ঢাকা, শনিবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ০৬ জুলাই ২০২৪, ২৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

টানা বর্ষণ-পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারে ফের প্লাবন

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১১ ঘণ্টা, জুলাই ৩, ২০২৪
টানা বর্ষণ-পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারে ফের প্লাবন

মৌলভীবাজার: উজানে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পাহাড়ি ঢলের কারণে মৌলভীবাজারের তিন উপজেলা ফের প্লাবিত হয়েছে। এলাকাগুলো বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।

 

কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় আবারও বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া, রাজনগর উপজেলার দুটি ইউনিয়ন ও সদর উপজেলার তিন ইউনিয়নে পানি বৃদ্ধি পেয়ে দীর্ঘস্থায়ী বন্যার রূপ নিয়েছে। দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে কুলাউড়া পৌর সাভার পাঁচ ওয়ার্ড, কুলাউড়া উপজেলা পরিষদ, জুড়ী উপজেলা পরিষদসহ ওইসব এলাকার বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাস্তা ঘাট।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বুধবার (৩ জুলাই) দুপুর ১২টার আপডেট তথ্যে জানায়, মনু নদীর (রেলওয়ে ব্রিজ) পানি বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ও মনু নদীর (চাঁদনীঘাট) পানি বিপদসীমার ৫০ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলাই নদীর (রেলওয়ে ব্রিজ) পানি বিপদসীমার ১৬৮ সে.মি. ও কুশিয়ারা নদীর (শেরপুর) পানি বিপদসীমার ১৯ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিপদসীমার ১৯০ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে জুড়ী নদীর (ভবানীপুর) পানি।

বৃষ্টিপাতের কারণে কুশিয়ারা, জুড়ী, ফানাই ও আন ফানাই নদী দিয়ে ঢল নেমে বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ‘দীর্ঘস্থায়ী’ বন্যায় এসব এলাকার পানিবন্দি সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। যারা আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন তাদের বাড়ি ফেরা অনেকটা অনিশ্চিত।

ভারী বর্ষণ-উজানের ঢলে মৌলভীবাজারে মনু ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সদরের খলিলপুর ইউনিয়নের হামরকোনা এলাকায় কুশিয়ারার পানি উপচে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে জনপদে প্রবেশ করেছে। এ এলাকায় কুশিয়ারার স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ নেই। গ্রামীণ সড়কটিই প্রতিরক্ষা বাঁধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। নতুন করে ভাঙনের ফলে আশপাশের গ্রামগুলো বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খলিলপুর ইউনিয়নে ১৫ থেকে ২০ ফুট জায়গা ভেঙে গেছে। ওই ভাঙা অংশ দিয়ে গ্রামের দিকে পানি ঢুকছে। এর মধ্যে বুধবার সকালের দিকে হামরকোনা মসজিদের কাছে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে গ্রামে পানি ঢুকছে। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, পানিপ্রবাহ বন্ধ করা না গেলে হামরকোনা, ব্রাহ্মণগ্রাম ও শেরপুর বাজারের একাংশ প্লাবিত হবে।

পাউবো মৌলভীবাজার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, খলিলপুর ইউনিয়নের যেদিকে বাঁধ ভেঙে কুশিয়ারা নদীর পানি গ্রামে ঢুকছে, ওই এলাকায় পাউবোর কোনো বাঁধ নেই। একসময় প্রতিরক্ষা বাঁধ হলেও এটি এখন মূলত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) একটি গ্রামীণ সড়ক। কুশিয়ারা নদীতে পানি বিপদসীমার ওপরে উঠলে বাঁধটির বিভিন্ন স্থান ভেঙে এলাকায় পানি ঢোকে।

পাউবো মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, কুশিয়ারার পানি বৃদ্ধি ভয়ের কারণ। কুশিয়ারায় পানি বাড়লে মনুর পানি কমবে না। কুশিয়ারা নদীর খলিলপুর এলাকায় পাউবোর স্থায়ী কোনো বেড়িবাঁধ নেই। হামরকোনায় এলজিইডির রাস্তা ভেঙে খলিলপুর ইউনিয়নে পানি ঢুকছে। ভাঙা অংশ মেরামতের জন্য বালুভর্তি এক হাজার সিন্থেটিকের বস্তা পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, জুলাই ৩, ২০২৪
বিবিবি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।