সীমিত পরিসরে আগামী নভেম্বর থেকে চার মাসের জন্য পর্যটকদের জন্য সেন্টমার্টিন খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মিজ নাসরীন জাহান।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
পর্যটকদের জন্য সেন্টমার্টিন কবে থেকে চালু হচ্ছে জানতে চাইলে সচিব বলেন, আপনারা সবাই জানেন আসরা পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একযোগে কাজ করছি। এখানে পর্যটকদের জন্য খোলার আগে আমাদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। যেহেতু এটা ইউএন হেরিটেজ জায়গা। সেখানে আমাদের প্রবালসহ সব কিছু সংরক্ষণ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা আশা করছি সীমিত পরিসরে আগামী ১ নভেম্বর থেকে সেন্টমার্টিন পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। সেখানে প্রতিদিন ২ হাজার করে পর্যটক যাবে। এ বিষয়ে আমরা একটা সফটওয়্যার তৈরি করেছি। যেটা জাহাজ শিল্পের সঙ্গে ইন্টিগ্রেশন করার কাজ চলমান আছে। আমরা আশা করব নির্দিষ্ট সময়ে খুলতে পারবো। যেটা নভেম্বরের এক তারিখ থেকে শুরু হবে।
পর্যটকদের জন্য কতদিনের জন্য খোলা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, আমরা প্রথম দুই মাস দিনের ট্যুর চালু করবো। পরের দুই মাস রাতে থাকতে পারবে পর্যটকরা। কিন্তু প্রতিদিন পর্যটকের সংখ্যা দুই হাজারই থাকবে। আমরা আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কন্টিনিউ করবো।
তিনি আরও বলেন, দিন শেষে আমরা সবাই বাংলাদেশি। নেন্টমার্টিনের প্রবাল আমাদের একটা সম্পদ। গত এক বছর কন্ট্রোল করার ফলে প্রবালে কী পরিমাণ প্রাণের সঞ্চার হয়েছে সেটা আপনারা গেলে দেখতে পারবেন। তাই আমাদের পর্যটকদের জন্য একটা আচরণবিধি তৈরি করা হয়েছে। যখন আমরা দেখব সবাই পর্যটন বিধি মানছে তখন ধাপে ধাপে পর্যটকদের জন্য সময় বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হবে। তবে এখন আগের বছরের মতোই চলবে।
নীতিমালাটা কী শুধু সেন্টমার্টিনের জন্য কিনা জানতে চাইলে বিমান ও পর্যটন উপদেষ্টা বলেন, না, দেশের যত পর্যটন স্থান রয়েছে ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট যত কর্মকাণ্ড আছে সেক্ষেত্রে সবার জন্য আচরণবিধি আমরা তৈরি করেছি। আগে আমাদের নিজেদের পর্যটক নিয়ে চিন্তা করতে হবে। তাদের ভ্রমণ পারিবারিক, সাশ্রয়ী, নিরাপদ ও আনন্দময় করাই আমাদের লক্ষ্য। একইসঙ্গে তাদের জন্য আরো কী ভালো ব্যবস্থা করতে পারি।
বিদেশি পর্যটকদের ভিসা, নিরাপত্তাসহ নানা জটিলতা আছে সে বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদেশি পর্যটকদের নিয়ে ভিসা জটিলতা সম্ভবত আমাদের নেই। কিন্তু আমাদের লজিস্টিকসহ অন্যান্য সমস্যা আছে। আর নিরাপত্তাটা সামগ্রিক একটা বিষয়। এটা আলাদা করে চিন্তার সুযোগ নেই। ফলে আমি মনে করি আমাদের সামগ্রিকভাবে যখন উন্নয়ন হবে তখন পর্যটন শিল্পেরও উন্নয়ন হবে।
গত এক বছরে আমাদের বিদেশি পর্যটক কতজন এসেছে এবং এতে সরকারের আয় কত হয়েছে জানতে চাইলে সচিব বলেন, আমাদের ট্যুরিজমের কোনো ডেটা সেন্টার নেই। তবে ট্যুরিজম বোর্ড ও পরিসংখ্যান বোর্ড একত্রিত হয়ে আমরা একটা ট্যুরিজম ডেটার স্যাটালাইট চালুর উদ্যোগ নিয়েছি। সেটা চালু হলে প্রকৃত ডেটা পাওয়া যাবে।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আমরা নির্দিষ্ট করে বলতে পারবো না, তবে ইমিগ্রেশন বিভাগের তথ্য মতে ২০২৪ সালে ৬ লাখের বেশি ট্যুরিস্ট আমাদের দেশে বিভিন্ন কারণে এসেছে। ট্যুরিজম বলতে শুধু পর্যটন নয়, এর সংজ্ঞা এখন অনেক ব্যাপক হয়েছে। যেমন মেডিকেল ট্যুরিজম, বুদ্ধিস্ট ট্যুরিজম এ রকম কয়েকটি ইভেন্টসহ অন্যান্য খাতে আমাদের ৬ লাখ ২৫ হাজার পর্যটক বা ট্যুরিস্ট এসেছে।
জিসিজি/আরবি