিম্নমানের ফিটিংস ব্যবহার করা হয়েছে। বৈদ্যুতিক সুইচগুলোও নিম্নমানের। চাপ দিলে ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে। এতে যেকোনো সময় মুক্তিযোদ্ধারা বিদ্যুতায়িত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মহানগরের সাবেক কমান্ডার আবদুল মান্নান ঠিকাদার আবদুল হামিদ সরকার টেকনকে ফোন করে এগুলো সংস্কার করে দেওয়ার অনুরোধ জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত শুক্রবার (১৫ মার্চ) আবদুল হামিদ সরকার টেকন মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে আসেন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মারমুখী আচরণ করেন।

এরই প্রতিবাদে রোববার বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের রাজশাহী মহানগর ইউনিট  মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে।

মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সভাপতি ডা. আবদুল মান্নান। পরিচালনা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাসার।

এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে থেকে মোহাম্মদ আলী কামাল, নওশের আলী, মুস্তাফিজুর রহমান খান আলম, সাইদুল ইসলাম, মতিউর রহমান, খন্দকার আবুল হাসান, নজরুল ইসলামসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।

মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজটি পেয়েছিল অন্য একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেই প্রতিষ্ঠানকে তাড়িয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল হামিদ সরকার নিজেই কাজটি নিয়েছেন। তিনি কাজ করেছেন অত্যন্ত নিম্নমানের। এর প্রতিবাদ করায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গেই মারমুখী আচরণ করেছেন। এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার তদন্ত হতে হবে।

তারা ঘটনাটি তদন্তের জন্য সিটি করপোরেশনের মেয়র, বিভাগীয় কমিশনার, রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কাছে দাবি জানান।

একইসঙ্গে নিম্নমানের কাজের বিষয়টিও তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। তা না হলে রাজশাহীর বীর মুক্তিযোদ্ধারা আবারও কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

এদিকে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রায় ২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সাড়ে তিনতলা বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সটি নির্মাণ করে। প্রায় ১১ মাস আগে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এতে অর্থায়ন করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। বাস্তবায়ন করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর আবদুল হামিদ সরকার টেকন বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবদুল মান্নানের সঙ্গে তার পারিবারিক সম্পর্ক। নির্মাণ কাজে কোথাও কোনো ত্রুটি থাকলে তাকে ভালো করে বললেই হতো। কিন্তু তিনি সেভাবে বলেননি। আর সেটাও বিষয় নয়। ঘটনার দিন তিনি গিয়ে তাদের ভবনের জন্য পাহারাদার নিয়োগ করার জন্য বলেন। আর বলেন, আমি কি মানুষ না? এভাবে কথা ফোন করে বলেন?' এতেই তারা ক্ষুব্ধ হয়েছেন।

তিনি বলেন, এলজিইডি থেকে বড় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটা পেয়েছিল। তারা অনেক কাজ করে। তাই এ কাজটা না করে তাকে দিয়ে চলে গেছে। তিনি তাই কাজটা করেছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধারা খুবই সম্মানিত ও শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। তাই কাজটা তিনি সুন্দরভাবেই করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, কমপ্লেক্সের জমি বরাদ্দ পেতে এলাকার কাউন্সিলর হিসেবে তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে ছিলেন। এমন ছোট ঘটনা নিয়ে আজ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন দুঃখজনক।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২৪
এসএস/জেএইচ 


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।