ফরিদপুর: ফরিদপুরে হিরু শেখ নামে এক বিএনপির সমর্থককে হত্যার অভিযোগে প্রায় চার বছর পর এক ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১২ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি করেছেন নিহতের ছেলে রুমন শেখ (২৪)।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসানুজ্জামান।
এর আগে গত ২৯ আগস্ট ফরিদপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ১ নম্বর আমলি আদালতে রুমন শেখ বাদী হয়ে হত্যার অভিযোগ করেন। পরে তা শনিবার (৩১ আগস্ট) ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা হিসেবে রুজু হয়।
ওই মামলায় আসামিদের মধ্যে রয়েছেন জেলা সদরের ডিক্রিরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক মো. মেহেদী হাসান মিন্টু (৫০)। তিনি ওই এলাকার মৃত হাবিবুর রহমান ফকিরের ছেলে।
এছাড়া তার অপর চার ভাইকেও মামলার আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন- মো. আলমগীর ফকির (৩৮), মো. জাহাঙ্গীর ফকির (৩২), মো. আলমাস ফকির (৪৩) ও মোহাম্মদ হক ফকির (৫৫)।
অন্যদের মধ্যে রয়েছেন- একই এলাকার মো. ইলিয়াস ফকির (৩০), মো. সাব্বির ফকির (৩২), মো. রফিক শেখ (৪০), মো. রশিদ শেখ (৬০), মো. বাদশা ফকির (৫০), মো. মুমতাজ বেপারী (৪৬) ও মো. সেলিম বেপারী (৪৬)। এছাড়া অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে রুমন শেখ উল্লেখ করেন, আসামিরা আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে স্থানীয়ভাবে ত্রাস সৃষ্টি করতেন। আমার বাবা স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে চলাফেরা করায় এবং ২০১৮ সালে বিএনপির প্রচার-প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় হুমকি-ধামকি দিয়ে আসতে থাকে।
এক পর্যায়ে ২০২০ সালের ৬ নভেম্বর রাতে আমার বাবাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে নিয়ে যায় দুজন আসামি। ওই রাতেই সিএন্ডবি ঘাট মসজিদ ও টোলঘরের ফাঁকা রাস্তায় নিয়ে নির্যাতন করে আসামিরা। এ সময় খুন করার উদ্দেশে আমার বাবার মাথায় হকিস্টিক দিয়ে আঘাত করলে মাটিতে পড়ে যান এবং লোহার রড দিয়ে পেটাতে থাকেন। এক পর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামিরা উল্লাস করেন।
এজাহারে আরও উল্লেখ করেন, আমার বাবাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিতে গেলে আসামিরা বাধা সৃষ্টি করে এবং আমাদেরও হুমকি দেয়। এরপর আমার বাবা বিনা চিকিৎসায় তিনদিন পর ৯ নভেম্বর মারা যান।
দীর্ঘদিন পর মামলা করার বিষয়ে রুমন শেখ বলেন, ওই সময়ে আসামিদের ভয়ে ময়নাতদন্ত ও থানা বা কোর্ট-কাচারিতে কোনো মামলা করতে পারিনি।
তবে এ মামলাকে হয়রানি ও ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান মো. মেহেদী হাসান মিন্টু। তিনি বলেন, ওই লোককে কখনও মারা হয়নি, ওনি হয়তো অসুস্থ হয়ে মারা যেতে পারেন। এলাকার কেউ বলতে পারবে না। এখন এলাকার কিছু চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীরা আমার নামে কিছু না পেয়ে হয়রানি করার জন্য এ মামলা করেছেন। যারা আওয়ামী লীগ করতো তাদের মধ্যে কিছু লোক বিএনপিতে মিশে ওনার ছেলেকে দিয়ে মামলা করিয়েছেন।
মামলার বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসানুজ্জামান জানান, মামলাটি আদালতে হয়েছে এবং থানায় এফআইআর হিসেবে রুজু করা হয়েছে। সঠিকভাবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০২৪
আরবি