ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ঘূর্ণিঝড় রিমাল: রাত বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে আতঙ্কও

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৯ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২৪
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: রাত বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে আতঙ্কও

খুলনা: গাঢ় অন্ধকার রাতে তীব্র বাতাসের ঝাপটা। মাঝে মধ্যে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টি নিয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের অগ্রভাগ উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে শুরু করেছে।

রোববার (২৬ মে) বিকেল থেকে এর অগ্রভাগ উপকূলে আঘাত হানা শুরু করে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলাগুলোয় ৮-১২ ফুট জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এমন খবরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে খুলনার উপকূলের বাসিন্দারা।

প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানির উচ্চতা বাড়ছে। ঝোড়ো হাওয়ার কারণে অনেক স্থানে গাছপালা উপড়ে পড়েছে। এসব এলাকার অধিবাসীরা নিরাপদ স্থানে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। স্থানীয় প্রশাসন ও বেসরকারি সংস্থাগুলো উপকূলবাসীকে নিরাপদ ও উঁচু স্থানে যাওয়ার জন্য মাইকিং করছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় আতঙ্কে আগের মতো সর্বস্ব হারানোর ভয়ে নির্ঘুম খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের এলাকার বাসিন্দারা। বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, খুলনার দাকোপ, বটিয়াঘাটা, পাইকগাছা, কয়রার ৬৩০ কিলোমিটারের মধ্যে মাত্র ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। আর সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর আওতায় বেড়িবাঁধ রয়েছে ৩৮০ কিলোমিটার। এরমধ্যে ৩০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। বারবার বাঁধ ভাঙায় উপকূলবাসী সংকেত পেলেই আতঙ্কে থাকেন।

বটিয়াঘাটার কাজীবাছা নদীর পাড়ের বাসিন্দা নিরাপদো নামে এক জেলে জানান, জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়েছে কয়েক ফুট। এতেই ঘর ছুঁয়ে গেছে পানি। রাতে কি হয় সেই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি।

উপকূলীয় এলাকা কয়রার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের স্বাধীন সমাজকল্যাণ যুব সংস্থার সভাপতি মো. আবু সাঈদ খান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রবল ঢেউ আছড়ে পড়ছে জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধের ওপর। জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্ক বাড়ছে উপকূলের বাসিন্দাদের। রাত বাড়ার সাথে বাড়ছে আরও আতঙ্ক। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে সতর্কতামূলক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। স্বাধীন সমাজকল্যাণ যুব সংস্থার পক্ষ থেকে দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের আংটিহারা, জোড়শিং, খাসিটানাসহ বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করে জনসাধারণকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য প্রচারণা করা হয়েছে। বারবার স্থানীয় মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আসার আহ্বান জানাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকরা।

খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন রোববার (২৬ মে) রাত ৭টা ৪০ মিনিটে বাংলানিউজকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য খুলনার ৬০৪টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুপুরে প্রবল জোয়ারে কয়েক এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় অনেকেই সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছেন। ইতিমধ্যে প্রায় ১ লাখ মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২৪
এমআরএম/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।