ঢাকা, শনিবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

সুন্দরবন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সহায়িকা বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৫ ঘণ্টা, মে ২, ২০২৪
সুন্দরবন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সহায়িকা বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

খুলনা: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও বাঘ গবেষক ড. এম এ আজিজের লেখা ‘সুন্দরবন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সহায়িকা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থেকে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন খুলনা অঞ্চলের প্রধান বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় (ডিএফও) বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম, ওয়াইল্ডলাইফ ম্যানেজমেন্ট নেশার কনজারভেশন ডিভিশনের ডিএফও নির্মল কুমার পাল ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মো. ওয়াসিউল ইসলাম।

মিহির কুমার দো বলেন, সুন্দরবনে মানুষ আসে অনেক কিছু দেখবে আশা করে। বাঘ, হরিণ, বাদর দেখবে। কিন্তু সে হয়তো সবকিছু দেখতে পারে না। সুন্দরবন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সহায়িকা বইটি দেখলে সে বুঝতে পারবে সুন্দরবনে কী কী আছে আর কী কী নেই। আমাদের যারা নতুন স্টাফ কাজে যোগ দেন তাদের অনেকের সুন্দরবন সম্পর্কে ধারণা থাকে না। দেখতে দেখতে শেখেন। এ বইটি তাদের সুন্দরবন সম্পর্কে ধারণা দেবে। বইটি যেন এভেলেবেল হয়। সবাই যেন বইটি কিনতে পারে।

সুন্দরবন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সহায়িকা বইটি ছবি ও লেখা দিয়ে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে এটি সুন্দরবনের প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণীর তথ্য ভাণ্ডার হিসেবে কাজ করে।

বইটির লেখক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এ আজিজ বলেন, আমি ইচ্ছা করে ঢাকায় বইটির মোড়ক উন্মোচন করিনি। সুন্দরবনের ওপর লেখা বই সুন্দরবন অঞ্চলের মানুষের মাঝে এসে উন্মোচন করবো। সেটাই করেছি। সুন্দরবন সম্পর্কে মানুষের জানা উচিত। এ বন সম্পর্কে জানার মতো ভালো বেসিক বই নেই বললেই চলে। আমি মনে করি আমার এ বইটি প্রত্যেক বাচ্চাই পেলে খুশি হবে। আর সুন্দরবন সম্পর্কে সাধারণ মানুষের একটা ধারণা হবে।   

বইটির মুখবন্ধ লিখেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম।   আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থা আইইউসিএন-এর তত্ত্ববধানে জার্মান কোঅপারেশনের আর্থিক অনুদানে বাস্তবায়িত বাংলাদেশ-ভারত সুন্দরবনের বাঘ, মানুষ ও তাদের আবাসস্থল সুরক্ষা প্রকল্পের অধীনে এ বইটি প্রকাশিত হয়।

বইটি সম্পর্কে লেখক জানান, সুন্দরবন পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। এ বনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে অসংখ্য মানুষের জীবন-জীবিকা। স্থানীয় এ মানুষরা মাছ ধরেন, কাঁকড়া শিকার করেন। গোলপাতা কেটে আনেন ঘর বানাতে। মৌসুম এলে পরিবারের সবাই মিলে ধরেন চিংড়িপোনা। এভাবেই জীবন চলে সুন্দরবনের প্রান্তীয় এলাকায় বসবাসকারী শত শত পরিবারের। এমন সংগ্রামী জীবনেও মাঝে মধ্যে হানা দেয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা বনের বাঘ। বনে কাজের সময় বাঘের আক্রমণে প্রতিবছর নিহত হন বনজীবীরা। অনেক সময় বাঘ বন ছেড়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামে চলে এসে মানুষ ও গবাদিপশু আক্রমণ করে। তবে সচেতন হলে এসব দুর্যোগ আমরা এড়াতে পারি।

সুন্দরবন সম্পর্কে মৌলিক বিষয় উপস্থাপনের পাশাপাশি প্রায় দুইশ বন্যপ্রাণীর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি দেওয়া হয়েছে এ বইয়ে। সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ছবি। এতে এদের চেনা-জানা সহজ হবে। বন সংশ্লিষ্ট অপরাধ ও আইন-কানুন সম্পর্কে কিছু বিষয় সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়া বনে কাজের সময় যে সব বিষয়ে সাবধান থাকা জরুরি, সে সম্পর্কে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এ বইয়ে। গ্রামে বাঘ এলে মানুষ-গবাদিপশুর ক্ষয়ক্ষতি কীভাবে এড়ানো যায় কিংবা বাঘকে অক্ষত অবস্থায় কীভাবে বনে ফিরিয়ে দেওয়া যায়, তেমন কিছু দরকারি পরামর্শ তুলে ধরেছি। সুন্দরবন-সচেতন একটি জনগোষ্ঠী সৃষ্টিতে এ বইটি কাজে আসলে আমাদের প্রচেষ্টা সার্থক হবে। সুহৃদ শাহরিয়ার বইটির অঙ্গসজ্জা করে নান্দনিকতা বাড়িয়েছেন অনেকখানি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহাদী হাসান ও কানিজ ফাতেমা লাবণ্য চমৎকার কিছু চিত্র এঁকে বইটিকে সমৃদ্ধ করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪২ ঘণ্টা, মে ০২, ২০২৪
এমআরএম/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।