সাভার: বৈশাখে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বইছে তীব্র তাপদাহ। সড়কের শক্ত পিচ গলে হয়েছে নরম।
দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকা-আরিচা ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের নবীনগর, বাইপাইল ও ডিইপিডসহ মহাসড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায় ট্রাফিক পুলিশের কর্মব্যস্ততা। তীব্র তাপদাহ উপেক্ষা করে সড়কের শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তারা।
আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অ্যাপের তথ্যানুযায়ী, দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু মানবদেহে অনুভূতি তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সড়কে গাড়ি চলাচল করায় স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে আরও অন্তত ১০ ডিগ্রি তাপমাত্রা বেড়ে যায় বলে জানিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এমন পরিস্থিতিতেও উত্তপ্ত পিচঢালা সড়কে অবস্থান করতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের।
দায়িত্বরত বেশ কয়েকজন ট্রাফিক পুলিশের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভোর থেকে তাদের ডিউটি শুরু হয়। সকালে সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত দায়িত্ব পালনে তেমন কোনো সমস্যা না হলেও এরপর থেকে শরীরে জ্বালাপোড়া শুরু হয়। পোশাক পরে রোদে দাঁড়িয়ে থাকাটা অত্যন্ত কষ্টের হয়ে যায়। কিন্তু সড়কের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে গেলে দায়িত্বে অবহেলা করা যায় না।
এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্য বলেন, অন্য কোনো জায়গায় যতটা তাপ অনুভব করি, সড়কে তারচেয়ে অনেক বেশি অনুভূত হয়। সড়কে যানবাহনের চাপ কম থাকলে আমরা চেষ্টা করি নিরাপদ কোনো স্থানে দাঁড়াতে। কিন্তু, সড়কের পাশে যতই ছায়া হোক না কেন তাপ কিন্তু অসহনীয়।
আরেকজন বলেন, আমরা যেভাবে এই তাপদাহে দায়িত্ব পালন করছি তা অত্যন্ত কষ্টকর। কিন্তু দায়িত্ব পালনে আমরা পিছু-পা হবো না। তবে আমাদের জন্য ঠাণ্ডা পানি ও স্যালাইনের ব্যবস্থা থাকলে খুব ভালো হতো। আজ পর্যন্ত আমাদের পানি কিংবা খাবার স্যালাইন দেওয়া হয়নি। আমরা সুযোগ পেলে আশপাশের দোকান থেকে পানি পান করি। দোকানের খাবার পানিও গরম হয়ে থাকে।
এ ব্যাপারে বাইপাইল পুলিশ বক্সের দায়িত্বরত ট্রাফিক ইনচার্জ বাংলানিউজকে বলেন, ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালনের সময় আমরা খাবার স্যালাইন সরবরাহ করছি। পাশাপাশি সড়কে যানবাহনের চাপ না থাকলে তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা জেলা উত্তর ট্রাফিক বিভাগের অ্যাডমিন হোসেন শহীদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ট্রাফিকে যারা দায়িত্বপালন করছেন তাদের জন্য পরামর্শ হলো একটু পর পর ঠাণ্ডা পানি পান করতে হবে। ছাতা ছাড়া অবশ্যই সড়কে নামা যাবে না। আমরা তীব্র তাপদাহের কথা চিন্তা করে দায়িত্বরতদের জন্য প্রতিটি পুলিশ বক্সে পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইন ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করেছি। প্রয়োজনমত তারা সেখান থেকে খাবার স্যালাইন ও পানি সংগ্রহ করতে পারবেন। এছাড়া সড়কের পরিস্থিতি অনুযায়ী বিশ্রামের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা সরাসরি রৌদ্রে কিংবা সড়কে যারা কাজ করেন তাদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, সরাসরি রোদের মধ্যে কাজ করলে মাথায় ক্যাপ অথবা ছাতা অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। পাতলা সুতি কাপড় পরত হবে। ট্রাফিক পুলিশের ক্ষেত্রে আধা ঘণ্টা পর পর বিশ্রাম ও পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। ছায়াযুক্ত স্থানে থেকে দায়িত্ব পালন করতে পারলে ভালো।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২৪
এমজে