ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘কাম না করলে খামু কী?’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৭ ঘণ্টা, মে ১, ২০২৪
‘কাম না করলে খামু কী?’

ঢাকা: বৈশাখের গরমে অতিষ্ঠ নগরজীবন। দেশে চলমান অতি তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে প্রকৃতিও।

এর মধ্যেও স্বল্প আয়ের মানুষরা কর্ম করতে নামছেন সড়কে।

রাজধানীর পল্লবী এলাকায় পরিস্থান পরিবহনের হেল্পার মো. জাহাঙ্গীরের সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, তাপদাহ হোক আর মে দিবস যাই হোক, কর্ম করতে হবে। নাইলে ঘরে চুলা জ্বলবো না। কাম না করলে খামু কী?

বুধবার (০১ মে) দুপুরের দিকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে মে দিবস ও তাপদাহের মধ্যে শ্রমিকদের কাজ করতে দেখা গেছে।

শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি ও দৈনিক ৮ ঘণ্টা শ্রমের অধিকার প্রতিষ্ঠার মহান মে দিবস ও আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস আজ। কিন্তু এদিনেও নগরী ও পার্শ্ববর্তী জেলায় চলাচলকারী বাসগুলো সীমিত পরিসরে চলছে।

পরিস্থান পরিবহনের হেল্পার জাহাঙ্গীর বলেন, তাপদাহের জন্য আমাদের বাস মালিকরা পানি ও শরবতের ব্যবস্থা করেছেন। আমাদের প্রতি ট্রিপ শেষে পানি পানের ব্যবস্থা থাকে। এছাড়াও গাড়িতে ওঠার আগে পানি নিয়ে উঠছি।

রবরব পরিবহনের হেল্পার মো. আকাশ বলেন, আমরা দিন আনি দিন খাই। গাড়িতে উঠলে টাকা পাই, নাইলে টাকা পাই না। ইন্টারসিটি পরিবহনের শ্রমিকরা একদিন ডিউটি করলে আরেকদিন, বিশ্রাম নিতে হয়। এভাবেই আমাদের কাজ করতে হয়। কাজ না করলে আমাদের খাবার জুটবে না। গরম হোক আর শীত হোক কাজ করতে হবে। বাস্তবতা হলো, পকেটে টাকা না থাকলে কেউই খোঁজ নেয় না।

বিহঙ্গ পরিবহনের বাস চালক মো. রোকন বলেন, আমাদের (চালকদের) ডিউটি হলো এক দিন গাড়ি চালাব তো পরের দিন বিশ্রাম নিব। তা না হলে পরিবহন চালকরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। এই নিয়মেই আমাদের কাজ করতে হয়। গরম হোক আর মে দিবস হোক, আমাদের কাজে আসতে হয়। নইলে টাকা আয়ের কোনো উৎস নেই।

তিনি আরও বলেন, সড়কের বিভিন্ন মোড়ে, পরিবহন নেতা ও মালিকরা আমাদের পানি খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। তার পরও বাস চালানোর সময় বাসে পানি নিয়ে উঠছি।

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক সামদানী খন্দকার জানান, আজ সকাল থেকেই স্বল্প পরিসরে গাড়ি চলছে। দূরপাল্লার রুটে ২-১টি গাড়ি চললেও ঢাকা শহরে সীমিত পরিসরে বাস চলাচল করছে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী জানান, ঢাকা নগরীর বেশিরভাগ শ্রমিক দৈনিক মজুরিতে ও চুক্তিভিত্তিক কাজ করে। তারা গাড়ি না চালালে পেটে ভাত যাবে না। তাই বাধ্য হয়ে তাদের মে দিবসেও কাজ করতে হয়। কোনো ছুটি নেই। অনেক পরিবহন শ্রমিকরা প্রায় ১৮ ঘণ্টাও কাজ করে থাকেন।

প্রসঙ্গত, ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকেরা ন্যায্য মজুরি ও দৈনিক ৮ ঘণ্টা শ্রমের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলনে নামেন। শ্রমিকদের এ কর্মসূচির ওপর পুলিশ গুলি চালায়। এতে অনেক শ্রমিক হতাহত হন। শ্রমিকদের এ আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে দৈনিক কাজের সময় ৮ ঘণ্টা করার দাবি প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই সঙ্গে দিনটি মহান মে দিবস ও আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবেও বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৮ ঘণ্টা, মে ০১, ২০২৪
এমএমআই/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।