ঢাকা, শুক্রবার, ১১ আশ্বিন ১৪৩২, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

ছাত্র আন্দোলন

সাব্বির ও প্রকৌশলী রাকিবের মায়েদের কান্না যেন থামছেই না

এম রবিউল ইসলাম রবি, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:৫২, আগস্ট ১৩, ২০২৪
সাব্বির ও প্রকৌশলী রাকিবের মায়েদের কান্না যেন থামছেই না

ঝিনাইদহ: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ঝিনাইদহ সদর ও শৈলকুপার সাব্বির হোসেন (২৩) ও প্রকৌশলী রাকিবুল হাসানের (২৯) মায়েদের কান্না যেন থামছেই না। ছেলে হারানোর শোকে তাদের চোখে নিদ্রা নেই।

প্রতিটা রাত যেন দুই পরিবারের কাছে অবসানহীন অপেক্ষার প্রতিচ্ছবি।  

সারাক্ষণ তারা নিহত ছেলেদের স্মৃতি নিয়ে আহাজারি করছেন। পেশায় দুজনেই বেসরকারি চাকরিজীবী ছিলেন। কোটা আন্দোলনের সময় ঢাকায় পৃথক স্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন তারা।  

এর মধ্যে শৈলকুপা উপজেলার মীর্জাপুর গ্রামের আমোদ আলীর ছেলে সাব্বির হোসেন গত ১৮ জুলাই ঢাকার উত্তরায় ওষুধ কিনতে বের হয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরদিন ১৯ জুলাই সাব্বিরের লাশ সকাল ১০টার দিকে মীর্জাপুর গ্রামে দাফন করা হয়।  

সাব্বিরের চাচাতো ভাই তরিকুল জানান, উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরে অর্গান লিমিটেড কেয়ার নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন সাব্বির। ঘটনার সময় তিনি ওষুধ কিনতে বের হয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।  

মা রাশিদা খাতুন জানান, সাব্বিরের বাবা এখন কাজ করতে পারেন না। পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে সাব্বির সংসারের হাল ধরেছিলেন। সাব্বিরের মৃত্যুতে গোটা পরিবার এখন অসহায়। তিনি সন্তান হত্যার বিচার চান।

অপরদিকে ঝিনাইদহ শহরের চাকলাপাড়া এলাকার আবু বকর সিদ্দিকীর ছেলে প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান ১৯ জুলাই শুক্রবার রাতে গুলিতে নিহত হন। ঘটনার দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে মিরপুর ১০ নম্বর সেক্টর এলাকায় পথচারী এক নারীকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন। মিরপুর-৬ এলাকায় ডা. আজমল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রাকিব লন্ডনভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি টাইগার রিস্ক ম্যানেজমেন্টে চাকরি করতেন।  

মা হাফিজা বেগম বলেন, আমার ছেলে প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান নিহত হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে তার সঙ্গে কথা হয়। সে বলছিল একটি গ্যারেজের মধ্যে বসে আছে। আমি বলেছিলাম রাত সাড়ে ৯টার মধ্যে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়বে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই ছেলে আমার চিরঘুমে শায়িত হন।

তিনি আরও বলেন, ছোট ছেলেকে নিয়ে কত স্বপ্ন ছিল। আমাদের কাছে রাখার জন্য ঢাকায় বড় ফ্ল্যাট নিয়েছিল। কিন্তু সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।

এদিকে কোটা আন্দোলনের সময় পুলিশ ও ছাত্র-ছাত্রী মিলে প্রায় দেড় শতাধিক আহত হয়েছেন। আন্দোলনের সময় যারা আহত হয়েছেন তারা ঝিনাইদহ জেলা শহরের ছাত্র-ছাত্রী ছিলেন। তবে এখন পর্যন্ত ঝিনাইদহে নিখোঁজের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

ঝিনাইদহ কোটা আন্দোলনের সমন্বয়ক সাইদুর রহমান জানান, কোটা আন্দোলনের সময় আমাদের প্রায় শতাধিকের বেশি ছাত্র-ছাত্রী আহত হয়েছেন। আহতরা সবাই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে সবাই নিজ নিজ বাসায় অবস্থান করছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।