ভারতে পালানোর সময় ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য ইসহাক আলী খান পান্নার মৃত্যুর খবর ছিল রহস্যঘেরা। কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে, তা নিয়ে চলছিল নানা আলোচনা।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে তিনি নিহত হয়েছেন বলে খবর প্রচার করা হয়। এছাড়া অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে পলায়নের সময় পা পিছলে পাহাড় থেকে পড়ে হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয় বলেও দাবি করা হয়।
এমন সব দাবির মধ্যে ভারতের মেঘালয় পুলিশ জানিয়েছে, পান্নাকে হত্যা করা হয়েছে শ্বাসরোধ করে।
মেঘালয় পুলিশের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) শিলং টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে , পান্নার লাশ এখন ভারতের মেঘালয় রাজ্যে আছে এবং তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলেও জানানো হয়েছে।
ভারতের বার্তা সংস্থা ইউনাইটেড নিউজ অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ইসহাক আলী খান পান্নার মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পান্নার মৃত্যুর কারণ শ্বাসরোধে সৃষ্ট শ্বাসকষ্ট। শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার কপালে আঘাত ও ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। বাঁ হাতের অনামিকার হাড় ভেঙে গেছে। নিজেকে বাঁচাতে প্রতিরোধের সময় সংঘর্ষে এসব আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারেন বলে ধারণা।
পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে শিলং টাইমস জানিয়েছে, মরদেহ ফরেনসিক পরীক্ষার জন্যও পাঠানো হয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্ট পান্নার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে আরও ভালো চিত্র দিতে সক্ষম হবে।
এদিকে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে মেঘালয় পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৬ আগস্ট মেঘালয়ের পূর্ব জৈন্তিয়া পাহাড়ের দোনা ভোই গ্রামের একটি সুপারি বাগানের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা ইসহাক আলী খান পান্নার আধা-পচা মৃতদেহ পাওয়া যায়। এই এলাকাটি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে। পান্নার বহন করা পাসপোর্ট থেকে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। মরদেহ খলিহরিয়াত সিভিল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
তারা আরও জানায়, মেঘালয় সরকারের কাছে গেলে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে পান্নার লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে। তারা সরাসরি লাশ হস্তান্তর করতে পারবে না।
প্রসঙ্গত, ইসহাক আলী খান পান্না পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলার চিড়াপারা পারসাতুরিয়া ইউনিয়নের বেকুটিয়া গ্রামের হাজী মো. নেছাব আলী খানের ছেলে। ছাত্রলীগের ১৯৯৪ সালের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। ওই সম্মেলনে নির্বাচিত সভাপতি একেএম এনামুল হক শামীম পর্যায়ক্রমে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং একাধিকবার এমপি ও আওয়ামী লীগ সরকারের উপমন্ত্রী হলেও পান্না বরাবরই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বাইরে ছিলেন। তবে ২০১২ সালের সম্মেলনের পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক এবং পরে বিভিন্ন উপ-কমিটির সদস্য হয়েছিলেন তিনি। মৃত্যুর আগপর্যন্ত ছিলেন পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২৪
এসএএইচ