ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ভেবেছিলাম রায়ে সন্তুষ্ট হয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন থেকে সরে যাবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০০ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২৪
ভেবেছিলাম রায়ে সন্তুষ্ট হয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন থেকে সরে যাবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বগুড়া: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, কোটা নিয়ে রায়ের পর আমরা ভেবেছিলাম, কোটা আন্দোলনকারীরা বিচারপতি ও সরকারকে ধন্যবাদ দিয়ে বলবে যে আমরা সন্তুষ্ট, আমরা আন্দোলন থেকে ফিরে গেলাম। কিন্তু এরই মধ্যে অনেক জল গড়িয়েছে৷ আপনারা দেখেছেন, এ কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করে যারা বাংলাদেশ চায়নি, যারা জঙ্গির উত্থান ঘটিয়েছিল, সেই দলগুলো, যারা সব সময়ই বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর দেশে পরিচিত করতে চেয়েছিল, সেই সবগুলো দল একত্র হয়ে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে।

বগুড়াও সেখান থেকে বাদ যায়নি, যোগ করেন মন্ত্রী।  

বগুড়ায় কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত আওয়ামী লীগ অফিস, জাসদের অফিস, থানা ভবন, ভূমি অফিস ও জাজেস কমপ্লেক্সে ঘুরে দেখেছেন মন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বিকেলে গেল কয়েকদিনের সহিংসতায় বগুড়ার ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন তিনি।

এরপর বগুড়া জেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধা, আমাদের ছেলে মেয়েদের বয়স কিন্তু ৩০ বছর পার হয়ে গেছে। কাজেই মুক্তিযোদ্ধার কোটা আর নেই, মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো কোটা এখন নেই। এখন ৯৮ ভাগই হলো মেধার।  

বগুড়ায় সহিংসতার ব্যাপারে তিনি বলেন, বগুড়ায় আমরা দেখলাম মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। অথচ এখানে মুক্তিযোদ্ধারা এ ইস্যুতে মাঠেই নামেননি। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির ম্যুরালের ওপরে তাদের রাগ-ক্ষোভ। যারা দেশ চায়নি, যারা স্বাধীনতা চায়নি, তাদেরই এমন রাগ-ক্ষোভ থাকার কথা, আমরা সেটাই লক্ষ্য করেছি।  

নরসিংদীতে আর এক কাণ্ড দেখলাম, সেখানে বিচারের জন্য জঙ্গিদের আমরা ধরে রেখেছিলাম। সেই কারাগার ভেঙে তাদের বের করে নিয়ে গেছে। তাদের আসল উদ্দেশ্য ছিল, দেশকে কীভাবে অকার্যকর করা যায়, দেশ যে দুর্বারগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, সেটা কীভাবে স্তব্ধ করা যায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নস্যাৎ করা কীভাবে যায়, সেটাই ছিল মূল লক্ষ্য, বলেন মন্ত্রী।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ছাত্র ভাইদের জানাতে চাই, প্রায় সব দাবিই মানা হয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আপনাদের অন্য দাবিগুলোও পর্যায়ক্রমে বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরই মধ্যে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। তারা নিরপেক্ষভাবে ঘটনাগুলো তদন্ত করবে।

তিনি আরো বলেন, শুধু যে রংপুরে একজন ছাত্র শাহাদত বরণ করেছে তাই নয়, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মী শাহাদত বরণ করেছেন। তিনজন পুলিশ, একজন আনসার সদস্য শাহাদত বরণ করেছেন। যেখানেই আওয়ামী লীগ, যেখানেই ছাত্রলীগ, সেখানেই তারা আক্রমণ করেছে, এটাই ছিল তাদের পরিকল্পনা।

কারফিউ কতোদিন থাকবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সহিংসতা মোকাবিলায় সান্ধ্য আইন জারি করা হয়েছে। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। শিগগিরই আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারব।

এদিকে সহিংসতায় দুই সাংবাদিক নিহত ও এক নারী সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার বিষয়ে সাংবাদিকদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫২ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২৪
কেইউএ/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।