ফেনী: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ মোকাবিলায় ফেনীর সোনাগাজীতে বিশেষ সতর্ক বার্তা ও অর্ধশত আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখাসহ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
দুর্যোগকালীন আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থানরতদের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার, চিড়া, গুড়, মুড়ি, বিস্কুট, ৫০ হাজার পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেটের ব্যবস্থা করাসহ ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি রোধে রিমালের গতিবিধি পর্যালোচনা করে রোববার (২৬ মে) সকাল থেকে চারটি ইউনিয়নের উপকূলীয় বাসিন্দাদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসারও বিষয়ে প্রচারণা চালানো হয়েছে। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে অনলাইনে (জুম মিটিং) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজন অংশ নেন। সভা শেষে ঘূর্ণিঝড়ের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে প্রশাসনের কর্মকর্তা, সিপিপির কর্মকর্তা, দল নেতা, স্বেচ্ছাসেবক ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে উপকূলীয় চারটি ইউনিয়ন চর দরবেশ, চর চান্দিয়া, সোনাগাজী সদর ও আমিরাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে লোকজনের খোঁজখবর নিয়ে তাদেরকে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সচেতনতাসহ আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
উপজেলার দক্ষিণ পূর্ব চর চান্দিয়া এলাকার সিপিপির দল নেতা নুর নবী বলেন, গত শুক্রবার বিকেলে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত শুনার আগে থেকে তারা এলাকায় মাইকিং করে জনগণকে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণের প্রস্তুতি নিতে বলছেন। এছাড়া গবাদিপশু গুলোকেও নিরাপদে সরিয়ে নিতে তারা প্রচারণা চালাচ্ছেন।
চর চান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা পেয়ে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের সব সদস্য ও সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে সভা করে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে কাজ করছেন।
ইউএনও কামরুল হাসান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ও দুর্যোগ মোকাবিলায় এবং জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনাসহ জনগণকে সতর্ক করার লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় সোনাগাজীতে অর্ধশত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রসহ উপজেলার সব কয়টি বিদ্যালয়কে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, উপজেলায় একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে এবং ১৪টি চিকিৎসক দল, জনপ্রতিনিধি, ফায়ার সার্ভিস, আনসার ও ভিডিপি এবং গ্রাম পুলিশের সদস্যরা মাঠে কাজ করবেন। দুর্যোগকালীন উদ্ধার তৎপরতাসহ বিভিন্ন কাজের জন্য সিপিপির দুই হাজার স্বেচ্ছাসেবকসহ আড়াই হাজার কর্মী প্রস্তুত রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতির কর্মসূচির (সিপিপি) সহকারী পরিচালক মুনীর চৌধুরী বলেন, ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে উপজেলার সর্বত্র সিপিপির সদস্যরা কাজ করছেন। প্রতিটি এলাকায় সিপিপির সদস্যদের সহায়তায় জনগণকে ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে সতর্ক করে জানমাল ও গবাদিপশুর নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া বিষয়ে বলছেন। ঘূর্ণিঝড় আসায় উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা অনেকে আতঙ্কে রয়েছে। এছাড়া উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেদের দুর্যোগকালীন নদীতে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৯ ঘণ্টা,মে ২০২৪
এসএইচডি/এসএম