ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বুধবার ৮৭ উপজেলায় ভোট

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০১ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২৪
বুধবার ৮৭ উপজেলায় ভোট

ঢাকা: রাত পোহালেই ৮৭টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ শুরু করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সংস্থাটি।

নির্বাচনী এলাকায় ঘোষণা করা হয়েছে সাধারণ ছুটিও।

বুধবার (২৯ মে) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিভিন্ন বাহিনীর নিয়োজিত করা হয়েছে আড়াই লাখ ফোর্স।

ইসি নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ ধাপে মোট এক হাজার ১৫২ জন প্রার্থী রয়েছেন। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩৯৭ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৫৬ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৯৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নির্বাচনে ভাণ্ডারিয়া উপজেলায় সব পদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। প্রার্থীর মৃত্যুজনিত কারণে রায়পুরা ও মামলা জটিলতায় যশোর সদরের নির্বাচনের ধাপ পরিবর্তন হয়েছে।

এছাড়া ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ২২ উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। উপজেলাগুলো হলো: বাগেরহাট জেলার শরনখোলা, মোড়েলগঞ্জ, মোংলা; খুলনা জেলার কয়রা, পাইকগাছা, ডুমুরিয়া; বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া; পটুয়াখালী জেলার সদর, মির্জাগঞ্জ, দুমকী; পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া; ভোলার লালমোহন, তজুমদ্দিন; ঝালকাঠির রাজাপুর, কাঠালিয়া; বরগুনার বামনা, পাথরঘাটা, রাঙামাটির বাঘাইছড়ি; চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ, কচুয়া ও নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলা। এসব উপজেলায় নির্বাচনের এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি ইসি।

৮৭ উপজেলায় মোট দুই কোটি আট লাখ ৭৫ হাজার ১৮৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। ভোটগ্রহণ করা হবে সাত হাজার ৪৫০টি কেন্দ্রের ৫৪ হাজার ৮৯টি ভোটকক্ষে। আগের রাতে কারচুপি ঠেকাতে সকালে সাত হাজার ৩৬ কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। কেবল দুর্গম এলাকায় ৪১৪ কেন্দ্রে ব্যালট গেছে মঙ্গলবার। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ১৬টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হবে।

ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশের ১৭ থেকে ২১ জনের ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলা ভেদে দুই থেকে চার প্লাটুন বিজিবি নিয়োজিত রয়েছে। ৩০টি উপজেলায় নিয়োজিত করা হয়েছে অতিরিক্ত ফোর্স।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আড়াই লাখের মতো সদস্য ভোটের দায়িত্বে মাঠে রয়েছেন। এদের মধ্যে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে বিজিবি ২৯৯ প্লাটুন, ভোটকেন্দ্রে পুলিশ সদস্য ২৯ হাজার ৯৮৫ জন, স্ট্রাইকিং টিমে পুলিশ সদস্য সাত হাজার ৭৯৪ জন ও মোবাইল টিম হিসেবে পুলিশের তিন হাজার ৩৬৪ জন, র‌্যাবের ২৩০টি টিম ও আনসার সদস্য রয়েছে এক লাখ ৪০ হাজার ৬৬৯ জন।

এদিকে নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালনের জন্য প্রতি তিন ইউনিয়নে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। প্রতি উপজেলায় নির্বাচনী অপরাধ আমলে নিয়ে সংক্ষিপ্ত বিচারকাজের জন্য রয়েছেন একজন করে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ভোটের নিরাপত্তায় ভোটগ্রহণের দু'দিন পর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন।

অন্যদিকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ -এ গঠন করা হয়েছে বিশেষ টিম। থাকছে মাঠ পর্যায় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে মনিটরিং ও সমন্বয় সেল। যেই সেল যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে। ইতোমধ্যে যান চলাচলও সীমিত করা হয়েছে ভোটের এলাকায়।

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে আগের ধাপগুলোর চেয়ে অধিক সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োগ করা হয়েছে। সহিংসতা করে কেউ পার পাবে না।

তিনি বলেন, ভোটার উপস্থিতি কেমন তা আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করবে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়বে কিনা সেটা বলা কঠিন। কোন জায়গায় কত ইফেক্ট পড়েছে সেটা বলা যাচ্ছে না।

এ নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, আমরা আশাকরি না যে বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটবে। আমরা মনে করি না সহিংসতা করে কেউ পার পাবে না। কেননা, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেশি নিয়োগ করা আছে।

দুপুরের পর ভোট বেশি পড়ে কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই ইসি সচিব বলেন, এক শতাংশ ভোট পড়লেও কোনো অসুবিধা নেই। ভোটার যা আসবে তাই। আমাদের কঠোর নির্দেশ যে, ভোটার যদি একজন আসেন একজনই দেখাতে হবে। ৫০ জন আসলে ৫০ জনই দেখাতে হবে। কেউ যদি বেশি দেখায় আমরা তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবো।

গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি, দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬টি উপজেলায় ২১ মে ভোটগ্রহণ হয়েছে। ৫ জুন ৫৫ উপজেলায় চতুর্থ ধাপের ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে। কিছু উপজেলায় পরবর্তীতে ভোটগ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০০০০ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২৪
ইইউডি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।