ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ফরিদপুরে রাসেলস ভাইপারের ছোবলে কৃষকের মৃত্যু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৬ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২৪
ফরিদপুরে রাসেলস ভাইপারের ছোবলে কৃষকের মৃত্যু ফাইল ছবি

ফরিদপুর: ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নে দুর্গম চরে বিষধর রাসেলস ভাইপার সাপের ছোবলে হোসেন ব্যাপারী (৫০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।  

শুক্রবার (২১ জুন) সকাল ১১টার দিকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহত হোসেন ওই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ৩৮ দাগ এলাকার পরেশউল্লা ব্যাপারীর ছেলে।

এছাড়া পার্শ্ববর্তী ডিক্রিরচরে বৃহস্পতি ও শুক্রবার (২০ ও ২১ জন) দুদিনে দুইটি রাসেলস ভাইপার সাপ দেখতে পেয়ে সেগুলো পিটিয়ে মেরেছে গ্রামবাসী।  

কৃষক হোসেনের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি মেম্বার হেলালউদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে হোসেনকে সাপে ছোবল দেয়। পরে তাকে ট্রলারযোগে পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে ফরিদপুরে হাসপাতালে আনা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। তার আগেই শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হয়।


এদিকে, শুক্রবার সকালে ফরিদপুর সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের আইজউদ্দীন মাতুব্বরের ডাঙ্গি গ্রামে ক্ষেতে কাজ করার সময় একটি রাসেলস ভাইপার সাপ দেখতে পান ওই গ্রামের তোতা মোল্লার ছেলে মুরাদ মোল্লা (৪৫)।

মুরাদ মোল্লা বলেন, সকালে বাদামের জমিতে কাজ করার সময় সাপটি নজরে পড়ে। এরপর লাঠি এনে তিন-চারটি বাড়ি মেরে সাপটি মেরে ফেলি। আগের দিন ওই গ্রামের হারুন শেখের ছেলে ইউসুফ আরও একটি রাসেলস ভাইপার সাপ পিটিয়ে মেরে ফেলেছেন বলে জানান তোতা মোল্লা।  

খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে ডিক্রিরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন আবু ফকির বলেন, সম্প্রতি ওই এলাকায় রাসেলস ভাইপার সাপের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। মাঝেমধ্যেই তারা এই সাপ দেখতে পাওয়ার খবর পাচ্ছেন।  

এদিকে গত ২০ জুন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক এবং সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আরিফ দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এক প্রস্তুতি সভায় রাসেলস ভাইপার সাপের উপদ্রবে চরাঞ্চলের মানুষের উদ্বেগের বিষয়টি উল্লেখ করে রাসেলস ভাইপার সাপ মারতে পারলে পুরস্কার ঘোষণা করেন। তারা বলেন, কেউ একটি রাসেলস ভাইপার সাপ মারতে পারলে তাকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। যতগুলো সাপ মারবে, ততবার এই পুরস্কার দেওয়া হবে।  

এ ব্যাপারে জানতে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃদ্বয়ের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।  

তবে জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক নিয়াজ আহমেদ সজিব বলেন, যিনি বা যারা ওই সাপগুলো মেরেছেন তারা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাদের ঘোষিত পুরস্কারের অর্থ দেওয়া হবে।  

ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোলাম কুদ্দুস ভূঁইয়া জানান, যেকোনো বন্য প্রাণী নিধন আইনগত দণ্ডনীয় অপরাধ। রাসেলস ভাইপার এ দেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। ২০১৪ সাল থেকে আবার সাপটির দেখা যাচ্ছে। এ সাপের বংশ বৃদ্ধির হার বেশি। একবারে একটি মা সাপ ৬০-৭০টি বাচ্চা দেয় এবং প্রায় সবকটি বেঁচে যায়। এ সাপ সাধারণত চর এলাকায় থাকে এবং ব্যাঙ, ইঁদুর খেয়ে বাঁচে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।