ঢাকা, বুধবার, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ০৩ জুলাই ২০২৪, ২৫ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

দুই ঘণ্টার বৃষ্টিতে বাগেরহাট শহরে হাঁটুপানি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০২৪
দুই ঘণ্টার বৃষ্টিতে বাগেরহাট শহরে হাঁটুপানি

বাগেরহাট: সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধ হয়ে যায় বাগেরহাট শহরের বিভিন্ন এলাকা। বৃষ্টির পানি নালা (ড্রেন) উপচে ডুবে যায় সড়ক ও স্থানীয়দের বাড়ি ঘর।

এসব পানি নামতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে, আবার কোথাও কয়েক দিন লেগে যায়। গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে পানি উঠে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় পৌরবাসীদের।  

রোববার (৩০ জুন) টানা দুই ঘণ্টার বৃষ্টিতে বাগেরহাট শহরের বিভিন্ন সড়কের ওপর হাঁটুপানি জমে। অধিকাংশ সড়ক থেকে পানি নেমে গেলেও খারদ্বার, নাগেরবাজার, মল্লিকবাড়ির মোড়, হাড়িখালি ও গোবরদিয়া এলাকা এখনও জলমগ্ন রয়েছে।

জানা যায়, শহরের প্রধান খালগুলো দখল ও সংকুচিত হওয়া, অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, খাল দখল, পুকুর ভরাট, বক্স-ড্রেনের নামে খাল ও নালা বন্ধসহ পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। দিন দিন শহরের জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে বলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

গোবরদিয়া এলাকার আলমগীর হাওলাদার বলেন, রোববারের বৃষ্টিতে যে পানি উঠেছে তা এখনও নামেনি।  অনেকের পুকুরের মাছও ভেসে গেছে। মূলত পানি নামার কোনো জায়গা না থাকায় এই অবস্থা আমাদের।

খারদ্বার এলাকার বাসিন্দা লিটন ওরফে বাবু বলেন, পানি নামার কোনো জায়গা নেই। সামনের রাস্তা ও ড্রেন এত উঁচু করছে বছরের প্রায় অর্ধেক সময় ডুবে থাকে। একদিন বৃষ্টি হলে অন্তত এক সপ্তাহ পানির নিচে থাকে রাস্তাটি।

খারদ্বার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বৃষ্টিতে স্কুলের সামনে পানি উঠে গেছে। আবার বৃষ্টি হলে স্কুলের ভেতরে পানি উঠে যাবে। ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে এক মাস হলো এই রাস্তায় পানি জমে আছে। বৃষ্টি হলে হাঁটু পানি, কখনও কোমর পানি জমে এই রাস্তায়। শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ সবার যে দুর্ভোগ তা বলে বোঝানো যাবে না।

শহরের সাহাপাড়া এলাকার প্রদীপ দাস বলেন, এক বৃষ্টি হলে দেখা যায় সেই পানি নামতেই তিন চারদিন লাগে। এই বর্ষাকালে রাস্তা দিয়ে চলার উপায় নেই। তার ওপর এখন ড্রেনের কাজ শুরু করছে। দুর্ভোগ আরও বাড়ছে।

শহরের মুনিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা ও সিপিবি’র জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফররুখ হাসান জুয়েল বলেন, শহরের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত বড় পাঁচটি খাল এখন খুঁজে পাওয়া যায় না। আরও অসংখ্য খাল নালা ছিল যার সবই এখন দখল হয়ে গেছে। খাল-নদী সব দখল করে ফেললে পানি যাবে কোথায়। এখন সড়কেই আটকে থাকছে।

তিনি আরও বলেন, আমার ছোট বেলা শহরের অনেক খালে নৌকা বাঁধা দেখেছি। এগুলোর এখন অস্তিত্বই নেই। ২০ বছর আগেও যে খালে প্রবাহ ছিল, মানুষ গোসল করেছে। তা এখন মৃত প্রায়।

বাগেরহাট পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী টি এম রেজাউল হক রিজভী বলেন, উপকূলীয় শহর জলবায়ু সহিষ্ণু প্রকল্পের (সিটিসিআরপি) অধীনে বুয়েটের মাধ্যমে বাগেরহাট শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাস্টার প্ল্যান করা হয়েছে। একই সঙ্গে এই প্রকল্পে শহরের সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার ড্রেনের কাজ বর্তমানে চলমান। যা আগামী ২০২৫ সালের জুনে শেষ হবে। এরমধ্যে শহরের প্রধান পাঁচটি খালও খনন করা হবে। এসব কাজ শেষ হলে আগামী বছর থেকে পৌরবাসীর জলাবদ্ধতা সমস্যা আর থাকবে না।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।