ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে বগুড়ার দর্জিপাড়ায়

কাওছার উল্লাহ আরিফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২৪
ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে বগুড়ার দর্জিপাড়ায়

বগুড়া: বগুড়ায় ঈদকে সামনে রেখে নতুন পোশাক তৈরিতে দর্জিপাড়ায় ব্যস্ত সময় পার করছে দর্জি ও কাপড় বিক্রেতারা। পোশাক তৈরির জন্য দিন-রাত ব্যস্ত দর্জিপাড়ার কারিগররা।

প্রতি বছর এ সময়টাতে দর্জিপাড়ার মানুষ নতুন পোশাক বানাতে দিনরাত ব্যস্ত থাকে। কাজের চাপে দর্জিপাড়ায় দর্জিদের ঘুম হারাম হয়ে যায়। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পোশাক তৈরির কারখানায়-কারখানায় চলে ঘুম-বিশ্রামহীন শ্রমিকের কাজ।

শনিবার (০৬ এপ্রিল) দুপুরে বগুড়া শহরের একাধিক দর্জি-প্রতিষ্ঠান ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব জানা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, মেশিনে বসে সমান তালে হাত-পা চালিয়ে যাচ্ছেন কারখানাগুলোর কারিগররা। দর্জিপাড়ার পাশ দিয়েই গেলেই সেটা বোঝা যায়। সেলাই মেশিন আর কাঁচির শব্দ বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। শব্দই বলে দেয় ঈদের পোশাক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগরেরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, পছন্দের এসব পোশাক চাঁদ রাতের আগেই ক্রেতা সাধারণকে ডেলিভারির স্লিপ দেখে দেখে বুঝিয়ে দিতে হবে। তবেই স্বস্তি। নইলে মালিকের বকুনি আর ক্রেতার ধমকানিতে মাটি হয়ে যাবে তাদের ঈদ। তাই এখন থেকেই রাত-দিন একাকার করে কাজ করে যাচ্ছেন তারা।

এদিকে শহরের নামিদামি প্রতিষ্ঠানগুলোয় অর্ডার নেওয়া ইতিমধ্যে বন্ধ করা হয়েছে। সাধারণত এসব প্রতিষ্ঠানে ১৫ রমজানের পর থেকে অর্ডার নেওয়া বন্ধ করা হয়। কিছু প্রতিষ্ঠানে এবার ২০ রমজান পর্যন্ত অর্ডার নেওয়া চলমান ছিল।

বগুড়ায় পুরুষদের পোশাক তৈরি করা হয়, এমন প্রায় শতাধিক দর্জির দোকান রয়েছে। এছাড়া শহরের বাইরের প্রায় সব এলাকায় ও বিভিন্ন বাড়িতে রয়েছে দর্জি দোকান। সেই সংখ্যাটা একেবারে কম নয়। করোনার প্রভাবে ২০২০ ও ২১ সাল এ দু’বছর ঈদে তেমন কাজ ছিল না। ২২ ও ২৩ সালেও কাজ তুলনামূলক বেশি ছিল না। এবার কাজের ব্যস্ততা ফিরে পেয়েছে কারিগররা।  

পোশাক কারিগর ইয়াসিন আলী, জেল্লাল রহমান, শরাফত মিয়া বাংলানিউজকে জানান, ঈদ সন্নিকটে আসায় তাদের হাত ফাঁকা নেই, চোখে ঘুম থাকলেও সেটি হারাম হয়ে গেছে। তাদের দম ফেলার ফুরসরতটুকুও যেন নেই। সবার হাতে শুধু কাজ আর কাজ। হাত-পা সমান তালে চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। তবু কাজ শেষ করতে পারছেন না। শুধু কাজ শেষ করলেই হবে না। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের সুনাম বা গুড উইল রয়েছে। সে অনুযায়ী ক্রেতার পছন্দের পোশাক তৈরি করতে হবে। মান ও সুনাম বজায় রাখতে হবে মন্তব্য তাদের।

শহরের সুনামধন্য প্রতিষ্ঠান ডায়মন্ড টেইলার্সের ব্যবস্থাপক মো. মতিউর রহমান মতি বাংলানিউজকে জানান, প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব স্বকীয়তা ও মান বজায় রেখে কারিগরেরা পোশাক বানিয়ে থাকেন। সবাই চেষ্টা করেন সেরা মানের পোশাক তৈরি করতে। যেন ক্রেতা সাধারণ পরবর্তী সময়েও পোশাক বানাতে তাদের প্রতিষ্ঠানেই আসেন।  

এ বছর ঈদে ক্রেতারা রেডিমেট পোশাক কেনার দিকে ঝুঁকলেও টেইলার্সগুলো পাল্লা দিয়ে চলছে।

তিনি আরও জানান, আগে প্রায় প্রতি বছর পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই কারিগররা মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন করতেন। গত কয়েক বছর ধরে এ আন্দোলন না থাকলেও আগেই তারা তাদের মজুরি বৃদ্ধির চুক্তি করে নেন। আন্দোলনের ফলে ঈদের মৌসুমে তারা সঠিক সময়ে পোশাক ডেলিভারি দিতে পারেন না। এ কারণে ১০ বা ১৫ রমজান থেকেই তারা অর্ডার নেওয়া বন্ধ রাখতে বাধ্য হন। বর্তমানে দিনে শার্ট ও প্যান্ট মিলে বড়জোর ৭০ পিস করে অর্ডার পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠান ভেদে শার্টের মজুরি নেওয়া হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা ও প্যান্টের মজুরি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০২৪
কেইউএ/এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।