ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

এমপির সামনেই পুলিশ ফাঁড়িতে যুবলীগের দুই নেতার ওপর হামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৪
এমপির সামনেই পুলিশ ফাঁড়িতে যুবলীগের দুই নেতার ওপর হামলা

বগুড়া: বগুড়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সদর আসনের (বগুড়া-৬) সরকার দলীয় এমপি রাগেবুল আহসান রিপুর উপস্থিতিতেই সদর পুলিশ ফাঁড়ির ভেতর পুলিশের সামনে দুই যুবলীগ নেতার ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে।

হামলায় আহত দুই যুবলীগ নেতা হলেন- বগুড়া জেলা যুবলীগের উপ-প্রচার সম্পাদক জিয়াদুস শরিফ পরাগ ও জেলা যুবলীগের সদস্য আদনান।

এর মধ্যে যুবলীগ নেতা পরাগ বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

রোববার (০৭ এপ্রিল) রাত ১১টায় শহরের নবাববাড়ী রোডস্থ ফাঁড়িতে যুবলীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

এদিকে যুবলীগ নেতার ওপর হামলার প্রতিবাদে সোমবার (০৮ এপ্রিল) বিকেল ৫টায় শহরের সাতমাথায় মানববন্ধন করে বগুড়া শহর যুবলীগ। তারা হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য ৭২ ঘণ্টা আল্টিমেটাম দেন।

জানা গেছে, রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাজাহানপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রঞ্জু শহরে সাতমাথায় জিলা স্কুলের পাশ থেকে মুজিবমঞ্চের দিকে আসার সময় একটি মোটরসাইকেল তাকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি পরে যান। মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা পিরব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসিফ মাহমুদ মিল্টনের কলেজ পড়ুয়া ছেলে আবির। মোটরসাইকেলচালক ক্ষমা চাইলে ঘটনাটি তাৎক্ষণিক মিটে যায়। পরে আবিরের সঙ্গে সদর আসনের এমপির ছেলে প্রতীক আহসান ৩০ থেকে ৪০ জনকে নিয়ে ঘটনাস্থলে এলে পুনরায় উত্তেজনা দেখা দেয়। এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত যুবলীগ নেতারা থামাতে গেলে তাদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয়। সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ দুই পক্ষকে শান্ত করেন।  

পরে পুলিশ বিষয়টি সমাধানের জন্য ছাত্রলীগ নেতা রঞ্জু, যুবলীগ নেতা পরাগ এবং আদনানসহ তাদের সঙ্গে থাকা চাকরিজীবী রঞ্জন নামে আরেক যুবক এবং অন্য পক্ষের আবির ও এমপির ছেলেসহ ইউপি চেয়ারম্যান মিল্টনকে সদর ফাঁড়িতে ডেকে নিয়ে যান।

ফাঁড়িতে বিষয়টি প্রায় সমাধানও হয়েছিল। কিন্তু রাত ১১টার দিকে বগুড়া সদর আসনের এমপি দলবলসহ সেখানে গেলে পুরো পরিস্থিতি পাল্টে যায়।

বগুড়া সদর ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. সুজন মিয়া জানান, তাদের ফাঁড়ির ভেতর অফিস কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। ঝামেলা এড়াতে গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

যুবলীগ নেতা পরাগ জানান, এমপি ফাঁড়িতে আসছেন জেনে তিনি তাকে রিসিভ করতে এবং তাকে মূল ঘটনা জানাতে ফাঁড়ির অফিস কক্ষ থেকে বের হন। সঙ্গে সঙ্গে তার ওপর হামলা করে এমপির সঙ্গে আসা লোকজন। এরপর এমপির সামনেই তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়। এসময় জেলা যুবলীগের সদস্য আদনানকেও মারধর করা হয়।

বগুড়া জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মাইসুল তোফায়েল কোয়েল জানান, সদর আসনের এমপির উপস্থিতিতে যুবলীগ নেতাদের ওপর হামলা হয়েছে। এটি ন্যাক্কারজনক। আমরা হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছি। এর মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

বগুড়া সদর আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু জানান, পরাগ গত নির্বাচনে নৌকার সক্রিয় কর্মী ছিল। এটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। যা ঘটেছে, আমার অজ্ঞাতসারে ঘটেছে। ঘটনাটি দুঃখজনক ৷

হামলার প্রতিবাদে শহর যুবলীগের সভাপতি মাহফুজুল আলম জয়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক উদয় কুমার বর্মনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মাইসুল তোফায়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফ হোসেন, দপ্তর সম্পাদক জাকারিয়া আদিল প্রমুখ। বক্তারা যুবলীগ নেতার ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২৪
কেইউএ/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।