ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

দেশে চাহিদার তুলনায় ১৭ লাখ ৮২ হাজার মেট্রিক টন দুধ কম উৎপাদিত হয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৫ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২৪
দেশে চাহিদার তুলনায় ১৭ লাখ ৮২ হাজার মেট্রিক টন দুধ কম উৎপাদিত হয়

ঢাকা: দেশে দুধের চাহিদা ১ কোটি ৫৮ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন। এর বিপরীতে দুধ উৎপাদন হয় ১ কোটি ৪০ লাখ ৬৮ হাজার মেট্রিক টন।

অর্থাৎ, দেশে চাহিদার তুলনায় ১৭ লাখ ৮২ হাজার মেট্রিক টন দুধ কম উৎপাদিত হয়।

শনিবার (১ জুন) বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপন ও ডেইরি আইকন সেলিব্রেশন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক।

রাজধানী কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‌‘প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি)’।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর আমরা মাত্র ১০ লাখ মেট্রিক টন দুধ উৎপাদন করতে পারতাম। এখন সঠিক নেতৃত্বের কারণে আমরা ১৪ গুণ বেশি দুধ উৎপাদন করতে পারি। তারপরও আমরা চাহিদার তুলনায় পিছিয়ে আছি।

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে আমরা মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি এবং ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পথে রয়েছি। কিন্তু দুধ উৎপাদনে এখনো পর্যাপ্ততার স্তরের পেছনে রয়েছি। এখন আমাদের মূল লক্ষ্য দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা। তবে শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনই নয়, একইসঙ্গে আমরা দুধের শুদ্ধতাও বজায় রাখতে চাই।

দুধ পানের এবং দুগ্ধজাত পণ্য খাওয়ার বিভিন্ন উপকারী দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, দুধকে বলা হয় আদর্শ খাবার। পৃথিবীতে অনেক পুষ্টিকর খাবার আছে। কিন্তু আদর্শ খাবার এ একটিই। দুধ একমাত্র খাবার যেটা খেয়ে মানবজীবন শুরু হয়। জন্মের পর যখন শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানো হয়, তখন তার মেধার বিকাশ ঘটে। তবে শুধু শিশু বয়সেই নয়, এ খাবারটি আমাদের সারাজীবন খাওয়া উচিত। সবার উচিত প্রতিদিনে খাবার তালিকায় দুধ রাখা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।

তিনি বলেন, দুধ আমাদের পুষ্টি যোগানের জন্য অপরিহার্য। এটিকে আদর্শ খাদ্য বলা হয়। দুধ খাওয়ার প্রবণতা যেন বাড়ানো যায়, সে জন্য আমাদের সচেষ্ট হতে হবে। এটি শুধু একটি খাদ্য বা পুষ্টি যোগানের মাধ্যম হিসেবে ভাবলে হবে না। এ খাবারটি খেয়ে যদি একটি জাতি তার পূর্ণাঙ্গ মেধায় বিকশিত হয়, তাহলে নিশ্চই আমরা বলতে পারি এটি একটি অপরিহার্য খাদ্য। আমরা নিজেরা এ খাবার গ্রহণ করবো এবং অন্যকেও উৎসাহিত করবো।

তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপরিহার্য, তেমনি আমাদের পুষ্টি যোগানের জন্য দুধ অপরিহার্য। সুতরাং, এ দুই অপরিহার্য নিয়ে আমরা এ বিশ্ব দুগ্ধ দিবস পালন করছি।

মূল আলোচকের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, আয়রন ছাড়া দুধের মধ্যে সব ধরনের পুষ্টিগুণ রয়েছে। পুষ্টিগুণের দিক বিবেচনায় দুধের বিকল্প নেই। অনেকের ধারণা উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসের রোগীদের দুধ খাওয়া উচিত নয়। কিন্তু এ ধারণা মোটেও ঠিক নয়। কোনো ধরনের রোগীদেরই দুধ খাওয়ায় নিষেধ নেই। বরং দুধ খেলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। শিশুদের তো দুধ খাওয়া দরকার, তার থেকেও বেশি দুধ খাওয়া দরকার বয়স্কদের। কারণ দুধে ক্যালসিয়াম আছে। যা হাড় গঠন ও ক্ষয় রোধ করে।

এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার, চট্টগ্রাম-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ।

অনুষ্ঠানে দেশের দুগ্ধ খাতে অবদানের জন্য চার ক্যাটাগরিতে ৫১ জন সফল খামারি ও উদ্যোক্তকে সম্মাননা দেওয়া হয়। তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত এ পুরস্কারে ডেইরি খামার ক্যাটাগরিতে ২৬ জনকে, পশুখাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ক্যাটাগরিতে নয়জন, দুধ ও মাংস প্রক্রিয়াকরণ ক্যাটাগরিতে ১১ জন ও খামার যান্ত্রিকীকরণ ক্যাটাগরিতে পাঁচ জনকে পুরস্কার দেওয়া হয়। তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা, ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০২৪
এসসি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।