ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নরসিংদীতে চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই, গ্রেপ্তার ৪

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৪
নরসিংদীতে চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই, গ্রেপ্তার ৪

নরসিংদী: নরসিংদীর মাধবদীতে যাত্রীর ছদ্মবেশে মো. নুরুল ইসলাম (৫০) নামে এক চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায়  চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে নরসিংদীর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।

নিহত মো. নুরুল ইসলাম মাধবদী থানার ভাটপাড়া গ্রামের মৃত কাসেম আলীর ছেলে।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মাধবদী থানার পাথরপাড়া গ্রামের মজিবর মিয়ার ছেলে বাচ্চু মিয়া (২৭), বালুসাইর গ্রামের মোকসেদ আলীর ছেলে সোহেল মিয়া (৩২),  পাথরপাড়া গ্রামের বকুল মিয়ার ছেলে হৃদয় (২৭) ও মৃত ইমান আলীর ছেলে নবী হোসেন (৩৫)।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গত ১৫ জুন মাধবদী থানার ভাটপাড়ার বাসিন্দা মো. নুরুল ইসলাম তার ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে নিজ বাড়ি থেকে বের হন। ওইদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে মো. নুরুল ইসলাম তার ভাইকে মোবাইল ফোনে জানান তার ব্যাটারিচালিত রিকশাটি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। খবর পেয়ে তার আত্মীয়-স্বজন খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে ১৬ জুন সকালে নরসিংদী শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড থেকে মদনপুরগামী রাস্তার মাধবদী থানার দামের ভাওলা এলাকার একটি বরই গাছের সঙ্গে গামছা দিয়ে বাঁধা অবস্থায় নুরুল ইসলামের মরদেহ পায়।  

এ ঘটনায় নিহতের  স্ত্রী শিউলি বেগম অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মাধবদী থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগের তত্ত্বাবধানে মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. রিয়াজ উদ্দিন রনি আসামিদের শনাক্তকরণ, ছিনতাইকৃত ব্যাটারিচালিত রিকশা উদ্ধারে অভিযান শুরু করেন। অভিযানের একপর্যায়ে ৯ জুলাই মাধবদী থানার একটি দল হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আসামি বাচ্চু মিয়াকে (২৭) মাধবদী থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী অভিযান পরিচালনা করে নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে একই দিনে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সহযোগী আসামি হৃদয়, সোহেল এবং নবী হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার আসামিরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তারা জানায়, ১৫ জুন রাত ৮টার দিকে নরসিংদী শহরের সাহেপ্রতাব থেকে গ্রেপ্তার বাচ্চু মিয়া, হৃদয় এবং সোহেল চালক মো. নুরুল ইসলামের ব্যাটারিচালিত রিকশায় যাত্রী হিসেবে ওঠে। রিকশায় ঘোরাঘুরির এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে আসার পর আসামিরা  মো. নুরুল ইসলামকে বরই গাছের সঙ্গে পায়ে, পেটে এবং গলায় গামছা দিয়ে শক্তভাবে বেঁধে হত্যা করে তার ব্যাটারিচালিত রিকশাটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে তারা ৩ জন লুষ্ঠিত ব্যাটারিচালিত রিকশাটি নিয়ে নবী হোসেনের কাছে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে সে টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করেন। আসামি নবী হোসেন ব্যাটারিচালিত রিকশাটি ক্রয় করার সঙ্গে সঙ্গে এর কিছু যন্ত্রাংশ আলাদা আলাদা খুলে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করেন। গ্রেপ্তারের পর আসামি নবী হোসেনের বাড়ি থেকে ছিনতাইকৃত ব্যাটারিচালিত রিকশার ২টি ব্যাটারি, একটি চাকা এবং একটি হেডলাইট সংযুক্ত মিটার বক্স উদ্ধার করে মাধবদী থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তার আসামিরা ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তারা বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৪
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।