ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বগুড়ায় জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা

কাওছার উল্লাহ আরিফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০২৪
বগুড়ায় জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা

বগুড়া: ঘনিয়ে আসছে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রধান উৎসব ঈদুল ফিতর। বাড়ছে বিপণিবিতানে ক্রেতাসমাগম।

সাধারণত বেশির ভাগ মানুষ ঈদ সামনে রেখেই নতুন পোশাক কিনে থাকেন। পবিত্র ঈদুল ফিতরেই সারা দেশের ছোট-বড় বিপণিবিতান, হাটবাজারের দোকানপাটে জামা-জুতা, শাড়ি-চুড়ির মতো হরেক রকম পণ্যের সবচেয়ে বড় রকমের বেচাকেনা হয়। নানা বয়সের নানা পেশার মানুষ বিপণিবিতানগুলোয় কেনাকাটায় ভিড় জমান।

শনিবার (০৬ এপ্রিল) বগুড়া শহরের নিউমার্কেটসহ অভিজাত বিপণিবিতানগুলো ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

পবিত্র মাহে রমজান পরিবার পরিজন নিয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতরের পালনের জন্য বগুড়ার ১২টি উপজেলার বিভিন্ন মার্কেটগুলোতে চলছে কেনাকাটার উৎসব। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ক্রেতারা তাদের সাধ ও সাধ্যের মধ্যে খুঁজছেন ঈদের পোশাক। গত বছরের তুলায় এবার ব্যবসা বেশ ভালো হবে বলেও মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। অপরদিকে উপজেলার বিভিন্ন মার্কেটের দর্জি টেইলার্স কারিগররা পাঞ্জাবি, ফতোয়া, শার্ট প্যান্ট তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রভাব পড়লেও মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে ঈদের কেনাকাটা।

সরেজমিনে শহরের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতারা পছন্দের পোশাক কিনতে ছুটছেন একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। তবে, ভিড় বেশি শহরের নিউমার্কেটে। আধুনিক শপিংমল ও ফ্যাশন হাউসগুলোতেও ভিড় বাড়ছে। ক্রেতা-বিক্রেতা কারো যেন দম ফেলার ফুরসত নেই। অল্প সময়ের মধ্যেই ঈদের কেনাকাটা সম্পন্ন করতে ব্যস্ত ক্রেতারা। দাম নিয়ে অতটা শক্ত মনোভাব দেখাচ্ছেন না বিক্রেতারা। অনেক ক্রেতা দামদরের চেয়ে পছন্দকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন বেশি। কোনো পোশাক পছন্দ হলেই আর দেরি নয়। দাম নিয়ে কোনো পক্ষই এ মুহূর্তে এসে অতটা দর কষাকষি করছেন না।

অন্যদিকে ঈদকে সামনে রেখে ফুটপাতের দোকানগুলোতেও এখন একদাম। এখানে দামদরের কোনো সুযোগ নেই। পছন্দ করতে পারলেই অত্যন্ত সহজে স্বল্প দামেই ক্রেতা পোশাক কিনতে পারছেন ক্রেতারা। ফুটপাতের এসব দোকানগুলোয় নিম্ন, মধ্য ও উচ্চবিত্ত পরিবারের নারী-পুরুষদের পোশাক কিনতে দেখা যায়।

শহরের রানার প্লাজা ও অভিজাত এলাকাখ্যাত জলেশ্বরীতলার বিপণিবিতানগুলোয় উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। তবে, দোকানগুলোয় পুরুষদের তুলনায় নারী ক্রেতার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এবার তরুণীদের ক্রেইজ হলো গাররা, গাউন, সাররা ড্রেস। উঠতি বয়সী তরুণী থেকে মধ্য বয়সের নারীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে আধুনিকমানের এই পোশাকগুলোর স্থান। এই পোশাকগুলো সর্বনিম্ন তিন হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে দোকানিরা জানান।  

এছাড়াও মহিলাদের পোশাকের মধ্যে থ্রি পিস, বোরকা, লেহেঙ্গা, হিজাব, স্কাপসহ সব ধরনের কাপড়ই ক্রেতারা কিনছেন। কেনাকাটায় শাড়ি বেচাকেনা থেমে নেই একদম। বিভিন্ন ধরনের শাড়ি কিনছেন ক্রেতারা।

এদিকে ক্রেতাদের অনেকেই মন্তব্য করেন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রভাব পড়েছে ঈদের বাজারে। অনেকেই দামের কারণে পছন্দের পোশাক কিনতে না পেরে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।

নিউ মার্কেটের দোকানি নুর আলম, রাশেদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বছরই রোজার শুরু থেকেই কমবেশি অনেকেই ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ঈদ সন্নিকটে আসায় বর্তমানে বিকিকিনি ভালোই হচ্ছে। ২০ রোজার পর থেকেই মার্কেটমুখী হতে শুরু করেন ক্রেতারা। ক্রেতাদের পছন্দকে প্রাধান্য দিয়ে শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পোশাকের আমদানি ঘটিয়ে থাকেন ব্যবসায়ীরা। এবারের ঈদের কেনাকাটায় নারীদের পছন্দের শীর্ষে ছিল বিভিন্ন দেশের আকর্ষণীয় থ্রি-পিস।

বিক্রেতা আবজাল হোসেন, হান্নান প্রাং জানান, অনেকেই তৈরি পোশাক ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু ঈদ সন্নিকটে আসায় হাতে সময় নেই। এক্ষেত্রে গার্মেন্টেসের তৈরি পোশাক ছাড়া আপাতত তাদের সামনে কোনো পথ নেই। এ কারণে রেডিমেড পোশাকের দোকানগুলোয় এই মুহূর্তে এসে জমে উঠেছে বেচা-বিক্রি। এবার মেয়েদের পছন্দে বাদ যায়নি বাহারি ডিজাইনের শাড়ি এবং ছেলেদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে বিভিন্ন ডিজাইনের পাঞ্জাবি, জিন্স প্যান্ট ও টি-শার্ট। পাশাপাশি দেশীয় কাপড়ের কদরও রয়েছে বেশ।

কেনাকাটা করতে আসা মীম চৌধুরী, তান্নি আকতার, আয়েশা জীম, সুমন আহম্মেদসহ কয়েকজন বাংলানিউজকে জানান, বিভিন্ন রেডিমেট কাপড় ও থ্রি-পিসের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি। তারা শহরের রানার প্লাজা ও জলেশ্বরীতলা এলাকায় পোশাকের বিভিন্ন শো-রুমে ঘুরে ঘুরে পছন্দ অনুযায়ী কেনাকাটা করছেন। তারা দু’জনই থ্রি-পিস, গাউন ও সাররা ড্রেস কিনেছেন। এখন লেডিস ব্যাগ ও পছন্দ মতো হিল জুতো কিনবেন। এখন কাপড় কিনে পোশাক বানিয়ে নেওয়ার মতো সময় হাতে নেই।

এদিকে ঈদকে সামনে রেখে শহরের নিউ মার্কেট, জলেশ্বরীতলার বিভিন্ন অভিজাত বিপণিবিতান, রেলওয়ে হকার্স মার্কেট, রেললাইন ও ফুটপাতের দোকানগুলোয় এখন শুধুই ক্রেতা সাধারণের ভিড়। গার্মেন্টস, কসমেটিকস, শাড়ি, জুতার দোকানগুলোতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। শেষ বেলায় এসে সবাইকে পছন্দ ও সাধ্যানুযায়ী নানা ধরনের পণ্য কিনতে হচ্ছে। এখন টেইলার্সগুলো থেকেও তৈরিকৃত কোর্ট, শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, ট্রাউজার ডেলিভারি শুরু হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০২৪
কেইউএ/এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।