ঢাকা, সোমবার, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩১, ১২ আগস্ট ২০২৪, ০৬ সফর ১৪৪৬

জাতীয়

মগবাজারের রাস্তা পরিষ্কার ও দেয়াল রং করে নান্দনিক করলেন শিক্ষার্থীরা 

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২৪
মগবাজারের রাস্তা পরিষ্কার ও দেয়াল রং করে নান্দনিক করলেন শিক্ষার্থীরা  এলাকার অলিগলি পরিষ্কারে ব্যস্ত নেক্সজেন বাংলাদেশের সদস্যরা

ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশ পুনর্গঠনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। তারই অংশ হিসেবে দেশজুড়ে রাস্তাঘাট পরিষ্কার, দেয়ালে রং, গ্রাফিতি আঁকা, বাজার মনিটরিংসহ সড়কে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

দেশের আর সব শিক্ষার্থীদের মতো সামাজিক এ কর্মে যোগ দিয়েছে নেক্সজেন বাংলাদেশ (NextGen Bangladesh) নামের একটি সংগঠন।

গত ৮ আগস্ট থেকে সংগঠনের পক্ষে রাজধানীর ব্যস্তবহুল এলাকা মগবাজারের নয়াটোলার সব রাস্তা ও অলিগলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি স্থানীয় স্কুলের নোংরা দেয়াল পরিষ্কার করে রং করেছেন সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবীরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নেক্সজেন বাংলাদেশের কোমলমতি সদস্যরা হ্যান্ড গ্লাভস ও মাস্ক পরে ঝাড়ু-বেলচা নিয়ে রাস্তায়। বড়দের দেখাদেখি ছয়-সাত বছরের শিশুরাও হাতে ঝাড়ু নিয়ে নেমেছে পরিচ্ছন্নতার এই কর্মসূচিতে। তাদেরকে সহায়তায় নেমেছেন অভিভাবকরাও। রাস্তা ও অলি-গলির ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে সিটি করপোরেশন নির্ধারিত ডিপোতে ফেলছেন তারা। পানি ছিটিয়ে ধুলোবালিমুক্ত রাখছেন এলাকা। নোংরা দেয়াল পরিষ্কার করে নান্দনিক রূপ দিচ্ছেন।  

দেয়াল রং করে গ্রাফিতি আঁকায় ব্যস্ত শিক্ষার্থীরা

এছাড়া ‘মগবাজার বিটিসিএল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ’-এর দেয়াল পরিষ্কার করে রং করছেন নেক্সজেনের সদস্যরা।

সংগঠনটির এই সামাজিক কর্মসূচি স্থানীয়ভাবে প্রশংসিত হয়েছে।

এলাকাবাসীর মতে, নেক্সজেন বাংলাদেশের এই সেবা চলমান থাকলে ভালো হয়। যেন তাদের দেখাদেখি অন্যান্যরা উৎসাহিত হয়। এটা কোনো ছোট কাজ নয়। তাদের উচিত সিটি করপোরেশনকে পর্যবেক্ষণ করা। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে মিলে কাজ করলে সবার জন্য সব কিছু সহজ হবে।  

বাংলানিউজকে তারা বলেন, পরিচ্ছন্নতার এত সুন্দর কাজ এই এলাকায় ১৫-২০ বছরে হয়নি। শিক্ষার্থীরা ছাড়া এই কাজ কেউ করতে পারে না। এই সাহস আর মনোবল শুধু তাদেরই আছে। তাদের দেখে আমরা শান্তি পাই যে, দেশের ভবিষ্যৎ ভালো হাতেই আছে। তাদের কাজে এলাকার সবাই খুশি। এত খুশি মানুষ আগে কখনও ছিল না।

অভিভাবকরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের সংস্থাটি শুধু রাস্তাঘাট পরিষ্কার করার কাজ করে থেমে থাকলে হবে না। অন্যান্য সামাজিক কাজেও এগিয়ে আসতে হবে। ছোটদের খেলাধুলার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। গরিব মানুষের বিয়েতে সহায়তা এবং অসুস্থদের পাশে দাঁড়াতে হবে। সব বাবা-মা যেন তাদের সন্তানকে এসব কাজে উৎসাহিত করেন।  

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ৭ বছরের ছোট্ট মানহা বলে, রাস্তা পরিষ্কার আর দেয়াল রং করে আমার অনেক ভালো লেগেছে। ভাইয়া এবং আপুদের সঙ্গে এমন আরো কাজ করতে চাই।  

স্থানীয় ব্যবসায়ী রেজওয়ান আহমেদ বিল্লাল বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে এই ধরনের সামাজিক কাজ প্রশংসনীয়। আমিও খুব উৎসাহিত। তাদের যেকোনো সাহায্যে আমি প্রস্তুত। শুধু এইটুকুতে থামা যাবে না। অপরাধ দেখলে সোচ্চার হতে হবে। কারণ, দেশের অবস্থা সবাই দেখছে, আমি চাই দেশটা উন্নত হোক।

এদিকে নিজেদের স্কুলের দেয়াল রঙিন হতে দেখে খুশি বিটিসিএল স্কুলের শিক্ষার্থীরা।  তারা জানান, কয়েকদিন আগে স্কুলের দেয়ালে আঁকা গ্রাফিতি করে নষ্ট করে দিয়েছিলো মানুষ। কিন্তু এখন অনেক ভালো লাগছে দেখতে।

নেক্সজেন বাংলাদেশের স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের একাংশ

‘নেক্সজেন বাংলাদেশ’ - এর দুই সমন্বয়ক শেখ ইশতিয়াক ও ইশরাত জেরিন প্রমা বলেন,  আমাদের উদ্দেশ্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এক মনোরম পরিবেশের বাংলাদেশ উপহার দেয়া। সেজন্য আমরা সব ধরনের সামাজিক কর্মে স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নিতে রাজি। আর এসব কাজে আমরা একা নই, আমাদের সঙ্গে অনেক মানুষ যোগ দিয়েছেন এবং দিচ্ছেন। সামাজিক কর্মে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হতে সবাইকে আহ্বান জানাই।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২৪
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।