ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পুলিশ ফাঁড়িতে পিপিকে মারধর করলেন আ.লীগ নেতা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৪ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২৪
পুলিশ ফাঁড়িতে পিপিকে মারধর করলেন আ.লীগ নেতা

যশোর: যশোরে পুলিশ ফাঁড়ির মধ্যেই আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটরকে (পিপি) পিটিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন।  

ভুক্তভোগী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল যশোর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের পিপি পদে দায়িত্ব পালন করছেন।

এছাড়াও তিনি যশোর সরকারি সিটি কলেজের নির্বাচিত ভিপি এবং জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন।

তবে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন তাকে কী কারণে মারবো? ফাঁড়িতে দারোগাকে ‘দাবড়াতে’ গিয়েছিলেন।

রোববার (৯ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেন ভুক্তভোগী।

অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল জানান, আইনজীবী সমিতির (২য় ভবন) সামনের ফুটপাতে কিছু ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী টেবিল পেতে কাপড় বিক্রি করেন। সেখানে এক ব্যবসায়ীকে জোর করে উঠিয়ে আরেকজনকে বসান শাহীন নামে এক ব্যক্তি।

এসময় তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্দেশে তিনি এ টেবিল বসিয়েছেন। এটা কেউ উঠালে তার হাত কেটে নেওয়া হবে। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের একটি পক্ষ পার্শ্ববর্তী পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দেন। এরপর ফাঁড়ির এসআই হেলাল মীমাংসা জন্য শাহীনসহ অন্য ব্যবসায়ীদের ডেকে পাঠান। একইসাথে তাকেও (আওয়ামী লীগ নেতা ও পাবলিক প্রসিকিউটর মোস্তাফিজুর রহমান মুকুলকে) ফাঁড়িতে ডেকে নেন। কিন্তু হঠাৎ করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন একদল যুবক নিয়ে ফাঁড়িতে আসেন। তিনি মুস্তাফিজুর রহমান মুকুলকে দেখেই দম্ভোক্তি দিয়ে বলেন, এখানে ধান্দাবাজি করিস! এরপর নিজেই মারপিট শুরু করেন।

মুকুল আরও জানান, লজ্জা, ঘৃণায় তিনি কাউকে কিছু না বলে বাড়ি চলে যান। কিন্তু মানুষজন ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বিষয়টি জেনে যায়। এরপর সোমবার (১০ জুন) তিনি লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাটি জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতিসহ সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতাদের অবহিত করেন।

এ ব্যাপারে জানতে যশোর কসবা পুলিশ ফাঁড়ির টিএসআই এসআই রেজাউল করিমের কাছে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।  

তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন বলেন, ফাঁড়িতে ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি গোলযোগ মীমাংসা হচ্ছিল। ফুটপাতে দোকান দেওয়া অবৈধ ফলে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই।

অভিযোগের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল একজন পাবলিক প্রসিকিউটর। তাকে কী কারণে মারবো?। আমি ফাঁড়িতে গিয়েছিলাম দারোগাকে দাবড়াতে।  

তিনি আরও বলেন, অ্যাডভোকেট মুকুল ও বাচ্চু সাহেব ফুটপাত ইজারা দিয়ে খায়। আমাদের একটা ছেলে (শাহীন) গেছে সেখানে দোকান বসানোর জন্য। মুকুল সাহেব ফাঁড়িতে অভিযোগ দিলে দারোগা সাহেব সেই ছেলেটিকে ডেকে পাঠায়। আমি তাকে ফাঁড়িতে যেতে বলি। কিন্তু মুকুল সাহেব দারোগাকে দিয়ে ছেলেটাকে ভালো মতন পিটিয়েছে। বিষয়টি জানার পর ওসি-এসপিকে জানিয়ে আমি ফাঁড়িতে যাই। পরে ওসি ও অ্যাডিশনাল এসপি ফোন দিয়ে আমাকে জানায় যা হওয়ার হয়ে গেছে আপনি ছেলেটাকে নিয়ে যান আমরা ওই দারোগার বিরুদ্ধে অফিশিয়ালি ব্যবস্থা নেব। এরপর আমি সেখান থেকে চলে আসি। মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল একজন আইনজীবী আমি ওনাকে কেন মারতে যাবো।

বাংলাদেশ সময়: ০০০৪ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।