ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শিক্ষার নামে শিশুদের ওপর অতিরিক্ত চাপ না দিতে আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২৪
শিক্ষার নামে শিশুদের ওপর অতিরিক্ত চাপ না দিতে আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ঢাকা: শিক্ষার নামে শিশুদের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি না করে তারা যেন খেলাধুলা ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শিক্ষা নিতে পারে তা নিশ্চিত করতে অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (১৭ মার্চ) সকালে জাতির পিতার সমাধিসৌধ প্রাঙ্গণে ‘জাতির পিতার ১০৪তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস-২০২৪’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, লেখাপড়াটা খুবই দরকার, কিন্তু এই লেখাপড়ার নামে তাদের ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি করবেন না। আমরা এখন চাচ্ছি খেলাধুলা এবং নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়েই তারা তাদের লেখাপড়া শিখবে। যাতে তার ভেতরের সুপ্ত, মেধা, বিকাশের সুযোগ হয়। শিশুকাল থেকেই সততা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার শিক্ষা, জাতীয় দিবসগুলো সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান এবং রাস্তায় চলার নিয়ম-কানুন তথা ট্র্যাফিক আইন সম্পর্কে সম্যক ধারণা ছোটবেলা থেকেই দেওয়ার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকের শিশুদের জন্য এটাই আমার অনুরোধ, গুরুজনদের মানতে হবে, শিক্ষককে মানতে হবে, বাবা-মায়ের কথা শুনে চলতে হবে, বাবা-মায়ের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকতে হবে। তাহলে কেউ বিপথে যেতে পারবে না।

তিনি শিক্ষক-অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতির থেকে দূরে থাকার জন্য ছোটবেলা থেকেই সততার শিক্ষা দিতে হবে। একইসঙ্গে গান-বাজনা ও লেখাপড়া, ছবি আঁকা থেকে শুরু করে ধর্মীয় শিক্ষাসহ সব ধরনের কারিকুলামের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ত করতে হবে।

সুপ্ত, প্রতিভার বিকাশ এবং মেধা ও মননের উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যেই তার সরকার কারিকুলাম তৈরি করে শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, মর্মে অভিমত ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অভিভাবক ও শিক্ষক আপনাদের কাছেও আমার এই অনুরোধ থাকবে, ছোটবেলা থেকেই তাদের ভেতরে যেন মানবিক গুণগুলো গড়ে উঠতে পারে সেদিকগুলো যেমন দেখবেন, তেমনি এই শিশুদের ভেতরে যে সুপ্ত, মেধা, রয়েছে সে সুপ্ত মেধা ও মনন বিকাশের সুযোগ যেন তারা পেতে পারে সেদিকেও লক্ষ্য রাখবেন।  

তিনি বলেন, এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন তো শিশুরা বিশ্বটাকে চোখের সামনে দেখতে পায়। কাজেই ক্লাসে শুধু বই পড়া নয়, চোখে দেখেও যেন তারা শিখতে পারে। আর আজকের শিশুরাই হবে আগামীর ‘স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট নাগরিক’। আর সেটাই আমরা চাই।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি চাই আমাদের দেশের প্রতিটি শিশু সুন্দর ও নিরাপদ জীবন পাক, তারা উন্নত জীবন পাক সেটাই আমার কাম্য।

জাতির পিতার ছোট মেয়ে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন (রীমি) বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক স্বাগত বক্তৃতা করেন। শিশু বক্তা তায়্যেবা তাসনীমও স্বাগত বক্তৃতা করে। অপর শিশু পিয়াসা জামিল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করে। আব্দুর রহমান এবং লামিয়াতুল বারী শিশুদেরও এই অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধু ও শিশুর অধিকার শীর্ষক একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজিত সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।

এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলার ১০৪ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে মোট পাঁচ লাখ ২০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়। প্রত্যেক শিক্ষার্থী পাঁচ হাজার করে টাকা পেয়েছে। নির্বাচিত দুই শিক্ষার্থী টুঙ্গিপাড়া উপজেলার মুশফিকা জান্নাতী ও কোটালীপাড়া উপজেলার আরাফাত শেখ প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২৪
এমইউএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।