ঢাকা (সাভার): দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে সাভারের উত্তরবঙ্গগামী বাসের স্ট্যান্ডগুলো। বিশেষ করে বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে হাজার হাজার যাত্রী অপেক্ষা করছেন যানবাহনের জন্য।
কেউবা অনেক কষ্টে যানবাহনে উঠে রওনা করছেন গন্তব্যে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা অনেক কম বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।
সোমবার (৮ এপ্রিল) বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা-আরিচা, নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের নবীনগর, বাইপাইল, শ্রীপুর, জিরানী বাজার ঘুরে দেখা যায়, জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে স্ট্যান্ডগুলো। একদিনই অনেক পোশাক কারখানা ছুটি হওয়ায় বিশালসংখ্যক মানুষ বাড়ি ফিরতে বাসস্ট্যান্ডে উপস্থিত হয়েছে।
আশুলিয়ার কাঠগড়া থেকে একই কারখানার প্রায় ৩০-৪০ জন শ্রমিক রাজশাহী যাওয়ার জন্য এসেছেন বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে। তাদের মধ্যে জোবায়ের আলী নামে একজন বাংলানিউজকে বলেন, আজ একসঙ্গে অনেক পোশাক কারখানা ছুটি হয়েছে। আমাদের আশপাশের প্রায় ১৫টি কারখানা ছুটি হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ যাত্রী উত্তরবঙ্গের। সবাই একসঙ্গে বাসস্ট্যান্ডে এসেছেন। স্ট্যান্ডে শুধু যাত্রী আর যাত্রী। হঠাৎ যাত্রী বেড়ে যাওয়ায় সংকট দেখা দিয়েছে যানবাহনের। আমরা অনেকে এখনো গাড়ি পাইনি। আবার অনেকেই হুড়োহুড়ি করে গাড়িতে উঠেছেন। দেখছি বাড়ি যেতে যুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।
লায়লা নামে আরেক শ্রমিক বাংলানিউজকে বলেন, একসঙ্গে এত যাত্রী কোথা থেকে এলো, বুঝলাম না। আধাঘণ্টার মধ্যেই যাত্রীতে বাসস্ট্যান্ড ভরে গেছে। যাত্রীর তুলনায় যানবাহন অনেক কম। ফলে অনেক যাত্রী দাঁড়িয়ে আছেন। যারা আসছেন, তারা যদি গাড়ি পেতেন, এত যাত্রী জমতো না। যত সময় যাচ্ছে ততো যাত্রী বাড়ছে।
মৌমিতা পরিবহনের চালক হেলাল বলেন, সড়কে দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে সিটি সার্ভিস বাসও যুক্ত হয়েছে। হঠাৎ যাত্রী বেড়ে যাওয়ায় যানবাহনের সংকট মনে হচ্ছে। সড়কে পর্যাপ্ত যানবাহন রয়েছে। তবে যাত্রীও অনেক। আমরা আগে কখনো এত যাত্রী একসঙ্গে দেখিনি। যাত্রীর চাপ ধীরে ধীরে আরও বাড়তে পারে।
স্থানীয় চা দোকানি মাসুদ বাংলানিউজকে বলেন, আমি এই স্ট্যান্ডে প্রায় ১০ বছর ধরে চা বিক্রি করি। গত ১০ বছরে এত যাত্রী একসঙ্গে দেখিনি। যাত্রীর অনেক চাপ, সে তুলনায় বাসের সংখ্যা অনেক কম। যাত্রী আসছে আর আসছেই। যে সংখ্যক যাত্রী আসছেন, সে সংখ্যক যাত্রী স্ট্যান্ড থেকে যেতে পারছেন না। এ কারণে যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে গেছে।
সাভার হাইওয়ে থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) আইয়ুব আলী বাংলানিউজকে বলেন, আজ বেশিরভাগ পোশাক কারখানা ছুটি হয়েছে। এ কারণে যাত্রীর চাপ বেড়েছে। পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন।
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান বলেন, অনেক পোশাক কারখানা একসঙ্গে ছুটি হওয়ায় যাত্রীর চাপ বেড়েছে। এখানে আমাদের প্রায় এক হাজার ২০০ পুলিশ সদস্য কাজ করছেন। সেজন্য এখন পর্যন্ত কোনো যানজট নেই। আশা করছি এবারের ঈদ আনন্দ যাত্রাপথেই আমরা দিতে পারব।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০২৪
আরএইচ