পাথরঘাটা (বরগুনা): পাথরঘাটায় জোয়ারের পানিতে প্রায় ১৫টিগ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন হাজারো মানুষ।
ঘূর্ণিঝড় রিমাল ও পূর্ণিমার প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের চাপে বিষখালি ও বলেশ্বর নদীর পানি বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব।
এদিকে জোয়ারের সময় পার হয়ে যাওয়ার পরেও পানি না কমায় চিন্তিত রয়েছেন উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা। বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন এসব এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। স্বল্প উচ্চতার রিং বাঁধের কারণে এসব এলাকায় পানি ঢুকে পড়ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। বসতবাড়ি ও চুলা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার কারণে রান্না করতে পারেনি এসব এলাকার বাসিন্দারা।
পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের জিনতলা এলাকার বাসিন্দা মো. বেলায়েত হোসেন জানান, তার এলাকায় জোয়ারের চাপে বেড়িবাঁধের বাইরে দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। জোয়ারের পানিতে এসব পরিবারের কারো চুলোয় হাড়ি ওঠেনি।
সদর ইউনিয়নের হাড়িটানা এলাকার বাসিন্দা মো. নুরুল ইসলাম জানান, আমাদের এই এলাকায় রিং বাঁধ বলতে কিছু নেই। বেশি উচ্চতার জোয়ারে খালের পানি বেড়ে যাওয়ায় আমাদের এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়।
প্লাবিত হওয়ায় এসব এলাকার কয়েক শতাধিক মানুষের ঘরে আজ রান্না হবে না বলেও জানান তিনি।
এদিকে অতিরিক্ত জোয়ারের কারণে বরগুনার বাইনচটকি, বড়ইতলা ও পুরাকাটা ফেরিঘাটের সংযোগ সড়কসহ গ্যাংওয়ে তলিয়ে যাওয়ায়। ফেরি চলাচলও বন্ধ রয়েছে।
বিষখালি নদীর তীরবর্তী স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম, হাসান, আরিফ জানান, সাধারণত জোয়ারের পর পানি কমে যায়। কিন্তু সকালের আসা জোয়ারের পানি দুই ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও কমছে না। নদী ফুলে রয়েছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে বঙ্গোপসাগরে কিছু একটি হতে চলছে।
সরেজমিনে গিয়ে বেলা ২টার দিকে দেখা যায়, বিষখালি নদীর তীরবর্তী হরিণঘাটা, জিনতলা এলাকার শতাধিক ঘর বাড়ি পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা বেড়িবাঁধের উপরে অবস্থান নিয়েছে।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন জানান, নদীতে পানির অতিরিক্ত চাপ থাকায় পানি কমতে সময় লাগছে। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এসব বাঁধ ভেঙে গেলে তাৎক্ষণিক মেরামতের জন্য ৮০০ জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এদিকে বরগুনার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলার জন্য ৪২২ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য, শিশু খাদ্যের জন্য ১০ লাখ এবং গোখাদ্যের জন্য ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। গঠন করা হয়ে ৪৯টি মেডিকেল টিম এবং ৩৭ লাখ নগদ অর্থ প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবী রয়েছেন ৯ হাজার ৬১৫ জন। যারা ঘূর্ণিঝড় পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করবেন। খোলা হয়েছে দশটি কন্ট্রোল রুম। এছাড়া পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট রয়েছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ট্যাবলেট।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২৪
এসএএইচ