ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ফেনীতে ছাত্র আন্দোলনে নির্বিচারে গুলি: এখনো অধরা অস্ত্রধারীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২৪
ফেনীতে ছাত্র আন্দোলনে নির্বিচারে গুলি: এখনো অধরা অস্ত্রধারীরা

ফেনী: ফেনীতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।  

গত সরকারের পতনের আগের দিন শহরের মহিপালে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জনরোষ এড়াতে শুধু নেতারা-ই নন, কর্মীরাও গা ঢাকা দিয়েছেন।

ইতোমধ্যে ওই ঘটনায় এক হাজার ৬২৩ জনকে আসামি করে পৃথক পাঁচটি মামলা করা হয়েছে।  

সবকটি মামলায় জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এসব মামলার কারণে গ্রেপ্তার আতঙ্কে দলের নেতাকর্মীরা। বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা।  

এদিকে ভারত পালিয়ে যাওয়ার সময় আখাউড়া ইমিগ্রেশনে হাজারীর ব্যক্তিগত সহকারী ফরিদ মানিক গ্রেপ্তার হয়েছেন। তবে অস্ত্রধারীদের কেউ এখনো গ্রেপ্তার হননি। এ নিয়ে নিহতদের পরিবার ও জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

বিভিন্ন সূত্র বলছে, গত ৪ আগস্ট শহরের মহিপালে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি ছোড়েন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। পরদিন জেলাব্যাপী নেতাকর্মীদের বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ জনতা।  

৪ আগস্টে গুলিবর্ষণের ভিডিও ক্লিপ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে যান। অনেককে মোবাইল ফোনে কল করেও পাওয়া যাচ্ছে না। সরকার পতনের পর নিজাম উদ্দিন হাজারীর গ্রেপ্তারের গুঞ্জন উঠলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তা নাকচ করা হয়। শীর্ষ নেতাদের ফোন বন্ধ থাকায় অবস্থান নিশ্চিত করতে পারছেন না নেতাকর্মীরা। সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানেও তারা অংশ নিচ্ছেন না।

সংশ্লিষ্ট একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ৪ আগস্টের ঘটনায় বন্দুক হাতে সামনে থাকা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি জিয়াউদ্দিন বাবলু ইতোমধ্যে ভারতে পাড়ি দিয়েছেন।  

এ ছাড়া ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক হারুন মজুমদার, পরশুরাম উপজেলা সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল, দপ্তর সম্পাদক একরামুল হক পিয়াস, প্রচার সম্পাদক এনামুল হক, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল আহমেদ তপু, সাধারণ সম্পাদক নুর করিম জাবেদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল মোতালেব চৌধুরী রবিন, পরশুরাম উপজেলা সভাপতি আবদুল আহাদ চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন ভারতে চলে গেছেন।  

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খায়রুল বাশার মজুমদার বেশ কয়েকদিন চিথলিয়া ইউনিয়নের ধনিকুন্ডা এলাকার বাড়িতে থাকলেও বর্তমানে রাজধানীর শান্তিনগরের বাসায় রয়েছেন। পরশুরাম উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ মজুমদার ৭ আগস্ট অফিস করলেও এরপর পরশুরাম পৌর শহরের খোন্দকিয়া এলাকার বাড়ি থেকে বের হননি।

আওয়ামী লীগ-যুবলীগের অনেকে ঢাকা-চট্টগ্রামে অবস্থান করলেও বেশিরভাগ নেতা ফেনী শহরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আত্মগোপনে রয়েছেন।

জানতে চাইলে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি পিপি হাফেজ আহম্মদ বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ঢাকায় ছেলের বাসায় রয়েছেন। কারো সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে জানতে চাইলে ফেনীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে একটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। আমরা অস্ত্রগুলো উদ্ধারে তৎপর রয়েছি। শিগগিরই অস্ত্র উদ্ধারের জন্য আমরা একটি যৌথ অভিযান চালাব।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২৪ 
এসএইচডি/আরএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।