ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

প্রধান শিক্ষকের কক্ষে মিলল অফিস সহকারীর ঝুলন্ত মরদেহ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩০ ঘণ্টা, মে ২, ২০২৪
প্রধান শিক্ষকের কক্ষে মিলল অফিস সহকারীর ঝুলন্ত মরদেহ মৃতের স্বজনরা

নীলফামারী: দিনাজপুরের পার্বতীপুরে সরকারি বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে একই বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী স্বপন কুমার পালের (৫৪) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার এবং কক্ষে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ জব্দ করা হয়।

ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার (২ মে)  বিকেলে স্বপন কুমারকে দাহ করা হয়।  

মৃতের বাড়ি পার্বতীপুর শহরের নতুন বাজার খোলাহাটি রোড এলাকায়। তিনি মৃত নৃগেন্দ্রনাথের ছেলে। তবে, কক্ষে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধারের ২০ ঘণ্টা পরও (বিকেল ৫টা) রহস্যজনক কারণে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে ফুটেজের প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করছে না পুলিশ।  

বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী আবু হায়াত বাহাদুর জানান, সন্ধ্যায় প্রধান শিক্ষকের কক্ষের দরজা খোলা দেখে তিনি ভেতরে প্রবেশ করলে অফিস সহকারী স্বপন কুমার পালকে (৫৪) ফ্যানের সঙ্গে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাটি তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোক্তারুল আলমকে জানান।  

মৃতের স্ত্রী আন্না রানী পাল জানান, তার স্বামী ১৯৯৪ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরি করে আসছেন। বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত অবস্থায় ২০১৮ সালে জাতীয়করণ হয়। সরকারিকরণের ফলে গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে তিনি কোনো বেতন-ভাতা তুলতে পারেননি। এতে বিভিন্ন কারণে তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। বেসরকারি এনজিও সংস্থা ব্র্যাক, আশা, টিএমএসএস ও বিআরডিবি থেকে বিভিন্ন সময়ে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা ঋণগ্রহণ করেন। যার প্রতিমাসে কিস্তি হিসেবে প্রায় ২৩ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হতো। কিস্তির টাকা জোগাড়ে কখনো স্থানীয় দাদন ব্যবসায়ীদের কাছেও টাকা নিতেন তার স্বামী। তবে, তার স্বামীর মৃত্যু হত্যাকাণ্ড নাকি আত্মহত্যা তা তিনি এখনো পরিষ্কার বুঝতে পারছেন না। কক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও ঘটনার রেকর্ডকৃত অংশ এখন পর্যন্ত তাকে দেখায়নি পুলিশ প্রশাসন। এতে তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে প্রতিবেশীদের মাঝেও নানা সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।  

মৃতের একমাত্র কন্যা পার্বতীপুর আদর্শ ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী শ্রেষ্ঠা পাল বলেন, তার বাবা দুপুর ১২টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে স্কুলে যান। ছুটির দিনেও স্কুল যাওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন উপবৃত্তির হিসাব নম্বরগুলোকে নগদে স্থানান্তর কাজ করতে হবে, পরে বাসায় এসে খাবো।  

সরকারি বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোক্তারুল আলম জানান, নৈশ প্রহরীর সংবাদে মৃত্যুর বিষয়টি তিনি জানতে পারেন। ধারণা করা হচ্ছে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন।  

এ ব্যাপারে পার্বতীপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজ মোহাম্মদ রায়হান বলেন, স্বপন কুমারের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। সে সঙ্গে কক্ষে থাকা সিসিটিভির হার্ডডিক্স জব্দ করা হয়েছে। এক্সপার্ট এনে তথ্য উদঘাটনের চেষ্ট করা হচ্ছে। থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, মে ২, ২০২৪
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।