চাঁদপুর: শৃঙ্খলা পরিপন্থি ও নানা উসকানিমূলক কাজে জড়িত থাকাসহ একাধিক অভিযোগের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সাপেক্ষে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চাবিপ্রবি) দুই শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে।
তারা হলেন-চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চাঁবিপ্রবি) দুই শিক্ষক সিএসই বিভাগের প্রভাষক প্রিন্স মাহমুদ ও আইসিটি বিভাগের প্রভাষক নাজিম উদ্দিন।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) চাঁবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতারের অনুমোদনক্রমে ও রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মেজর মো. আব্দুল হাই (অব.) কর্তৃক স্বাক্ষরিত চাঁবিপ্রবি স্মারক-৮২৯ ও স্মারক-৮৩০ এর অনুকূলে শিক্ষকদ্বয়কে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে জানা গেছে, আওয়ামীপন্থি এই দুই শিক্ষক হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর থেকেই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি অংশকে নানাভাবে উসকানি দিতে থাকে। তারা আর্থিক সুবিধাসহ নানাভাবে প্রতিষ্ঠানের আইন পরিপন্থি কাজে লিপ্ত থেকে উৎসাহ উদ্দীপনা দিয়ে বিশৃঙ্খলা করতে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। যা দৈনিক প্রিন্ট ও অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। যার কারণে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবেশের সুশৃঙ্খলা ফেরাতে শিক্ষার্থীরা এই দুই শিক্ষকের পদত্যাগসহ তাদের বহিষ্কারের দাবি তোলেন।
এদিকে বহিষ্কারের সত্যতা নিশ্চিত করে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার জানান, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক প্রিন্স মাহমুদ ও ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলোজি বিভাগের প্রভাষক নাজিম উদ্দিন বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নিয়ে ব্যঙ্গ করে এবং উপাচার্যের ছবি দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন অকথ্য ও অশ্লীল ভাষায় তথ্য শেয়ার করে ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে এবং উসকানিমূলক কথাবার্তা বলে, যা বিশ্ববিদ্যালয় আইনের পরিপন্থি। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।
যেখানে সারাদেশে শিক্ষকদের পক্ষে পদত্যাগের জন্য কাউকে বাধ্য না করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে ইতোমধ্যেই, সেখানে এই দুইজন শিক্ষক ছাত্রদের উসকানি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ভঙ্গ করে এবং শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করায় দুই শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিরত অবস্থায় চাঁবিপ্রবি আইন- ২০২০ এর ৪৩(৪) ও ৪৩(৫) ধারার পরিপন্থি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকায় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের স্মারক নম্বর- ৩৭.০০.০০০০.০৬১.০১৮.১৬.২০১৬-১৯৯।
যা কিনা গত ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ এর নির্দেশনা অমান্য করায় এবং নিয়োগপত্রের ৪ নম্বর শর্তানুসারে প্রবেশনারি পিরিয়ডে চাকরি সন্তোষজনক না হওয়ায় কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক প্রিন্স মাহমুদ ও ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলোজি বিভাগের প্রভাষক নাজিম উদ্দিনকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এতে বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে এই আদেশ জারি করা হইল এবং ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
এদিকে অভিযোগ প্রসঙ্গে মাহমুদ ও নাজিম বলেন, এটুকুই বলব আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। যা মানার মতো নয়। এ বিষয়ে আমরা রেজিস্ট্রারের সঙ্গে যোগাযোগ করবো।
সরেজমিন বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গিয়ে এবং খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার দুজন শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উপাচার্য বিরোধিতা করেছেন এবং হুমকি ধামকি দিয়েছেন। পরে উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম এখন বন্ধ রয়েছে। গায়েবি স্থান থেকে তারা এই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৪
আরএ