কক্সবাজার: অনুপ্রবেশকালে কক্সবাজারের টেকনাফের বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবির ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩১ রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া গত ৩ দিনে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বাসিন্দারা।
মঙ্গলবার (০৬ আগস্ট) দুপুরে টেকনাফ সাগর উপকূলে এই পাঁচ মরদেহ পাওয়া যায়। পরে আরও ১২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে। তা থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছিলেন এসব রোহিঙ্গারা। এ ঘটনায় দুইজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মঙ্গলবার এবং বুধবার (০৬ আগস্ট) ৩১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা মরদেহগুলো স্ব স্ব এলাকায় বেওয়ারিস হিসেবে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে কক্সবাজারের টেকনাফ, উখিয়া এবং নাইক্ষ্যংছড়ি স্থল ও জলসীমা দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নজরদারি ও টহল জোরদার করেছে কোস্টগার্ড ও বিজিবি।
গত ৩ দিনে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বাসিন্দারা।
জনপ্রতিনিধিরা জানান, নৌকায় করে বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গাদের অনেকেই কৌশলে ক্যাম্পে প্রবেশ করেছেন। তবে বিজিবির সদস্যরা দুই শতাধিক রোহিঙ্গা আটক করেছে। তাদের বিজিবির হেফাজতে রাখা হয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে শাহপরীর দ্বীপ মোহনায় টহল এবং নজরদারি জোরদার করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। এছাড়া নাইক্ষ্যংছড়ি, উখিয়া ও টেকনাফের স্থল সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে।
বুধবার দুপুরে কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সাব্বির আলম সুজন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সাগরে কোস্ট গার্ডের টহল জোরদারের কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত নিরাপত্তায় কঠোর নজরদারি বজায় রেখেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। চলমান পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে নাফ নদী ও সেন্টমার্টিন এলাকায় যেকোনো অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে টেকনাফ, শাহপরিরদ্বীপ, বাহারছড়া, সেন্টমার্টিন ও উপকূলীয় অঞ্চলে টহল জোরদার করা হয়েছে। সমুদ্রে সার্বক্ষণিক টহল জাহাজ মোতায়েনসহ নিয়মিত হাইস্পিড বোটের মাধ্যমে টহল পরিচালনা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, টেকনাফ, শাহপরীরদ্বীপ, বাহারছড়া ও সেন্টমার্টিনে অতিরিক্ত জনবল ও সরঞ্জাম মোতায়েন করে সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যেকোনো প্রকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড সম্পূর্ণ প্রস্তুত আছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০২৪
এসবি/এফআর