ঢাকা, শুক্রবার, ৭ ভাদ্র ১৪৩১, ২৩ আগস্ট ২০২৪, ১৭ সফর ১৪৪৬

জাতীয়

কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২৪
কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

সুনামগঞ্জ: টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার ২০টি গ্রাম ভেসে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বহু মানুষ।

বন্যায় গ্রামীণ সড়ক ডুবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। স্কুল-কলেজের ভবনের পানি ঢুকেছে। লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াতসহ নানা ভোগান্তিতে পড়েছে।

গত তিন ধরে উপজেলায় টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পানির কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার (২২ আগস্ট) থেকে জগন্নাথপুর-বেগমপুর সড়কের ভাঙ্গাবাড়ী এলাকায় কুশিয়ারার পানিতে জালালপুর গ্রাম ও সড়ক ডুবে যাওয়ায় ওই এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার কদমতলা, রানীগঞ্জ বাজার, মশাজান, জালালপুর, খানপুর, আলীপুর, গোতগাঁও, সোনাতলা, কাতিয়া, আলাগদি, বাগময়না, নোয়াগাঁওসহ প্রায় ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কুশিয়ারার তীরবর্তী এলাকায় সড়ক ডুবে যান চলাচল বন্ধ থাকায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ।

আলাগদি গ্রামের মানিক মিয়া বলেন, জালালপুর গ্রামের সড়কটি ডুবে যাওয়ায় এখন চরম বিপাকে পড়েছি। মাদরাসায় পরীক্ষায় চলছে। পরীক্ষা তো দিতে হবে। তাই পানির মধ্য দিয়েই যেতে হবে।

পাইলগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) নজমুদ্দিন জানান, সকাল থেকে পানি বাড়ছে। এছাড়াও গ্রামীণ সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। আর কুশিয়ারার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ভাঙ্গাবাড়ী বাঁধ ভেঙে জগন্নাথপুর থেকে বেগমপুর সড়কে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল-বশিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি কঠোরভাবে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়। এখন পর্যন্ত আশ্রয় কেন্দ্রে কোনো পরিবার আসনি। তবে আক্রান্ত এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলে দেওয়া হয়েছে কোনো পরিবার এলে যেন স্কুল কক্ষ গুলো খুলে দেওয়া হয়। পানি এখনও বসতবাড়ির ভেতরে প্রবেশ করেনি একাধিক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সাথে কথা বলে জেনেছি। তবে পানি বাড়ছে। রাতে আরও পানি বাড়তে পারে। আমরা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। পানি কমলেই জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কে ভেঙে যাওয়া অংশের মেরামতের কাজ করা হবে।

সুনামগঞ্জের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন, সন্ধ্যা ৭টায় সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর ষোলগড় পয়েন্ট দিয়ে পানি বিপদ সীমার ৭৬ সেন্টিমিটারের নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারতের ত্রিপুরার পানিতে সুনামগঞ্জ বন্যা কবলিত হবার আশংকা কম। গেল ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টিও তেমন হয়নি। সুনামগঞ্জে গেল ২৪ ঘণ্টায় ৮৫ মিলিমিটার এবং ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৯৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা সুনামগঞ্জের জন্য বন্যা আশংকার নয়।

তিনি আরও জানান, সুনামগঞ্জের সবকয়টি নদীর পানি বিপৎ সীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও সিলেটের সীমান্তবর্তী ভারতীয় সীমানার অমলসিদ পয়েন্ট থেকে ভাটির দিকে প্রবাহিত কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়েছে। জগন্নাথপুর এবং দিরাই ও শাল্লা উপজেলার কিছু অংশ ঘেষে প্রবাহিত কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে পানি বিপদ সীমার পাঁচ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে কুশিয়ারার সংযোগ নদী জগন্নাথপুরের নলজুরে পানি বিপৎ সীমার নীচে আছে।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২৪
এমজে

 
 

 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।