বরিশাল: বাংলা বছরের নতুন দিনটি বরিশালে পালন করা হবে রঙে-রূপে-নৃত্যে-ছন্দে। এরই মধ্যে দিনটিকে ঘিরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা সাংস্কৃতিক আয়োজনের ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।
সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর শীর্ষ সংগঠকদের দাবি, ঈদের পরপরই এই উৎসব বিগত দিনগুলোর থেকে বেশি রঙিন হবে, সেই সঙ্গে প্রচুর লোকেরও সমাগম ঘটবে। বিশেষ করে বর্ষবরণের সবচেয়ে বৃহৎ জমায়েত হবে চারুকলার উদ্যোগে রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখে সকাল ৮টা ২০ মিনিটে শুরু হতে যাওয়া মঙ্গল শোভাযাত্রায়।
মঙ্গল শোভাযাত্রা ১৪৩১ উদযাপন পর্ষদের সমন্বয়ক দুর্জয় সিংহ ও কিশোর রায় আকাশ জানান, প্রভাতী অনুষ্ঠান, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, মুক্তিযোদ্ধা ও গুণীজন সম্মাননার পর ব্রজমোহন বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে রাখি পরিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা-১৪৩১ এর শুভ সূচনা করা হবে সকাল ৮টা ২০ মিনিটে। যা নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে অশ্বিনী কুমার হল প্রাঙ্গণে এসে শেষ হবে। পরে সেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্তৃক জাতীয় পতাকা হস্তান্তরের মাধ্যমে মঙ্গল শোভযাত্রার পথপরিক্রমার সমাপ্তি ঘটবে।
পরে সিটি কলেজ প্রাঙ্গণে চারুকলা বরিশালের আয়োজনে চিত্রাঙ্কন, কুইজ প্রতিযোগিতা, লোকসংস্কৃতি প্রদর্শনী এবং বিকেলে একইস্থানে আবৃত্তি, সংগীত, নৃত্য পরিবেশন ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হবে। যেখানে চারুকলা বরিশালের পাশাপাশি সংগীতাঞ্জলি, নজরুল সাংস্কৃতিক জোট, সুর লহরী সংগীত বিদ্যালয়, প্রান্তিক সংগীত বিদ্যালয় সার্বিক সহযোগিতা করবে।
বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর বরিশাল জেলা সংসদের সভাপতি সাইফুর রহমান মিরণ জানান, বরিশাল নাটকের সহযোগিতায় পহেলা বৈশাখ সকাল সাড়ে ৬টায় উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর বরিশাল জেলা সংসদের উদ্যোগে নগরের ব্রজমোহন বিদ্যালয় (বি.এম স্কুল) প্রাঙ্গণে প্রভাতী অনুষ্ঠান শুরু হবে। এরপর সকাল ১০টায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।
জানা গেছে, মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতিতে চারুকলার শিল্পী ও শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের মুকুট, মুখোশ, পাখা, পালকি, ঘোড়া, হাতি নৌকাসহ বিভিন্ন লোকজ উপকরণ তৈরি করছেন।
এদিকে বাংলা বর্ষষবরণ উপলক্ষে শব্দাবলী গ্রুপ থিয়েটার শহীদ মিনারে তিন দিনের বৈশাখী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে, সেই সঙ্গে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বরিশাল সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গণ থেকে বের করা হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা।
অপরদিকে পহেলা বৈশাখ সকাল ৭টায় অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে শিশু সংগঠন খেলাঘর শিশু সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
এসব আয়োজনকে ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। শনিবার (১৩ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার জিহাদুল কবির জানান, শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে।
তিনি জানান, সদ্য স্থাপিত ইন্টিগ্রেটেড কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের মাধ্যমে বরিশাল নগরের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি শুধু পহেলা বৈশাখ উদযাপনে নিরাপত্তা বিধানের উদ্দেশ্যে বিএম স্কুল মাঠসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাসমূহে পুলিশের সাব-কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে সংযুক্ত ‘সাময়িক’ ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২৪
এমএস/এইচএ/